আজ আমি সর্বহারা l  যা কিছু ছিল তারমধ্যে বেশিরভাগইআমি নিজের ভুলে হারিয়েছি l এখন শুধু রয়েছে আমার কাছের মানুষজনরা যাদেরকে আমি কিছুদিন আগেই ভুল বুঝেছিলাম এইটা ভেবে  যে তারা আমায় ভালবাসেনা আর যাকে আমি আপন ভেবে কাছে টেনে নিয়েছিলাম সে এখন আমার থেকে বহু দূরে সরে গেছে l  আমার ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছে  ছিল বড় লেখক হওয়ারকিন্তু খাতা পেন নিয়ে বসলেই মনে হত আমার দ্বারা লেখালিখি হবে না l একবার অবশ্য ভয়কে জয় করেএকটা গল্প লিখেছিলাম l বাড়ির সবাই অর্থাৎ আমার বাবা,মাহাসতে হাসতে বলল এসব কি গল্প লিখেছিস l  এর তো কোনমাথা মুণ্ডু নেই কিন্তু চেষ্টা কর আরো ভালো লিখতে পারবি  l আমি আমার কাকাকে খুব ভালবাসতাম lআমার কাকাকে আমি যদি  আমার কোনলেখা গল্প দেখাতামআমার কাকা সঙ্গে সঙ্গে বলতো বা  এ তোদুর্দান্ত লিখেছিস l  আমি তোকে ছাপানোর জায়গা পাঠাচ্ছি lতুই সেখানে পাঠিয়ে দে l আমাদের হাতে সেই সময় ভালোই টাকা পয়সা ছিল l  আমি ভাবতাম আমার কাকা যা বলছেসবকিছুই আমার ভালোর জন্য কিন্তু আজ  তা ভুলপ্রমাণিত হয়েছে l আমার কাকা যত পত্রিকারনম্বর পাঠাতো সেখানে লেখা দিলেই কেউ চাইতো ৫০০ টাকাআবার কেউ চাইতো  হাজার । যারা যারা সেই টাকা দিততাদের সবার লেখা ছাপাতো । সঙ্গে আবার সার্টিফিকেট , মেমেন্টো  সম্মান স্বরূপ ফ্রি । যদি  কেউ টাকা দিতে পারত নাতাহলে তার লেখা সঙ্গে সঙ্গে বাতিল ।আমি একবার আমার কাকাকে  জিজ্ঞাসা করেছিলাম এইরকম  টাকা দিয়ে লেখা ছাপানো  ছাড়া আর কি কোনো উপায় নেই  ‌। আমার কাকা বলেছিল  আজকাল এইটাই যুগ ।টাকা দাও _লেখা ছাপাও । এদিকে আমি দেখিআমার কাকা কত পত্র -পত্রিকায় বিনামূল্যে লেখা দেয় কিন্তু সেই সব ব্যাপারে জানতে চাইলেই এড়িয়ে যায় ।আমি রীতিমত পাগল হয়ে গেছিলাম লেখক হওয়ার নেশায় ।আমি ভেবেই নিয়েছিলাম আমার কাকা যখন বলছে তখন আমার লেখা খুব ভালো ।  আমি আমার বাবাকে বাধ্য করতামপত্রিকায়  লেখা ছাপানোর জন্য অনুদান স্বরূপ একগাদা টাকা দিতে l  আমার বাবা বহুবার বলতো এত টাকা নষ্ট করিস না l  তুই আর একটু সময় দে l তুই খুব ভালো লিখতে পারবি l  আমি বাবার কথা  শুনতামী না । আমি ভাবতাম আমার লেখা সবার চেয়ে ভালো ।একদিন আমার কাকা একটা পত্রিকার নম্বর পাঠালো ।সেই পত্রিকার তরফ থেকে একটা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে । যারা যারা লেখার দিতে চাইবে অনুদান স্বরূপ৯০০০০ টাকা অগ্রিম জমা করতে হবে ।যারা যারা টাকা জমা করবে তাদের সবার লেখা প্রত্যেক মাসে একটা সংকলনে বের করা হবে এবং সবাইকে ৩০০০০ করে প্রত্যেক মাসে দেয়া হবে । আমার বাবা কোনো ভবেই রাজি হচ্ছিলো না টাকা দিতেতাই আমার কাকা বলল তুই তোর বাবার থেকে চুরি কর lআমি আমার  কাকার কথা মত বাবার ব্যাংক থেকেসেই টাকা চুরি করে পত্রিকাকে দিলাম l টাকা পাওয়ার পর থেকেই পত্রিকার দপ্তর থেকে আর ফোন তোলা হচ্ছে না lযতবারই ফোন করছি সুইচ অফ বলছে l তারপরে আর আমি সেই টাকা ফেরত পায়নি lবাবা যখন জানতে পারে আমি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য টাকা চুরি করেছি বাবা খুব কষ্ট পায় lআমি যখন বাবাকে বললাম আমি কাকার কথা শুনেএই কাজ করেছি বাবা বিশ্বাস করল না l তারপর কাকাকে ফোন করাতে কাকা পুরো পুরি না জানার ভান করেবলল কই আমি তো কিছু জানিনা এই ব্যাপারে lআমি কখনোই ভাবতে পারিনি আমার কাকা এরাম ভাবেআমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে l এরাম ভাবে লেখা ছাপানোর মোহতে এক বছর ধরেআমি বাবার বহু টাকা উড়িয়ে গেছে l  আজ সেই কারণেইআমরা নিঃস্ব । হাতে দুবেলা খাবার মতও পয়সা নেই । ভাড়া বাড়িতে টাকা না দিতে পারায় আমাদেরকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে । আমি ভেবেছিলাম কাকা আমাদের ঠিকআশ্রয় দেবে কিন্তু তা তো দিলোই না উল্টে দূর দূর করে তাড়িয়ে দিল । আজ বুঝতে পারছি কে আপন আর কে পর ।এখন আমি পত্রিকায় গল্প দেওয়া ছেড়ে দিয়েছি । বন্ধুর ফোন থেকে ফেসবকে মাঝে মাঝে নতুন লেখা গল্পগুলো ছাড়ি ।একদিন হঠাৎ আমার বাড়িতে এক পত্রিকার সম্পাদক ফেসবুকে আমার লেখা গল্প দেখতে পেয়েআমার থেকে পত্রিকার জন্য গল্প চাইতে আসে । আমি আমার লেখা সবচেয়ে প্রিয় গল্পটা দি।সে আমার গল্পটা পড়ে বলেতুমিতো খুব সুন্দর গল্প লেখ । আমি দায়িত্ব নিয়ে তোমার লেখা বিনামূল্যে বিভিন্ন পত্রিকায় ছাপিয়ে দেবো । আমি যখন তাকে জানাই আমাদের আমাদের কাছে বাড়ী ঘরদোর কিচ্ছু নেই । সে আমাদের থাকার জন্য আশ্রয় দেয় । তার সঙ্গে রোজ আমাদের খাওয়াতো । তারপর থেকে উনি আমার বহু লেখা গল্প বিনামূল্যে ছাপিয়ে দিয়েছেন । যদি আমার লেখায় কোন ভুল থাকতোতাহলে সেটা উনি কারেকশন করে দিতেন ।  আমি ভাবতাম যদি তখন লেখা ছাপানোর জন্য লোভ না করে আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতাম  তাহলে আমাদের  হয়ত  এত জিনিস হারাতে হতো না ।

তুই আর একটু সময় দে l তুই খুব ভালো লিখতে পারবি l আমি বাবার কথা শুনতামী না । আমি ভাবতাম আমার লেখা সবার চেয়ে ভালো । একদিন আমার কাকা একটা পত্রিকার নম্বর পাঠালো ।সেই পত্রিকার তরফ থেকে একটা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে । যারা যারা লেখার দিতে চাইবে অনুদান স্বরূপ
৯০০০০ টাকা অগ্রিম জমা করতে হবে ।যারা যারা টাকা জমা করবে তাদের সবার লেখা প্রত্যেক মাসে একটা সংকলনে বের করা হবে এবং সবাইকে ৩০০০০ করে প্রত্যেক মাসে দেয়া হবে । আমার বাবা কোনো ভবেই রাজি হচ্ছিলো না টাকা দিতে তাই আমার কাকা বলল তুই তোর বাবার থেকে চুরি কর l
আমি আমার কাকার কথা মত বাবার ব্যাংক থেকে সেই টাকা চুরি করে পত্রিকাকে দিলাম l টাকা পাওয়ার পর থেকেই পত্রিকার দপ্তর থেকে আর ফোন তোলা হচ্ছে না lযতবারই ফোন করছি সুইচ অফ বলছে l তারপরে আর আমি সেই টাকা ফেরত পায়নি lবাবা যখন জানতে পারে আমি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য টাকা চুরি করেছি বাবা খুব কষ্ট পায় l
আমি যখন বাবাকে বললাম আমি কাকার কথা শুনে এই কাজ করেছি বাবা বিশ্বাস করল না l তারপর কাকাকে ফোন করাতে কাকা পুরো পুরি না জানার ভান করে
বলল কই আমি তো কিছু জানিনা এই ব্যাপারে l আমি কখনোই ভাবতে পারিনি আমার কাকা এরাম ভাবে আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে l
এরাম ভাবে লেখা ছাপানোর মোহতে এক বছর ধরে আমি বাবার বহু টাকা উড়িয়ে গেছে l আজ সেই কারণেই আমরা নিঃস্ব । হাতে দুবেলা খাবার মতও পয়সা নেই । ভাড়া বাড়িতে টাকা না দিতে পারায় আমাদেরকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে । আমি ভেবেছিলাম কাকা আমাদের ঠিক আশ্রয় দেবে কিন্তু তা তো দিলোই না উল্টে দূর দূর করে তাড়িয়ে দিল । আজ বুঝতে পারছি কে আপন আর কে পর ।
এখন আমি পত্রিকায় গল্প দেওয়া ছেড়ে দিয়েছি । বন্ধুর ফোন থেকে ফেসবকে মাঝে মাঝে নতুন লেখা গল্পগুলো ছাড়ি । একদিন হঠাৎ আমার বাড়িতে এক পত্রিকার সম্পাদক ফেসবুকে আমার লেখা গল্প দেখতে পেয়ে আমার থেকে পত্রিকার জন্য গল্প চাইতে আসে । আমি আমার লেখা সবচেয়ে প্রিয় গল্পটা দি।সে আমার গল্পটা পড়ে বলে তুমিতো খুব সুন্দর গল্প লেখ । আমি দায়িত্ব নিয়ে তোমার লেখা বিনামূল্যে বিভিন্ন পত্রিকায় ছাপিয়ে দেবো । আমি যখন তাকে জানাই আমাদের আমাদের কাছে বাড়ী ঘরদোর কিচ্ছু নেই । সে আমাদের থাকার জন্য আশ্রয় দেয় । তার সঙ্গে রোজ আমাদের খাওয়াতো ।
তারপর থেকে উনি আমার বহু লেখা গল্প বিনামূল্যে ছাপিয়ে দিয়েছেন । যদি আমার লেখায় কোন ভুল থাকতো তাহলে সেটা উনি কারেকশন করে দিতেন । আমি ভাবতাম যদি তখন লেখা ছাপানোর জন্য লোভ না করে আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতাম তাহলে আমাদের হয়ত এত জিনিস হারাতে হতো না ।

কলমে প্রতিম ভট্টাচার্য

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here