কথায় আছে ঘর পোড়া গরু
সিঁদুরে মেঘ দেখলে ডরায়।
যাদের মাথায় পাকা ছাদ আছে
নিরাপদ আশ্র আছে
তাঁরা ঘরে বসে ফেসবুকে হোয়াটস অ্যাপে আপটেড দিচ্ছে
রিমোর্টে টিভিল চ্যানেল ঘুরিয়ে দেখে নিচ্ছে
ফণী কতটা ফণা তুলল।
ইতিমধ্যেই পাড়ায় পাড়ায় মাইকিং করে গেছে
সাবধান থাকুন সতর্ক থাকুন
প্রয়োজনে স্কুল ঘরে আশ্রয় নিন।
না।
আগাম সতর্কবার্তা অনুযায়ী
আমার স্কুলের পার্শ্ববর্তী এলাকায়
ফণীর ততটা ফণা তোলার সম্ভাবনা সে ভাবে নেই
কারণ সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকা থেকে এই জেলা অনেকটাই দূরে,
তবুও ঘর পোড়া গরু তো সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পাবেই।
স্বাভাবিক ভাবেই ইতিমধ্যেই ফণী বিষ ঢেলে দিয়েছে
তাঁর পূর্ব নির্ধারিত শিকারের উপর।
সেই বিষের ছিটেফোটা এখানেও
কিছুটা এসে পৌঁছেছে।
কিন্তু তার তান্ডব নির্বিষ শ্রাবণী বাতাস থেকেও কম,
তবুও ঘর পোড়া গরু তো।
চারিদিকে তাই মঙ্গল শাঁখ উলুধ্বনির কলতান,
ফণীকে স্বাগত জানানোর জন্য নয়
ফণীকে তুষ্ট করে অন্য পথে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য।
আসলে পাকা পোক্ত ঘর তো দূরে থাক
অনেকের মাথার চালা টুকুও ভরসা দেওয়ার মত না।
এই আপাত নিরাপদ জনপদ অনেক দূরেই,
তবে তাতে ভয় কিংবা শঙ্কার মেঘ কম ঘন নয়।
যাদের ঘর নেই
যাদের মাথার ছাদ খোলা আকাশ
রাতের বিছানা ফুটপাত
যারা উপকূলের অনূকূলে থেকে
লড়াই করে জয় করে জীবনের প্রতিকূলতাকে
না জানি তাঁরা কত অসহায় ফণীর কাছে।
ফণী তো মাথা নীচু করেই ছিল।
মানুষকে খুব একটা বিব্রত করা তো ওর স্বভাব না।
তবে আজ কেন এই উদ্ধত ফণা?
দোষারোপ বিশ্লেষণ না হয় পরেই হবে।
কিন্তু ফণীর বিষক্রিয়া কেটে গেলে
সকলে অন্তত একবার এসো।
একসাথে একবার নিবিড় ভাবে ভেবে দেখব
উত্তর পাই কিনা।
©কৃষ্ণ বর্মন (পলতা,ওয়েস্ট বেঙ্গল )