বছর পরে আসবে দেশে, ছুটি কয়েকটা দিন গোনা,
ভূত ভোলানাথ কৈলাশে থাক, সঙ্গে ছানা পোনা।
মা-দের কি আর ছুটি হয় ! চারটি দিন ও কম নয়,
আনন্দে আর উৎসবে, সবাই মিলে মিশে-
কয়েকটা দিন কাটবে ভালো, থাকবো রসে বসে।
বুঝলে মা! এবার এলে, দেশটা দেখো তিন চোখ মেলে,
অসুর বর্গ স্বর্গ ছেড়ে, মর্তে বাঁচছে ঘাঁটি গেড়ে।
সমাজের বুকে যত্রতত্র, গজিয়ে উঠছে ইচ্ছামতো।
সাধুর বেশে রাবন আসে, রক্ষক হয় ভক্ষক,
মিছরি মুড়ে বিষ দিয়ে যায়, বিশ্বাসী হয় ঘাতক।
এবার বরং আসার আগে, অস্ত্রশস্ত্র যা কিছু লাগে,
ভোঁতা গুলো সব ফেলে দিও, সেরার সেরা বেঁচে নিও,
ত্রিশূল নিও কয়েক শতক, খাঁড়া পারলে গোটা কতক,
তীর,ধনুক, ছুরি, কুঠার ভাণ্ডারে যা কিছু আছে আর,
ঢাল- তলোয়ার, সুদর্শন, সব কিছুই প্রয়োজন।
সব নিয়ে চেষ্টা করো, দেখো যদি এবার পারো।
স্বর্গ থেকে যেমন করে, তাড়িয়েছিলে ঘাড়ে ধরে,
তেমন করেই পাতালপুরে, পাঠিয়ে দাও সব অসুরে।
ওরা নাকি রক্তবীজ ? অসংখ্য! অগণিত!
প্রতি ফোঁটায় জন্ম নেই দানব শত শত !
তোমার ছুটি তো অল্প দিন, তারপর বিসর্জন,
মাত্র চার দিনে কি সাঙ্গ হবে, রক্তবীজ নিধন?
তার চেয়ে মা শক্তি রূপে, মাটি পৃথিবীর নারীর বুকে,
সাহস হয়ে, ভরসা হয়ে , নির্ভয়া রূপ ধরে ,
রক্ত মাংসে বাঁচো তুমি বাংলার ঘরে ঘরে।
জয়া রূপে জিতিয়ে দাও, রুখে দাড়াও, বুজিয়ে দাও,
পনের আগুনে জ্বলবো না আর, মরবো না মুখ বুঝে।
দড়ির ফাঁসে ঝুলবো না আর মিথ্যা লোক লাজে।
এবার থেকে বাঁচার লড়াই ত্রিশূল হাতেই লড়বো,
আমার দুর্গা আমি-ই নিজে, একাই একশো অসুর মারবো।
মাগো তোমার মেয়েদের আর লক্ষী মেয়ে করে
আঁচল দিয়ে আড়াল করে রেখোনা আর ধরে।
ব্যর্থ চেষ্টা আগলে রাখার, সমর্থকর আত্মরক্ষার
দীপার থেকে গতি, দোলার তীর-ধনুক,
মেরি-কমের ঘুসি আর গীতার কুস্তি শিখুক।
ঝুলনের ব্যাট গদার মতো মুষ্টিবদ্ধ করে,
ছন্দা উঠুক দুঃসাহসে এভারেস্ট শিখরে।
মাতৃস্নেহ, ভালোবাসা, নাকি বিজয়িনীর বল-ভরসা,
এক অঙ্গে শতরুপা, জ্যান্ত দুৰ্গা হয়ে ,
আপন শর্তে এবার বাঁচুক, তোমার লক্ষী মেয়ে।
কবি পরিচিতি : শিল্পী দত্ত , সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার , ওহিও ,ইউনাইটেড স্টেট অফ আমেরিকা। ভালোবাসেন ঘুরতে, রান্না করতে, সেলাই করতে এবং একই সাথে পড়তে ও লিখতে। অবসর সময় পড়তে বেশি ভালোবাসেন।তার কিছু লেখা ইন্দো-আমেরিকান ম্যাগাজিনেও প্রকাশিত হয়েছে ইতিমধ্যে।