তিনটি কবিতা

কলমে প্রদীপ দে

0
633

ভুলিতে পারি না

জানিনা কখন কোথায় তোমাকে প্রথম কিরুপে দেখেছি,
জানিনা কেমনে সেদিন তোমাকে আমার হ্নদয়ে গেঁথেছি।
কখনো ভাবি ভুলে যাবো আমি তোমার সেই ছবি খানা,
ভুলিতে পারি না, মোর হ্নদয়ে রয়েছে গভীর দাগটানা।
পূরণ হবে না সেই ক্ষতখানি তোমার বিরহে হেথায়,
তাই মোর পাগলা হ্নদয় শুধু বারবার তোমাকেই খুঁজে বেড়ায়।
কখনও খুঁজে পাই তোমায় চৈতালির মাধুরী মুগ্ধ রাতে,
নদীর কিনারে পল্লবে ঘেরা সেই নির্জন পথে।
ভাসিয়ে তরী গেছি বহু দূরে হয়েছে দিশাহারা,
ঘরে ফিরতে তুমি যেন মোরে করেছিলে ঈশারা।
বকুলের মিষ্টি গন্ধে পেয়েছি আমি তোমার আগমন,
তোমার নূপুরের ধ্বনি রাত্রে আমায় করে জাগরণ।
শীতের হিমেল রাতে, আমি খুঁজেছি তোমাকে পাশে,
তুমি হারিয়ে গেছো চুপটি করে দিনের অবশেষে।
আমি দেখেছি তোমাকে হলুদ শাড়িতে সরিষার মাঠে,
আমি দেখেছি তোমাকে কৃষ্ণচূড়ার রঙিন ঠোঁটে।
প্রকৃতির সকল রুপেতে তোমাকে আমি শুধু খুঁজে পায়,
নিশীথে স্বপ্ন দেখে বারবার শুধু ঘুম ভেঙে যায়।
কতবার ভাবি ভুলব তোমাকে বন্ধ করিব মনের দ্বার,
ভুলিতে পারি না ওগো প্রিয়সী তোমায়-
শুধু মনে হয় বারবার ওগো তুমি যে আমার-
ওগো তুমি যে আমার।
***

বছর দু হাজার বিশ

অনেক প্রতীক্ষার পর —
মানব দুয়ারে ফিরে এলে তুমি “বছর দু হাজার বিশ”,
বিশ্ব মাঝে ছড়িয়ে দিয়েছো, “করোনার” জীবন ঘাতক বিষ।
আকাশে বাতাসে বেড়ায় ভেসে শুধু কেবল একটি নাম,
“করোনা” তুমি গ্রাস করেছ এই পৃথিবীর সব ধাম।
এই পৃথিবীর চলার গতি সকল  করেছো বন্ধ,
সূর্যের আলো রয়েছে তবুও মানুষ হয়েছে অন্ধ।
ক্ষান্ত হওনি তুমি, সকলের বন্ধ করে দুয়ার,
“আমফান” ডেকে এনে তুমি করে দিলে ছারখার।
ক্ষুধার জ্বালা দিয়েছ পেটে ভেঙ্গেছ ঘরবাড়ি,
“বছর দু হাজার বিশ” তুমি বড়ই নিষ্ঠুর,
যেন, এই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মহামারি।
তবুও, আমরা যাব এগিয়ে সামনে,
নাচিব সবাই জয়ের গানে,
” মহামারির” আর করব না ভয়,
আমারা সবাই করবোই জয়,
বিধাতা মোদের শক্ত করুক – এই আমাদের আশা।
***

শুভ শক্তি

জানিনা কোথায় লুকিয়ে আছে কি সেই শুভ শক্তি!
যেথায় আছে মানুষের অঢেল বিশ্বাস আর ভক্তি।
মহাপ্রলয় আর মহামারীর কোন ডাক এই ধরায় এলে,
ওগো সৃষ্টিকর্তা আমাদের রক্ষা করো সকল মানুষ বলে।
দুটি হাত করে নত সকলে জানাই প্রণাম,
সকলে বলে রক্ষা করো আর পূরণ করো মনষ্কাম।
আকুল মিনতি জানায় সকলে নিজের  ভক্তি ঘরে,
নিরাকার সেই শুভ শক্তি কোথায় লুকিয়ে আছে, কোন সৃষ্টির দরবারে।
একদিন এলো সেই শুভ শক্তির ডাক সকল পৃথিবী বাসির কানে,
“এই পৃথিবী প্লাবিত হবে সব ভেসে যাবে এক বানে।
“মানুষ” নামের তরীখানি আমি ভাসিয়ে রেখেছি জলে,
বাঁচিবার আশা থাকলে মনে উঠে এসো সকলে।”
এক নিমেষেই ভরে গেল সেই মানুষ নামের তরী,
খালি হাতে সবাই এসেছে ছুটে ফেলে রাজপ্রাসাদ আর গাড়ি।
ধনী গরিব আর পথের ভিক্ষারি সকলে পেয়েছে ঠাঁই,
হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান কোন ভেদাভেদ নাই।
আবার সকলের কানে ভেসে এলো সেই শুভ শক্তির বাণী,
“শোন হে বিশ্ববাসী, শুধু “মানুষ” তোমরা এই পৃথিবীতে আর কিছু নাহি জানি।
শপথ করো আজকে তোমরা সব ভেদাভেদ ভুলে,
নতুন পৃথিবী গড়বে হেথায় থাকবে সুখে সকলে।
তোমারা মানুষ সৃষ্টির সেরা আছে সকলি জ্ঞান,
জেনে শুনে কেন করো সেই কাজ সব মনে হয় অজ্ঞান?
আকাশে বাতাসে জলে জঙ্গলে সকলি করেছ জয়,
মানুষ হয়ে মানুসত্ব, কেন করছো তোমারা ক্ষয়?
হাসি-কান্না সুখ-দূঃখে থাকবে একই সাথে,
মানুষ তোমারা চড়বে সেদিন আমার পুণ্য রথে।”
জানিনা কবে আসবে ফিরে,
এই পৃথিবীর সকল নীরে,
সেই শুভ শক্তির বাণী,
নতুন পৃথিবী সৃষ্টি হবে হেথায়
আর মুছে যাবে সব দুঃখের কানাকানি।
***

কলমে প্রদীপ দে

SOURCEপ্রদীপ দে
Previous articleপরিত্যক্ত
Next articleমৌনভঙ্গ
Avatar
Disclaimer: Monomousumi is not responsible for any wrong facts presented in the articles by the authors. The opinion, facts, grammatical issues or issues related sentence framing etc. are personal to the respective authors. We have not edited the article. All attempts were taken to prohibit copyright infringement, plagiarism and wrong information. We are strongly against copyright violation. In case of any copyright infringement issues, please write to us. লেখার মন্তব্য এবং ভাবনা, লেখকের নিজস্ব - কপিরাইট লেখক কর্তৃক সংরক্ষিত..................

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here