মখমল

2
1051

এক যে ছিলো রানী,
অপরূপা, যাকে দেখলে গোলাপ ও লজ্জা পায়।
সে বন্দী ছিলো নৃশংস রাজার প্রাসাদে।

রাজপ্রাসাদের বারান্দায় বসে রানী স্বপ্ন দেখে,
কেউ আসবে,তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যাবে এখান থেকে।
রাখবে তাকে মনের মণিকোঠায়।

একদিন এক গরীব সামান্য ব্রাহ্মণ তার দর্শনপ্রার্থী।
সে এসে বললে ভালোবাসি তোমায়।
নিয়ে যাবো অনেক দূর।
যেখানে তারার বাগানে মেঘের দোলনায় তুমি দোল খাবে।
সকল কষ্টের হবে অবসান।
এই দেখ বানিয়ে এনেছি ভালোবাসার লাল মখমল,
আমার কবিতা দিয়ে সাজানো।
এই মখমলের উপর দিয়ে হেঁটে এসো আমার ভালোবাসার কুটিরে।

অট্টহাস্যে লুটিয়ে পড়ে রানী।
তুমি?????
কি দিতে পারবে আমায়?
আমি গরিব ব্রাহ্মণ ,কি আমার সাধ্য?
দিতে পারি এক আকাশ ভালোবাসা,
এক পৃথিবী কবিতা
আর সারাজীবনের পাশে থাকার আশ্বাস।
ব্যাস এইটুকু ! রানী বললে।
পারো আমার জন্য করতে একটা কাজ?
ব্রাহ্মণ বলে, মরা ছাড়া সব পারি ।
মরতে চাই না কারণ তোমার সাথে কাটাতে চাই অনেকটা জীবন।

অট্টহাস্যে রানী পদাঘাতে উড়িয়ে দিলো মখমল,
কিছু কবিতার সজ্জা হলো নষ্ট।
বললে ওই যে পাশের রাজ্যে সুরবীর থাকে সেই আমার ভালোবাসা।
পারো এনে দিতে তাকে?
গরীব ব্রাহ্মণ লুটিয়ে পড়ে কান্নায়।
তারপর চোখের জল মোছে।
মখমলের ভেঙে যাওয়া সাজ আবার সারিয়ে তোলে নতুন কবিতায়।
পেতে দেয় সেই মখমল সেই সুরবীরে র ঘরের বাইরে।
বের করে আনে রানীকে রাজপ্রাসাদ থেকে।
হে সুরবীর, দরজা খোলো,
দেখো তোমার প্রেয়সী আসছে তোমার ঘরে ।
তোমার চৌকাঠ ভিজিয়ে দিয়েছি চোখের জলে।
বরণ করো সেখানে দাঁড়িয়ে।
শুধু একটা কথা,
এই দেখ আজ ব্রাহ্মণও রণসজ্জায় সজ্জিত।
জানি দুর্বল কিন্তু অসহায় নই।
এসো লড়াই করো।
আমায় হারিয়ে আমার দেহের উপর দিয়ে এগিয়ে যাও তোমার প্রেয়সীর দিকে।
আমার পাওয়া আঘাতের রক্তে বরণ করো তাকে।
আমার দেহের উপর দিয়ে হেঁটে যাক পালকিবাহক।।

 

কবি পরিচিতি : শুভজিৎ চট্টোপাধ্যায়

বিঃ দ্রঃ লেখাটি জানুয়ারি,২০২০, “মাসিক জনপ্রিয় লেখনী” প্রতিযোগিতার অন্তর্ভুক্ত।

2 COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here