আমি প্রকৃতি, আমি করেছি সকল সৃষ্টি,
মনটা আমার কেঁদে ওঠে যেন যেদিকে ফেরায় দৃষ্টি।
এই পৃথিবীর রং রূপ রস সবই তো আমার করা,
মানব জাতিকে রক্ষক করে বানিয়েছি এই ধরা।
রক্ষক আজ হয়েছে ভক্ষক তাই আমার বক্ষ কাঁদে,
আমার সৃষ্টি ধ্বংস করিয়া নিজেদের ঘর বাঁধে।
আমার সাজানো সবুজ বাগান ধ্বংস করে আজ,
গড়েছে সবাই নতুন শহর হচ্ছে নতুন সাজ।
তোমাদের বিষ পান করে আমি বিলাই মুক্তবাতাস,
আমি না বাঁচিলে কেমনে চলবে তোমাদের শ্বাস-নিঃশ্বাস।
মোর জীবনের শেষ নিশ্বাস বিশ্বে প্রলয় ঘটে,
আইলা, আমপান, সাইক্লোন, সুনামি, টর্ণেডো, মোর কত নব নাম রটে।
অংক কষে বের করেছো আমার গোলক মূর্তি চেহারা,
কোথায় আমার সমতল দেহ মেপে কি দেখেছ তোমরা?
মোর জীবনের তিন ভাগ জল আর এক ভাগ স্থল,
রক্ষা করতে এই ধরাতে মাঝেমাঝে আমি হই উত্তল।
মোর সেই বিনাশের ক্ষণিক মূর্তি দেখে কাঁপে যে ধরা,
আমাকে কাঁদালে এই ধরা মাঝে তোরা হবি সর্বহারা।
দিয়েছেনু আমি সমঅধিকার সবাইকে ধরা মাঝে,
ধনী-গরীব আর জাতি ভেদাভেদ করেছো সবাই আপন স্বার্থ কাজে।
গৃহস্থের ছিল তিন বিঘা জমি, দুই বিঘা হতো চাষ,
ভাগাভাগি করে আজকে সেথায় গড়েছে সুখের নিবাস।
এমনি করেই শেষ হয়ে যাবে চাষের সকল জমি,
বাড়ি-গাড়ি টাকা থাকবে অনেক, খাবে কি শস্য তুমি?
খাবে কি তোমরা ইট বালি খড় ভেঙে সেই বহুতল?
চারিদিকে শুধু কিলবিল করে ভুখা মানুষের দল।
মানুষ আর গাছ গুনে দেখেছো কত ব্যবধানে হেথায়,
যত কাটো গাছ, কাটো কি মানুষ সমান করবে কোথায়?
আকাশে বাতাসে জলে-স্থলে করেছো সকলি জয়,
আমার বক্ষ খুঁড়ে করেছ শুন্য, করেছ আমাকে ক্ষয়।
আমি প্রকৃতি’ আমি সৃষ্টি’ আবার করিতে পারি ধ্বংস,
আমাকে বাঁচাও’ নইলে নিপাত হবে এই মানবের বংশ–
আমি গড়বো নতুন পৃথিবী-নিয়ে নতুন মানব বংশ।