ছবি মন ও মৌসুমী

লেখিকা অলকানন্দা রায় দেরাদুন বেড়াতে এসেছেন।সঙ্গে আছে তাঁর বিশ্বস্ত সঙ্গিনী রূপা। অলকানন্দা একসময়ে কলেজে বাংলার প্রফেসর ছিলেন।অবসর নেওয়ার পরে পাকাপাকি ভাবে লেখালেখি বা সাহিত্য চর্চা করতে মন দিয়েছেন। চাকুরী জীবনেও লেখার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। এ নিয়ে বাড়িতে কম ঝামেলা পোয়াতে হয় নি। শুধু মাত্র স্বামী অমরেন্দ্র আর নিজের ইচ্ছে শক্তির জোরে তিনি এগিয়ে গেছেন। স্বামী আজ পাঁচ বছর আগে গত হয়েছেন। ছেলে সৌমেন্দ্র রাশিয়াতে ভালো পদে প্রতিষ্ঠিত। মেয়ে সমাদৃতা গুজরাতে তার পরিবারের সাথে রয়েছে। কোন পিছুটান নেই তাঁর। তাই রূপাকে সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন ।

রূপা তাঁর বাপের বাড়ি থেকে পাঠানো যৌতুক। অলকানন্দার বিয়ের সময় তাঁর বাবা রূপাকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন যাতে শ্বশুর বাড়িতে তাঁর আদরের ‘আলো’র কোন কষ্ট না হয়। রূপা অলকানন্দার বাল্যসঙ্গীনী। ছোটবেলাতে দুজনে মিলে কত দস্যিপনা করেছেন আজও অলকানন্দা চোখ বন্ধ করে দেখতে পান। রূপারও বয়স হয়েছে। তবু সে অলকানন্দাকে চোখে চোখে রাখে। তাঁর ভালোমন্দ, রুচি সংস্কৃতি সব রূপার নখদর্পনে।

কাল অনেক ট্রেন জার্নি হয়েছে ।কাজেই অলকানন্দা র ঘুম ভাঙতে বেশ দেরী হয়ে গেল ।ঘুম থেকে উঠেই তিনি শুনতে পেলেন সুরেলা গলায় রূপা হনুমান চালিশা পাঠ করছে ।রূপা উত্তরপ্রদেশের মেয়ে ।প্রতি মঙ্গলবার হনুমানের পূজো করে চালিশা পাঠ করে ।তার পাঠ শুনে তিনি বুঝে গেলেন আজ মঙ্গলবার ।

দেরাদুন আসার ইচ্ছা অলকানন্দার বহুদিন ধরেই ।সুযোগ আর হচ্ছিল না ।অবশেষে সুযোগ এল ।তাঁর এক কলিগ বন্ধু সুচরিতার স্বামীর দাদুর দেরাদুনে একটি ছোট্ট সুন্দর বাংলো আছে ।সুচরিতার স্বামী সব শুনে ব্যবস্থা করে দিলেন আর বাংলোর কেয়ারটেকার দীননাথকে খবর করে দিলেন ।দেরী না করে টিকিট কেটে রূপা কে সঙ্গে নিয়ে দেরাদুন চলে আসেন তিনি ।

অলকানন্দার পায়ের শব্দ পেয়ে রূপা ঘুরে তাকালো ।বলল’বাইরে লনে চেয়ার পাতা আছে ।যাও গিয়ে রোদে বোসো ।আমি চা আর নাস্তা নিয়ে যাচ্ছি ।’কথা না বাড়িয়ে তিনি গিয়ে বসলেন বাইরের লনে ।

খুব সুন্দর সাজানো লন ।লাগোয়া একটি বাগান রয়েছে ।সেখানে রঙবাহারী ফুল আর গোলাপের রাজত্ব ।চারদিকে সবুজ ঘাস কেয়ারী করে কাটা ।কেয়ারটেকার লোকটির চোখ আছে বলতে হবে ।সবে শীত পড়তে শুরু করেছে ।দেরাদুনে বেশ ঠান্ডা ।তবে সকালের রোদ বড় মধুর মনে হচ্ছিল ।ঠিক যেন অমৃত।

বেশ কিছুক্ষণ পর রূপা চা আর জলখাবার নিয়ে এল ।এর মধ্যে তার স্নান সেরে ফেলেছে ।ঘর দুয়ার মুছে ধুয়ে পরিষ্কার করে ফেলে ।ঠিক তখনই একজন নাদুসনুদুস চেহারার একজনের আগমন ঘটল ।সে সোজা এসে অলকানন্দা কে ‘সুপ্রভাত ‘জানিয়ে নমস্কার করল ।তারপর বলল ‘বিবিজি আমি এখানকার কেয়ারটেকার দীননাথ চৌকিদার ।আপনাদের সেবায় চব্বিশ ঘণ্টা নিয়োজিত ।অলকানন্দা বললেন ‘না ভাই ।বেশ আছি চৌকিদারি করতে হবে না ।’আরেকটা নমস্কার করে দীননাথ গিয়ে বাংলোর গেটে গিয়ে বসে গুন গুন করে গান গাইতে লাগলো ।চা খেয়ে অলকানন্দা ঘরে এলেন ।মনে পড়ে গেল অনেক লেখা বাকি আছে ।শেষ করতে হবে ।এই ভেবে লেখার ব্যাগ খুলে ফেললেন আর লেখাতে ডুবে গেলেন ।

কতক্ষণ কেটে গেছে অলকানন্দা জানেননা ।হঠাৎই একটা মধুর সুরে গাওয়া গান এসে তাঁর মনোযোগ ছিন্ন করে দিল ।এক মুহূর্তের জন্য মনে হলো আরব দেশের মরূদ্যানে যেমন চাতক গান গায় এই গান যেন ঠিক সেরকম মাধুর্যে পরিপূর্ণ ।সে গানের মূর্ছনাতে উপচে পড়ছে রসের পেয়ালা ।ভরে গেছে চারদিক ।দীননাথকে ডেকে বললেন সে যেন এখুনি গিয়ে দেখে কে গাইছে এই গান।যে গাইছে তাকে এখুনি নিয়ে আসুক তাঁর সামনে ।সঙ্গে সঙ্গে দীননাথ ছুটল হুকুম তামিল করতে ।

কিছুক্ষনের মধ্যে দীননাথের পেছন পেছন একটি মেয়ে এসে মাথা নিচু করে দাঁড়াল ।দীননাথ বলল’ অনেকদূর চলে গেছিলো ।ধরে নিয়ে এসেছি’।অলকানন্দা খুব ভালো করে মেয়েটিকে দেখছিলেন ।ঠিক যেন কোন শিল্পীর আঁকা ছবি ।কোন ভাস্কর যেন খুব যত্ন করে তৈরি করেছেন তাকে ।বয়স কুড়ি বাইশের কাছাকাছি ।ধপধপে ফর্সা রঙ।সুন্দর মুখমণ্ডলে ঠোঁটের ওপরে তিলটা যেন বেশি সৌন্দর্য প্রদর্শন করছে ।বড় বড় কাজল কালো চোখ ।পরনে স্থানীয় পোশাক ।হাতে একটা ছড়ি।দেখেই বোঝা যাচ্ছে সে পশু চড়িয়ে ফিরছে ।তিনি খুব আদর করে জিজ্ঞেস করলেন ‘তোমার নাম কি মা’? দীননাথ বলল ‘ও বাংলা বোঝে না ।হিন্দিতে জিজ্ঞেস করুন’।এবার সাবলীল হিন্দিতে জানতে চাইলেন মেয়েটির নাম । মেয়ে বলল ‘বৈদেহী’।কেন জানি না তাকে দেখে অলকানন্দার মনে স্নেহ রসের সঞ্চার হল ।তিনি তাকে ঘরে আসতে বললেন ।কিন্তু রূপা হৈ চৈ করে তেড়ে এলো ‘দেখছ না পায়ে কত ধূলো! যা তো আগে গিয়ে পা ধুয়ে আয় ।তারপর ঢুকতে দেব’। রূপার কান্ড দেখে অলকানন্দা আর হেসে বাঁচেন না ! তিনি মুখ টিপে হেসে বললেন ‘ঠিক আছে চলো আমরা লনে গিয়ে বসি’।

বৈদেহীকে সঙ্গে নিয়ে তিনি লনে এসে বসলেন ।
সে কিছুতেই চেয়ারে বসল না ।নীচে ঘাসের উপর বসল ।খুব আপন করে অলকানন্দা তার সাথে কথা বলতে শুরু করলেন ।তিনি বুঝে গেলেন মেয়েটি খুব সহজ সরল ।এবার থেকে সে প্রতিদিন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসে।সঙ্গে করে নিয়ে আসে তাদের গাই কৃষ্ণার দুধ,গাছের ফল, সুগন্ধি ফুল,মাখন,আচার আরো কত কি! সে অলকানন্দা কে ‘দিদিসা’ বলে ।খুব দুষ্টু মিষ্টি মেয়ে সে ।রূপার পেছনে খুব লাগে ।পিছন থেকে এসে জড়িয়ে ধরে ‘হাউচ ‘বলে চমকে দেয় ।রূপা রেগে গিয়েও হেসে ফেলে ।বলে’পাগলী একটা’ …

বেশ কিছুদিন কাটার পর অলকানন্দা বৈদেহীর কাছে তার বাড়ির কথা জানতে চাইলেন ।বাড়িতে কে কে আছে, তারা ক’ ভাইবোন, বাবা কি করেন, সে কতদূর পড়াশোনা করেছে -এইসব ।এসব শুনে বৈদেহীর সুন্দর মুখমণ্ডলে নেমে আসে বিষাদের ছায়া! ধীরে ধীরে সে তার জীবনের কাহিনী বলতে থাকে ।তার বাবা সম্পন্ন চাষী ছিল ।অনেক গরু মোষ ছাগল ছিল তাদের ।ছিল চাষের জমি ।তার দাদা বাবাকে চাষে সাহায্য করত।তারা দুই ভাইবোন কখনো স্কুল যায় নি।একদিন খুব ধুমধাম করে পাশের গাঁয়ের মেয়ের সাথে দাদা র বিয়ে হল ।গোটা গাঁয়ের লোক কে তার বাবা দাওয়াত দিয়েছিলেন ।দাদার বিয়েতে সে খুব সেজে ছিল ।বিয়ের দিন সবাই তাদের বাড়িতে পুরী মিঠাই খেয়েছিল পেট ভরে ।নতুন বৌদি তাকে খুব ভালোবাসত ।দুই বছর পর তার দুটো যমজ ভাইপো ভাইঝি হয় ।সবাইকে নিয়ে দিন খুব ভালো কেটে যাচ্ছিল ।তার মা সকালে পূজো করে তার মাথায় হাত বুলিয়ে বলতেন ‘তুই জানিস বৈদেহী কার নাম? মা সীতার আরেক নাম ।তাঁর মত সব দুঃখ জয় করবি তুই ।কোন কষ্ট তোর কাছে আসবে না ‘…

এসময় তার জন্য একটা বিয়ের সম্বন্ধ আসে ।ছেলের বাবা মা নেই ।তারা তিন ভাই ।তাদেরই মত সম্পন্ন চাষী ঘর।বাবা দেরি না করে বিয়েতে রাজি হয়ে গেলেন ।কিন্তু ভুল ভাঙলো ফুলশয্যা রাতে ।সে বুঝতে পারলো তার স্বামী জড়বুদ্ধি সম্পন্ন ।তার দুই বড় জা সারাদিন তাকে খাটাত।তার স্বামী কে দুই ভাসুর মাঠে নিয়ে গিয়ে ভীষণ কষ্ট দিয়ে খাটিয়ে নিত।অথচ দুজনে ভালো খাবার পেত না ।কোন কাজ করতে অস্বীকার করলে চরম অত্যাচার চলত ।এভাবে দেখতে দেখতে এক বছর পার হয়ে গেল ।তার বাবার বাড়ি থেকে কেউ খবর করতে এল না ।

এরকম অবস্থাতে অশান্তি একদিন চরম পর্যায়ে চলে গেল ।সেবার ফসল বিক্রির যাবতীয় টাকা দুই বড় দাদা ভাগ করে নিল ।ছোটভাই কে কানা কড়ি ও দিল না ।বৈদেহী এর প্রতিবাদ করলে দুই ভাসুর আর জা মিলে মেরেধরে বাড়ি থেকে বের করে দিল ।বেচারী নিজের বাবার বাড়ি ফিরে এসে আবার একটা ধাক্কা খেল ।সে দেখলো তার দুই ভাইপো আর ভাইঝি মাটিতে খিদে র জ্বালায় গড়াগড়ি দিয়ে কাঁদছে ।তার বাবা নীরবে অশ্রুবিসর্জন করছে আর মা চুপ করে বসে আছে ।সে দৌড়ে এসে মাকে জিজ্ঞেস করল কি হয়েছে ।মা সেই চুপ করে বসেই রইল ।সে আরো জানতে চাইল দাদা আর বৌদি কৈ?এর উত্তরে বাবা যা বললেন সেটা সে একদম আশা করে নি ।

বাবা বললেন গেল বর্ষার সময়ে বাঁধ ভেঙে জল ঢুকে গাঁ ভেসে গেল ।তার দাদা আর বৌদি তখন মাঠে কাজ করছিল ।তারাও ভেসে গেল ।দুদিন পর ওদের পচা গলা মৃতদেহ উদ্ধার হল আরো কয়েকটা মৃতদেহর সঙ্গে ।সে ঘটনা তে বাবা বিশাল আঘাত পায় ।তার স্ট্রোক হয় ।কোন ভাবে সামলে ওঠেন তিনি ।বাবাকে সুস্থ করতে গিয়ে বেশির ভাগ জমি বিক্রি করতে হয়েছে ।গরু বাছুর বেচে দেওয়া হয়েছে ।আছে শুধু কৃষ্ণা গাই আর তার বাছুর।কোন ভাবে চলছিল ।হঠাৎই একদিন জল আনতে গিয়ে মা মাথা ঘুরে পড়ে যায় ।তার ডান পা ভেঙ্গে যায় ।এই অবস্থাতে তারা বৈদেহীর শ্বশুরবাড়ির কোন খবর নিতে পারেননি ।

পাথরের মত সবকিছু শুনেছিল বৈদেহী ।সে জানালো শশুর বাড়ির লোকেরা কি ব্যবহার করেছে তার সাথে ।সে আর শশুর বাড়ি যাবে না ।এখানে থেকে বাবা মা কে দেখবে আর সংসার সামলাবে ।সেই দিন থেকে সে বাবা মা এর কাছে আছে ।ভাইপো ভাইঝিদের দেখাশোনা, বাড়ির কাজ,গরু বাছুর কে যত্ন করা, তাদের বেড়াতে নিয়ে যাওয়া, গাছের যত্ন সব সেই করে ।অসুস্থ মা বাবাকে সারিয়ে তুলেছে ।বাবা আবার চাষে উৎসাহ ফিরে পেয়ে চাষ করতে শুরু করেছেন ।দুটো বলদ কিনেছেন ।ভাইপো ভাইঝি রা স্কুলে যাওয়া শুরু করেছে ।বাড়ির দায়িত্ব এখন বৈদেহীর ঘাড়ে ।এসব বলে অবোধ শিশুর মত সরল একটা হাসি ফুটে উঠলো বৈদেহীর মুখে ।তার মনে হল তার এই কথা গুলোর কোন মূল্য ই নেই তার’দিদিসা’র কাছে ।

কিন্তু সব কিছু শুনে অলকানন্দার দুই চোখ ভেঙে জল এল ।সত্যিই তো এইটুকু একটা মেয়ে, বয়সে তাঁর মেয়ের থেকে ও ছোট, এত অল্প বয়সে সংসার কাঁধে তুলে নিয়েছে -এটা কি কম কথা! গভীর স্নেহে তাকে জড়িয়ে ধরলেন বুকে ।বড্ড ভালোবেসে ফেললেন তাকে ।স্নেহরসের ভান্ডার ভরে গেল এই অশিক্ষিত গরীব অথচ সহজ সরল মেয়েটির প্রতি ।

এভাবে দেখতে দেখতে দিন কেটে গেল ।দেরাদুন দেখতে কোন গাইড লাগে নি।বৈদেহী নিজে সঙ্গে করে অলকানন্দা আর রূপাকে ঘুরিয়ে সব বিখ্যাত জায়গা দেখিয়েছে ।অলকানন্দার ছুটি ফুরিয়ে গেল ।তাঁদের এবার বাড়ি ফেরার পালা ।কথাটা শুনে বৈদেহীর মন খারাপ হয়ে গেল ।রূপা ও তাকে আজকাল কিছু বলে না ।

ফেরার দিন বৈদেহী সকাল সকাল এসে হাজির ।গাছের পাকা ফল, ফুল ।আচার, মাখন, হাতে হাতে তৈরি নানা রকম জিনিস কতকিছু সে তার ‘দিদিসা’র জন্য নিয়ে এসেছে ।অলকানন্দা তাকে একটা শাড়ি আর প্রসাধনী মনোহারী কিছু জিনিস উপহার হিসেবে দিলেন ।বৈদেহী কিছুতেই নেবে না ।উল্টে বলল ‘মেহমানদের থেকে কেউ কিছু নেয় বুঝি? দিদিসা তুমি কি বোকা কিচ্ছু জানো না ।অলকানন্দা বললেন ‘হম মেহমানদের থেকে হয়ত নেয় না কিন্তু দিদিসার থেকে তো নেওয়া যেতে পারে তাই না! পাগলী একটা! ‘বৈদেহী জোরে হেসে উঠল ।

একটু বেলা হলে একটা গাড়ি এসে হাজির হল বাংলোর সামনে ।ওতে চড়েই অলকানন্দা আর রূপা স্টেশন যাবেন ।গাড়ি তে ওঠার আগে বৈদেহী বলল’দিদিসা তুমি আমাকে মনে রাখবে তো? ভুলে যাবে না বল! আমি চিচিঠি লিখে হাওয়াতে উড়িয়ে দেব।তুমি পড়বে তো দিদিসা?’ অলকানন্দার চোখ ভেঙে জল এল ।কি জবাব দেবেন এই অশিক্ষিত মেয়েটিকে?বুকে জড়িয়ে ধরে অঝোরে কাঁদতে লাগলেন ।এত বিরহের মধ্যে ও যেন খুব শান্তি পেলেন ।একবার ভাবলেন ‘ওকে সঙ্গে করে নিয়ে যাই।আদর যত্ন করে রেখে দেব কাছে ।লেখাপড়া গানবাজনা শেখাবো।’কিন্তু পরে চিন্তা করলেন ওর বৃদ্ধ মা বাবা রয়েছে ।ছোট ভাই পো ভাইঝি আছে ।পুরো সংসারটা ওর দিকে তাকিয়ে আছে ।ওর গেলে চলবে কেন? বিষন্ন মুখে গাড়ি তে উঠে এলেন ।দেখলেন রূপার ও চোখে জল ।চশমা খুলে চোখ মুছতে মুছতে অনুভব করলেন এক অপার স্নেহে র বন্ধন ।হয়ত বৈদেহী তাঁর গর্ভজাত সন্তান নয় ।তবু ওর সাথে যেন জন্ম জন্মান্তরের এক বন্ধন ।চাইলেও তাকে বিচ্ছিন্ন করা যায় না ।স্মৃতি হয়ে মনে বেঁচে থাকে ।

ততক্ষণে গাড়ি স্টেশনের দিকে চলতে শুরু করেছে।

 

 

কলমে শুভ্রা মুখার্জি, ভিরীঙ্গী মোড়;দুর্গাপুর



 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here