অনেক দিন বাদে বললে ভুল হবে অনেক বছর বাদে পড়াশুনা শেষ করে গ্রামের বাড়িতে ফিরছে অভি, কলকাতায় ফ্লাইট থেকে নেমেছে রাত দশটা তারপর অনেক কষ্টে ওলা বুক করে দেড় ঘন্টার জার্ণি করে গ্রামের শেষ প্রান্তরেখায় নামতে নামতে ঠিক বারোটা পনেরো।।বয়ষ্ক বাবা মা আর দিদিকে রাতে নিতে আসতে বারণ করে দিয়েছিলো অভি।।দিদির পাঠানো ছবি দেখে দেখে পাল্টাতে থাকা গ্রামকে চিনে নিতে তার অসুবিধা হবে না বলেছিলো।।হাঁটতে শুরু করে অভি, এখনো গ্রাম‍্য পথ পিচ হয়ে উঠে নি তবে কাদা মাখা বা ধুলো ওড়া রাস্তা নেই আর দুপাশের ক্ষেতে চিরে সোজা গ্রাম ঢুকে যাওয়া রাস্তার দুপাশে এখনো প্রচুর গাছ আর কিছু দূর অন্তর টিমটিমে বাল্ব জ্বলছে।।ঝিঁঝিপোকারা স্বাগত জানায় তাকে, কুকুরের দল অচেনা অতিথি দেখে স্পীকারের আওয়াজ দ্বিগুন করে দেয় বেশ লাগছে মাঠের শিরশিরে হাওয়া আর গ্রাম‍্য আকাশ ভরা তারার নির্জনতা মেখে হেঁটে যেতে।।ঝা চকচকে লন্ডনের রাস্তা আর সভ‍্যতার গতিতে ছুটে চলা জীবন কোথায় যেন এসে থমকে দাঁড়ায় মধ‍্যরাতের গ্রামের রাস্তায়।।প্রায় কুড়ি মিনিট হাঁটার পর বাড়ির কাছাকাছি এসে পড়তেই দূরের পোষ্টের আলোয় দেখতে পেলো একটা কুকুর দৌড়ে আসছে তার দিকে একটু ভয় পেলো অভি যদি তাড়া করে।।কুকুরটা কাছে এসেই লেজ নাড়তে শুরু করলো, বুকের উপর পা দিয়ে দাঁড়িয়ে গাল চাটতে শুরু করলো ভয়ে অভির  শরীর অবশ হয়ে আসতেই কুকুরটা নেমে চীৎকার করতে করতে ছুটতে লাগলো।।পথটা ঠিক এই জায়গায় দুভাগ হয়ে গেছে অনেক বছর বাদে রাতের অন্ধকারে ঠিক বুঝতে পারছিলো না অভি এইসময় বাবা আর দিদি টর্চ নিয়ে এগিয়ে আসতে ধরে প্রান এলো তার।।দিদিকে কুকুরের গল্পটা বলতেই দিদি বললো, লালুরে, বুড়ো হয়ে গেছে কিন্তু তোর গায়ের গন্ধে এতো বছর বাদেও তোকে ঠিক চিনতে পেরেছে।।কুকুর পোষা খুব শখ ছিলো অভির প্রথম কুকুরটা মারা যাবার পর এই কুকুরটাকে বন্ধুর বাড়ি থেকে নিয়ে এসেছিলো একদম বাচ্চা অবস্থায় ।।সে যে অনেক বছরের কথা, চেনা গন্ধটা লালু যেমন  এখনো ভোলেনি তেমনি অভিও চেনা গ্রামের গন্ধ শুঁকতে শুঁকতেই বাড়ি চলে এলো।।

কলমে মলয় দাস, কোন্নগর, হুগলি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here