হন্তারক
আগুন আগুন রং গাজনসন্ন্যাসীর উত্তরীয় পরিপূর্ণ অবয়ব
এত উষ্ণতায় দগ্ধ নষ্টকোশ ছিন্নবন্ধ বিষফুল অযাচিত উগ্রতা
সব দাহনবেলায় রাখো এত যে আর্দ্রতাবায়ু তাতে কই
জলের আশ্বাস!
গল্পগুলো মিথ্যায় গাঁথা ভুলোনো কথাকলি মরূদ্যান খুঁজে যায়
মাকড়সা পা ঘুরুনি জাল পেছনে লুকোনো অভীষ্টের পথে
অদৃশ্য দেয়াল প্রতিফলন কোণ নির্লিপ্তিকাঠিন্যে উজ্জ্বল
দিনদিন জয়দ্রথবল মহাকাব্য তুচ্ছতায় অভঙ্গুর দীর্ঘ মরুবেলা
ব্যর্থতা গ্লানিতে শেষ আজ নয় অন্য কোনোদিন তুমি ফাল্গুনি তেজ
ভাঙো বাধার অহং শুকনো ধনেগন্ধ রংয়ের কোলাজ নির্জীব
ডালপালা লুকোনো পতঙ্গের মতো ছলনাকর্বূর ফাঁদপাতা
ভিখারিঝুলি ত্রিপুণ্ড্রছাপ কাপালিক কোন ফাঁকে এসে যায়!
আগুন উত্তরি মেলা ভিরুলবাতাস কোন বার্তাধর?
প্রেমকথা লিখুক পিঁপড়ে নিলাজ উপাঙ্গে জমা সুপেয় নিম্বাসব
দ্বীপভূমি মেলে দাও বাগানবিলাস চাঁদজাগা বিকেলের ধূসর বালিতে
কিছু নাম লিখো যে নাম হারানোপাতা নিয়ে গ্যাছে মাঝে কিছু অভিশাপ
হিসেব চুকোয় মরমিঘাতক ঠিকানা নির্ভুল।মরণেও সুখ জাগে এমন মারক।
সহজিয়া
দেহতত্ত্বের চিটেল আঠায় অন্য এক জগতের সন্ধান
তন্ময়তা দেশ কাল পাত্র মানে না মহোৎসবের কোলাহল
সাধনের ধারেকাছে নেই।সব দরোজায় বিফল আমার
বৈরাগবাসনা ডুবে যায় তত্ত্বের গোপনে।বাউলাঙ্গ প্রেম
ঠিকানাহীন করে আকাশের কোন কোণে বাঁশির চুম্বক।
লালন হাসন বা ভণিতার কবি হেঁয়ালির পাকে মধু রেখে চুপ।
প্রশ্ন রাখি বাউলের কাছে,তুমিতো সাধক দেহতত্ত্ব বোঝো ?
ভাঙো দেখি রূপ ও রূপকে!
না-এর তীব্র মাথা নড়ে, অতকথা জানিনা গোঁসাই
আমি সহজিয়া। শুধাই,সে কেমন রীতি? উত্তরে অকম্পন
শুধু ভালোবাসা আর নিজেকে উজাড় করে দেওয়া।
দেহ উপচার দেহই নৈবেদ্য দেবতাও সে।
— ভালোবাসা? কাকে?
— যিনি প্রাণের চেয়ে প্রিয় মনের মানুষ তাকে।
কিছুই শেখার নাই যোগ্যতার মাপ নাই এ যে সহজিয়া।
আমার সম্পদ যত ব্যর্থতা খিলখিল হাসে সাফল্যের
তর্জনী তুলে তারা দ্যাখায় কাঁটাবনে অজস্র ফুল
প্রশ্রয় চোখ বলে,দ্যাখো এ তোমার সহজ সাধনা।
কবি পরিচিতি : জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, গোপেশ্বরপল্লি, বিষ্ণুপুর,বাঁকুড়া