জাপান পর্ব ১৭ : মাউন্ট ফুজি – রেংকো-জি (蓮 光寺 রেনাকোজি)

2
2277
Mt Fuji @ M K Paul

<< জাপান পর্ব ১৬                                                                                   ৩য় জুন ,২০১৮

টোকিও তে নাকি তেমন কিছু দেখার নেই , একথা কানে শুনলেও বিশ্বাসযোগ্য ঠিক নয়। কারণ , জাপান মানেই টোকিও আর টোকিও মানেই জাপান , আমার মতো অজ্ঞ এটা জেনেই বড় হয়েছে। তবে কথাটা কিছুটা হলেও সত্যি , কারণ টোকিওতে বড় বড় বিল্ডিং কাঠামো চোখকাড়ে ঠিক ই , তবে কিয়োটো র মতো এতো সুন্দর সুন্দর স্নিগ্দ্ধ জায়গার অভাব আছে বৈকি। চারিদিকে ঝা চকচক বিল্ডিং, বিশালাকার রাস্তা , আর জন সমুদ্র , এই চোখে পড়েছে টোকিওতে। টোকিও যাবো জেনে আগে থেকেই পরিকল্পনা করেছিলাম ,মাউন্ট ফুজি র। ভূগোলের পাতায় তার উল্ল্যেখ অনেক পেয়েছি। এটি এখনো একটি জীবন্ত আগ্নেয়গিরি , যেদিন জেগে উঠবে , টোকিও সমেত আশেপাশের জায়গার যে কি হাল হবে জানা নেই।

এই মাউন্ট ফুজি দেখার অনেক গুলো দর্শনীয় পয়েন্ট আছে , মানে কোথা কোথা থেকে আপনি , মাউন্ট ফুজি কে ভালো করে দেখতে পারবেন। তার মধ্যে সব থেকে ভালো দুটো পয়েন্ট আমরা বেছে নিয়েছিলাম, এক সিনকানসেন বুলেট ট্রেন আর লেক কাওয়াগুচিকোর Kawaguchiko উত্তর তীর থেকে। এছাড়াও আরো অনেক viewpoint ছিল , যার মধ্যে Chureito Pagoda, অন্যতম , যেটি Kawaguchiko থেকে ট্রেন ধরে আরো এক ঘন্টা।

টোকিও ও ওসাকাের মধ্যে টোকাইদো সিকানসেন থেকে মাউন্ট ফুজি দেখা যায়। টোকিও থেকে আসার সময়, পাহাড়টি ট্রেনের ডান পাশে দেখা যায়। লেক কাওয়াগুচিকোর উত্তর তীরে পাহাড়ের বেশ কিছু অসামান্য দৃশ্য দেখা যায় যা কখনও কখনও হ্রদে প্রতিফলিত হয়। হ্রদ এবং পাহাড়ের অসাধারণ দৃশ্যগুলি সাধারণত এপ্রিলের মাঝামাঝি এবং নভেম্বরের মাঝামাঝি শরতের সময় দেখা যায় ।

ফুজি এর পাঁচটি হ্রদ এর বৃহত্তম , Kawaguchiko একটি প্রাকৃতিক সম্পদ, যা বিভিন্ন ঋতুতে অত্যাশ্চর্য রূপ ধারণ করে। শরৎ পাতা, চেরি ফুল এবং রংবেরঙের ফুলের উৎসবে , এই হ্রদ , পর্যটকদের কাছে এক অনবদ্য আকর্ষণ । আমাদের যাত্রা শুরু হয় সকল ৭ টাই , সকালের ট্রেন , ৮ টার অনেকটা আগেই ছিল। ট্রেন এর বুকিং আগে থেকে করা থাকলেও , takano স্টেশন (মানে যেখান থেকে Kawaguchiko যাওয়ার সরাসরি ট্রেন booked ছিল )পর্যন্ত পৌঁছাতে , আমাদের হোটেল বেশ সকাল সকাল ছাড়তে হলো। সাথে রাস্তায় খাবার মতো জুস আর প্যানকেক ছাড়া তেমন কিছু ছিল না। প্রথমে Shinjuku স্টেশন , সেখান থেকে Chuo লাইন র ট্রেন ধরে Takano স্টেশন।খুব চিন্তায় ছিলাম, আদোও সময় মতো ট্রেন পেলে হয় , বাচ্চা নিয়ে , এতো কিছু পরিকল্পনাতে , চিন্তায় একমাত্র সম্বল। ট্রেন পেলাম , সাথে সিট্ ও। অনেক্ষনের যাত্রা , প্রায় ২ ঘন্টার ওপর। ট্রেন ছাড়লো। এখানকার (মানে জাপানের ) ট্রেন বাস চড়তে কিন্তু বেশ লাগে , বিশেষ করে বুলেট আর এক্সপ্রেস। পুরোটা কাঁচের ন্যায় জানলা , মনে হয় , সব যেন হাতের কাছে।

ট্রেন ছুটতে লাগলো। সাথে ভিড় ও বাড়তে লাগলো। তবে সত্যি বলতে , ভিড় বাড়লেও কোনো অসুবিধা বা কোলাহলের বিন্দুমাত্র ছিল না কোথাও। বাবি মানে আমার মেয়ে , সকালের খাবার এ প্যানকেক খেয়ে , কিছু , যৎসামান্য , টুকরো , খাবারের সিট্ এ পরে ছিল। আমি ব্যাগ থেকে ন্যাপকিন বের করার আগেই দেখলাম , এক বেশ বয়স্ক মহিলা (বাবির সিট্ এর সামনে দাঁড়িয়েছিলেন , অনেকক্ষন ), তাড়াতাড়ি করে নিজের পকেট থেকে ন্যাপকিন বের করে জায়গা টা পরিষ্কার করলেন। কারণ আমার আর মেয়ের সিট্ একটু দূরে ছিল। এই পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে জাপানীস দের বিষয়ে আর নতুন করে কিছু বলার নেই। বেশি বললে , আমার দেশের মানুষ ই বেঁকে বসবে। আমরা দেশে যখন দুরন্ত বা রাজধানীতে যাত্রা করি , ঠিক যাত্রা শেষে মনে করে দেখুন একবার , ট্রেনের কামরার হাল , মনে পড়লো !! পড়েছে নিশ্চয়। আর সেই হাল , আমাদের জন্যই। আর এই দেশ জাপানের পাবলিক পরিবহন ব্যবস্থা বলুন বা রাস্তা বা শৌচালয়, তা এতটা পরিষ্কার , সেও এদের দেশবাসী -নাগরিকদের জন্যই।
আমরা সিট্ পেয়েছিলাম ট্রেনের ডান দিকে। তাই ভাগ্যবশতঃ মাউন্ট ফুজি দেখা দিলো। অসাধারণ সে দৃশ্য। ঘর বাড়ি , ছোট ছোট ঝিলের মাঝ দিয়ে মাঝে মাঝে উঁকি দিছিলো মাউন্ট ফুজি। শুরু হলো ফটো তোলা , আর ধরা পড়লো মাউন্ট ফুজির প্রতিবিম্ব আমার ক্যামেরায়।

Reflection of Fuji

তারিন এসে থামলো Kawaguchiko স্টেশন। পাশের প্লাটফর্ম এ ছিল একটি সুসজ্জিত ট্রেন , সবাই উঠে তাতে ফটো তুলছিলো , ট্রেন বিশেষত ছিল বাচ্চাদের মনোরঞ্জনের জন্য। স্টেশন থেকে বেরিয়ে চোখে পড়লো বাসস্ট্যান্ড , যেখানে প্রতিনিয়ত এসে চলেছে বিভিন্ন রকমের বাস। সামনেই রয়েছে একটি টিকিট কাউন্টার। সেখানেও এইয়া লাইন। জাপানে ঘুরতে এসে বার বার মনে হয়েছে , বিদেশিদের সাথে সাথে দেশ এর মানুষ গুলোও কিন্তু ঘুরতে ভালোবাসে। যেখানে যাও ,এ আমাদের ন্যায় পাগলের সংখ্যা কিন্তু কম নেই। লক্ষ্য করলাম তিন ধরণের বাস ছাড়ছে বাসস্ট্যান্ড থেকে। “Retro বাস” লাল, সবুজ এবং নীল। ভাস্কর এলো , টিকিট কেটে প্রায় আধ ঘণ্টা লাইন এ দাঁড়িয়ে। এর পর আবার বাস এ ওঠার লাইন। আমরা চড়লাম লাল বাস। টিকিট কেটে ছিলাম Kawaguchiko হ্রদ এ boating আর রোপওয়ে তে চড়া। কারণ মাথায় আগে থেকে প্ল্যান ছিল Chureito Pagoda.এটা তাড়াতাড়ি সেরে প্যাগোডার উদেশ্যে রওনা দেব। বাস এসে থামলো Kawaguchiko লেক র সামনে।আসার পথে মাউন্ট ফুজির দর্শন হয়েছে , কিন্তু এখন আকাশ মেঘলা। তাই দূর থেকে মাউন্ট ফুজি র চুড়া টা , মেঘের সাথে মিশে গেছে। অনেক্ষন লক্ষ্য করলে চোখ মেঘ আর ফুজি কে আলাদা করতে পারছে। তবে ছবি সে কাজ করতে পারবে না।

লেক কাওয়াগুচি (河口湖 কওয়াগুচি-কো) জাপানের মাউন্ট ফুজি কাছাকাছি দক্ষিণ ইয়ামানসি প্রিফেকচার, ফুজিকুগুচিকো এবং মিনোবু সীমান্তে অবস্থিত। এটি ফুজি পৃষ্ঠভূমির ক্ষেত্রে অবস্থিত ,পাঁচটি হ্রদের দ্বিতীয় বৃহত্তম, এবং সর্বনিম্ন উচ্চতায় অবস্থিত। এটি আনুমানিক 800 মিটার উচ্চতায় অবস্থিত, যা তুলনামূলকভাবে শীতল গ্রীষ্ম এবং বরফে ঢাকা শীতকালের জন্য জনপ্রিয় ।

লেক কাওয়াগুচি

কিছুক্ষন তীরে এসে উপস্থিত দোতলা স্টিমার। ঝটপট উঠে গেলাম ছাদ খোলা দোতলায়। স্টিমার তার গতি নিয়ে নিলো , জাপানীস এ অনেক কিছু তথ্য দেওয়া হচ্ছিলো , যেমন কোন দিকে কি কি আছে। যদিও তার কোনো কিছুই বোধগম্য নয়।

 

 

 

 

 

এদিক ওদিক তাকিয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছিলাম মাউন্ট ফুজি কে। ধীরে ধীরে স্টিমার এসে পৌঁছায় হ্রদের উত্তর তটে , আর চোখের সামনে ম্যাজিকের মতো ফুটে ওঠে মাউন্ট ফুজি। অসাধারণ মুহূর্ত। কি করে তাকে ধরে রাখা যায় , বলা বাহুল্য। কিন্তু মস্তিস্ক থেকে মনের প্রতিটা স্তরে , থেকে যাবে এই দৃশ্য , এই অনুভূতি , এই অভিজ্ঞতা। ফটো -ভিডিও কিছুই বাকি থাকলো না। এর পর স্টিমার পুরো হ্রদের বিভিন্ন দিক ঘুরিয়ে নিয়ে ফিরে এলো তীরে।

মেঘে ঢেকে গেছে ফুজি র চূড়া

গাড়িতে প্রায় ১২ টা। আমরা সবাই খিদেতে অস্থির। কিন্তু খেতে যাওয়ার সময় টুকু যেন কেউ কেড়ে নিয়েছে। খেতে গিয়ে সময় নষ্ট করতে যেন মন মানলো না। এগিয়ে গেলাম রোপেওয়ের দিকে। রাস্তা পেরিয়ে উল্টো দিকে রোপওয়ে স্টেশন। মেয়ের হাতে জ্যাম -পাউরুটি-জুস ধরিয়ে মন কে মানানোর চেষ্টা। আমাদের দেরিতে খেলেও চলে , কচি প্রাণ টাকে কি করে কষ্ট দি। যদিও আমার মেয়ের ওই খাবারে খুব এ আপত্তি তবুও কানে দিলাম না ওর মিষ্টি বায়না গুলো। রোপওয়ে তেও অনেক লাইন। সময় এগোতে থাকলো , সাথে অস্থিরতা আর খিদে।

এলো আমাদের turn .উঠে পড়লাম রোপওয়ে তে। ওমা , এতো ওই স্টিমার ভ্রমণ থেকেও অনেক বেশি রোমাঞ্চক।ধীরে ধীরে নিচের বিশাল সেই লেক -মানুষ গুলো ছোট থেকে ছোট হয়ে গেলো। আমরা উঠে পড়লাম অনেকটা ওপরে। এই রোপওয়ে র নাম lake kawaguchiko kachi kachi yama ropeway .

Our Pass

 

কচি কচি রোপওয়ে তেনজো পর্বতমালার কাছাকাছি একটি পর্যবেক্ষণ ডেক যা লেক কাওয়াগুচিকোর পূর্ব তীরে 400 মিটার উচ্চতায় পর্যন্ত ওঠে । পর্যবেক্ষণ ডেক, যা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে 1000 মিটারেরও বেশি উঁচুতে অবস্থিত, নীচের লেকের প্যানোরামীয় দৃশ্য এবং মাউন্ট ফুজি মনোরম দৃশ্য দেখার জন্য বিশেষ ভাবে জনপ্রিয় ।

এখান থেকে মাউন্ট ফুজিকে যেন আরো স্পষ্ট আরো কাছে মনে হলো। এই ডেকে টিতে ছিল খাবার ব্যবস্থা ,জনপ্রিয় মিতাশি ডাঙ্গ আর চিকেন বল। এই প্রথম আমরা খুঁজে পেলাম ভারতীয় স্বাদের ফ্রাইড চিকেন বল। ৩ -৪ বার বোধহয় অর্ডার দিয়ে , ওই খেয়েছিলাম সেদিন লাঞ্চ এ। সাথে ছিল জাপানের সব থেকে জনপ্রিয় আইসক্রিম ফ্লেভার , গ্রীন টি।

 

 

 

 

 

 

 

রোপওয়ে থেকে নিচে ফিরে আসতে সময় হয়ে গেলো ২ টো র বেশি , কিন্তু বাসস্ট্যান্ড এ পৌঁছে প্রায় ৪০ মিনিট কোনো বাস না থাকার দরুন স্টেশন পৌঁছাতে দেরি হয়ে গেলো। আর সব পরিকল্পনা গেলো ভেস্তে। আমাদের ফেরার ট্রেন ৪ টা নাগাদ। আর এই ৩ টা নাগাদ , প্যাগোডার উদ্দেশে হাঁটা দিলে , ফেরার ট্রেন মিস হবে। অনেকবার মন কে অনেক কিছু বুঝিয়ে মানিয়ে , স্টেশন এ এদিক ওদিক ঘুরে বসে পড়লাম ফেরার ট্রেনে। প্যাগোডা যাওয়া আর হলো না।


তবে ঠিক হলো , যাওয়ার পথে Renkoji Temple ( যা আমাদের সুভাষ চন্দ্রের জন্য বিখ্যাত ) আর Shinjuku র LOVE statue দেখে ফিরবো।

টোকিওতে এসে অবধি ভাস্করের একটি আবদার ছিল সেটি হচ্ছে জাপানের মাটিতে সুভাষ চন্দ্র বসুর শেষ চিহ্ন দেখার। আমরা ও যে মনে মনে তা ছিল না , তা নয়। ভারতীয় হিসেবে গর্ববোধ করার এরকম সুযোগ কেই বা হাত ছাড়া করে।

 

আমার শৈশব থেকেই অনেক সময় ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যন্য ঐতিহাসিক ঘটনাবলি নিয়ে আমি আমার মাকে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু (ভারতের মহান মুক্তিযোদ্ধা) এবং তার বিতর্কিত অন্তর্ধানের বীরত্ব এবং নির্ভীকতা সম্পর্কে বলতে শুনেছি । আমাদের জাতির এই মহান পুত্র উড়িষ্যাতে কটক শহরে জন্মগ্রহণ করেন। সুভাষ চন্দ্র বসু জাপানের সাথে গভীরভাবে জড়িত ছিলেন। তিনি জাপান সরকার নিয়ে আলোচনা করেন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ সময়ে জাপানি সেনাবাহিনীর সাথে ভারত ভ্রমণের চেষ্টা করেন। সুভাষ চন্দ্র বসু , এখনও ব্যাপকভাবে ভারতে, এবং আন্তর্জাতিকভাবেও অধ্যয়ন এর বিষয় । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের স্বীকৃতির কারণে সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে সহযোগিতা জোরদার করার জন্য তিনি একটি বিমানে রওনা দেন , এবং তারপরের সব ঘটনায় আজ রহস্য ।
19 আগস্ট, ১৮৪৫ তারিখে তাইপেই (তাইওয়ান) এ বিমান দুর্ঘটনায় নেপালে নেতাজীর মৃত্যু ঘটে,( বিরোধের বা বিতর্কের বিষয় এই যে অনেকের মতে বিমান টি টোকিওর পথে যাত্রা শুরু করেছিল )। এটি বিশ্বাস করা হয় যে তাঁর মৃত্যুর পর ,দাহ করে ,১৪ সেপ্টেম্বর ,১৮৪৫ , তার অস্থি জাপানে আনা হয়েছিল এবং এখানে টোকিওতে রেংককজি মন্দিরের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল।

Renkyoji Temple

আমি বা আমরা কোনো বিতর্কে যেতে চাই না , শুধু দেখতে চাই  বা ছুঁয়ে নিতে চাই সেই মাটিকে যেখানে বিতর্কে হোক বা তর্কে , নেতাজির স্পর্শ আছে।

রেংকো-জি (蓮 光寺 রেনাকোজি) জাপানের সুগিনিমী -কি টোকিওর একটি বৌদ্ধ মন্দির।ছোট, সুশৃঙ্খল এই মন্দিরটি ১৫৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যা ঈশ্বরের সম্পদ এবং সুখের দ্বারা অনুপ্রাণিত।মন্দিরটি প্রতি বছর ১৮ ই আগস্ট নেতাজীকে বৌদ্ধ স্মৃতিসৌধ প্রদান করে। আশ্রয়ের বিষয়ে বিতর্ক আছে কি না এবং সেগুলি আসলে কি, তবে ভারতের তিনজন প্রধানমন্ত্রীর কাছে মন্দিরটি পরিদর্শন করা হয়েছে এবং ভারতীয় সম্প্রদায় ও পর্যটকরা নিয়মিতভাবে এই স্থানটি হাইশি কৌনজিতে পরিদর্শন করছে।ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর এবং শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ির এই মন্দির পরিদর্শন করেছিলেন এবং তাদের মত সাক্ষর করে গেছেন।

 

 

 

 

 

 

আমরা স্টেশনে নেমে মন্দিরটির কথা জিগেস করতেই দুই জাপানীস ভদ্রলোক খুব আগ্রহ সহকারে আমাদের পথ দেখান আর সবার প্রথম জিগেস করেন “আপনার কি ভারত থেকে এসেছেন ?” . এর থেকে গর্বের আর কি আছে। আমাদের পৌঁছাতে পৌঁছাতে ৫ টার বেশি বেজে যাওয়াতে মন্দির এর ভেতরে সেদিন প্রবেশ হয়ে ওঠেনি , তবে উঁকি মেরে যেটুকু দেখতে পাচ্ছিলাম , অনুভব করতে পেরেছিলাম সেটাই অনেক।

এর পর সেখান থেকে আমরা চলে আসি সিনজুকু LOVE Statue এর কাছে। অনেকটা সময় লেগে যায় , এখানে পৌঁছাতে। Shinjuku স্টেশন এর একদম লাগোয়া জায়গাতেই সেই statue , সাথে বিভিন্ন রকমের বিশাল বিশাল ইমারত। shinjuku , বিখ্যাত এই কারণেই , এখানকার অত্যাধুনিক জীবনযাপন ,বিল্ডিং আর রোড ক্রসিং ইত্যাদি। এক জাপানীস মডেল এর সেই সময় ওই LOVE স্ট্যাচু তে ছবি তোলা হচ্ছিলো , আমরাও তুললাম ইচ্ছে মতো।

Love Statue
High Rising Shinjuku

এবার ফেরার পালা। ঠিক ছিল আজ রাতে কোনো ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্ট এ খাবো। ফায়ার গেলাম APA হোটেল এর কাছে , সেখান থেকে ১০-১২ মিনিট হাঁটা রাস্তায় ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্ট নবাব। মোটামুটি খাওয়া , বলতে গেলে আমার পছন্দ হয়নি , একটা অদ্ভুত গন্ধ ছিল প্রতিটি খাবারে ,কেমন যেন ইন্ডিয়ান হয়েও ইন্ডিয়ান নয়। হোটেল রুম এ ফিরতে ফিরতে রাট ১১ টা। আমার ছোট্ট মেয়েটি সেই ভোর ৫ টা থেকে রাট ১১ টা তে আমাদের সাথে পাল্লা দিয়ে ঘুরে বেড়ালো। ভাবলেও ভালো লাগছিলো। কালকে , আরো একটা এটি প্রিয় জায়গার উদ্দেশে রওনা হবো , ভেবেই সব ক্লান্তি কোথাও যেন দূর হয়ে গেলো। মা এর অতীত আর মেয়ের বর্তমান , সব একাকার হবে কাল।

<< জাপান পর্ব ১৬                                                                              জাপান পর্ব ১৮ >>

 

                   Copyright © জাপান পর্ব ১৭, 2018 by M K Paul, monomousumi.com

2 COMMENTS

  1. Thanks a lot! I feel you might be proper once you say this.
    The blossom is picked in May and June, when high humidity is
    very important.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here