হেমন্তের সন্ধে। ঠোঁটে কিছু বিষাদ মাখা থাকে। পলাতকা হরিণীর মতো ভীরু চোখ একটু নিরাপত্তা খোঁজে। শহরের আনাচে কানাচে হেমন্তের শিরশিরানি এলেও ওম নেই। নেই কোন ডাকপিয়ন যে মন ভালো করার কোন খবর নিয়ে আসবে। চারদিন আগে ছুঁয়েছি তোমায়। স্পর্শ মুছে ফেলার মতো মেকআপ রিমুভার নেই। কথা তবু জমে থাকে শীত শীত বাতাসে।বলতে গেলে তল খোঁজ না তুমি। নিরুদ্দেশ হওয়ার পাসওয়ার্ড ভুলে গেছি বলেই হেমন্তের বিকেলে শেষ বার তোমাকে ডাকতে চাওয়া। কখন যে পাতা ঝরিয়ে মানুষ ও শীতকালের গাছ হয়ে যায় , তুমি বুঝতে পারোনি।
ফেরার ঘন্টা বেজে যায় কিছু বুঝে ওঠার আগেই। আলগোছে পড়ে থাকা কফির কাপ ছেড়ে তুমি চলে যাও। কোথাও কোন পোস্টম্যান নেই চিঠি আনার , আলোর চিঠি। চলে যাওয়ার পথে বিষাদ জড়ো হয়ে থাকে।
কান্না পাচ্ছে আলুথালু। কোথাও কোন হিসেব মিলছেনা। শেষ ট্রেনের হুইসেল তছনছ করে দিচ্ছে আমার ডিপ্রেশনের বিকেল।
এবারে বসন্ত এলে তোমাকে কিছু রোদ পাঠাবো খামে ভরে। ডাকপিয়ন ও তখন ছুঁড়ে ফেলবে চিরকেলে ইউনিফর্ম। রঙিন পোশাক পরে দেখে তুমি প্রথম বার তাকে চিনবেই না। রোদেলা খাম তোমাকে চেনাবে যারা ভুল করে হারানো স্টেশনে নেমে পড়ে, তাদের আঙুলে বসন্ত চিরস্থায়ী। কে জানে, ডাকপিয়ন কে সেদিন তুমি আনন্দে চুমু খাবে কী না।
এবারে বসন্ত এলে কান্না রঙের আবিরগুলো সেরদরে বেচে দেবো। আঙুলের এক চিমটে রঙে আমরা বসত গড়বো।
লেখিকা পরিচিতি : মৌমিতা ঘোষ