কবিগুরু

0
604

কবিগুরু

পঁচিশে বৈশাখে এবার তোমাকে উচ্চকিত হয়ে,
আহবান করতে পারলাম না,
হে কবিগুরু , তুমি এলে আজ —
অনেকটাই নিঃশব্দে।

মারীর করাল গ্রাসে, আজ মাটিতে কাঁপন,
বাতাসে ছড়িয়ে পড়েছে বিষাক্ত নিশ্বাস –
আকাশ কে আর নীলাম্বরী বলা যায়না ;
সে আজ সবসময় মুখ ভার করে আছে–
কালোমেঘের আবরণে নিজেকে ঢেকে রেখে।

সেই ধূসরতার আবহে  এই পঁচিশে বৈশাখের  প্রভাতে,
বেজে উঠলো তোমার আবির্ভাব লগ্নে,
মাঙ্গলিক সানাই —
সামান্য উপাচারে আজ তোমার নৈবেদ্য সাজানো-
কোন বাহার নেই, কোন বাহুল্য নেই সেখানে।

এবারের পঁচিশে বৈশাখে একটা আর্তি নিয়ে তোমার কাছে
এসে দাঁড়িয়েছে অনেক মানুষ, পায়ে পায়ে,
দিগন্ত ছোঁয়া সেই তেপান্তরের মাঠ পেরিয়ে, ওপার থেকে —
আবার নদী পেরিয়ে সেই রাঙামাটির পথ ছুঁয়ে যাওয়া
কোন গ্রাম থেকে,
পাহাড় সাগর, মরু পেরিয়ে আজ যেন সবাই এসেছে
তোমার কাছে নালিশ জানাতে –
তোমাকে বলছে  সেই লাখো লাখো ক্লিষ্ট হৃদয়,
মুক্তির বাতাস বয়ে আনবার কথা,
তোমাকে বলছে, বন্দীত্বের অবসান করে,
স্বাধীন, মুক্ত বাতাসের সন্ধান দেবার কথা —
যা হয়তো তুমিই পারবে –
ভারী হয়ে যাওয়া হৃদয়ের আর্তি যেন অশ্রুর বাহিকা হয়ে নেমে আসতে চায় মাটিতে
ঝরে পড়তে চায় ঠিক তোমার পায়ের কাছে।।

আজ হাজারো কন্ঠে উচ্চারিত হয়ে যায় , “হে ঠাকুর পৃথিবী কে সুস্থ করে দাও “-
বিষাগ্নি নিভিয়ে অমৃতের সাগরে অবগাহন করিয়ে,
অতিমারীর বিষ, চিরতরে লুপ্ত করে দাও! ”
স্বপ্ন দেখছি এমন এক পঁচিশে বৈশাখের সকাল –
যে সকাল বয়ে আনবে আশার বার্তা,
প্রতিশ্রুতি জড়িয়ে থাকবে, তার সারাটি দিন আর রাতের গায়ে,
বিষহীন , মারীমুক্ত এক
নতুন ভোর নিয়ে আসবার প্রতিজ্ঞায়।।

 

 

Dr Nilanjan Chatterjee

কবি পরিচিতি : ডাঃ নীলাঞ্জন চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here