ছায়া চিত্র

0
882

“কি হে? ” কথাটি ভেসে এলো পেছনে বাঁ দিক থেকে। পেছন ঘুরে চারি দিকে তাকিয়ে কাউকেই লক্ষ করতে পারলাম না। “এই দিকে…. ”  এবার আন্দাজ করে ঘুরে দেখি একটি ক্ষুদ্র মানুষ দাঁড়িয়ে আরেক প্রান্তে, আমার উল্টো দিকে। দূরে দাঁড়িয়ে আছে তাই ক্ষুদ্র লাগছিল। নাহ চিনতে পারলাম না দূর থেকে। সে আমায় হাত দেখিয়ে ইঙ্গিত করলো যে দাঁড়াতে। যখন সে এগিয়ে এসে আমার থেকে প্রায় ১০ হাত দূরে তখন তাকে চিনতে পারি। তার সন্দেহ ভরা চোখ গর্তের ভেতরে ঢুকে গেছে আর মুখে মুচকি হাসি। পরনে সাদা হাত কাটা পাঞ্জাবী তার সাথে ধুতি কুচি করে কোমরে গুঁজে রাখা।

“আরে প্রসাদ দা যে” বললাম আমি।
“হাঁ কেমন আছিস? আর বাবা মা কেমন?” প্রশ্ন করলো সে।
আমি একটু হেসে উত্তর দিলাম “আর এই চলেছে। তুমি?”
“ভালো আছি রে। কত বছর পর দেখা।”
“কিন্তু তুমি এখানে? এত সকালে?”
“হাঁ । ৫.৩০ বাজে। মা বললো এত দিন পর ফিরেছি তাই সকালে স্নান করে আসতে বললো ত্রিবেনী ঘাটে” হাত তুলে ঘড়ি দেখে বললো।
“তা বেস করেছো ”
” শোন ভাই একটা কাজ করতে পারবি আমার জন্য?”
আমি একটু অবাক হয়ে বললাম “হাঁ বলো ”
” একটা ভালো ছেলে জোগাড় করে দিতে পারবি যে আঁকতে পারে ভালো ”
” হাঁ তা পেলে বলব কিন্তু কি করবে? ”
” আমি তো খবরের কাগজ ছাপানোর কাজে কাজ করি সেখানে লাগবে। ভালো রোজগার এর ব্যবস্থাও হয়ে যাবে। ”
“ঠিকাছে আমি পেলে জানিয়ে দেবো।”
“আমার বাড়িতে এসে জানিয়ে দিস। মা বাবা কেও
নিয়ে আসবি”
সে বিদায় নিলো এই বলে। কিছুক্ষণ চেয়ে রইলাম তার দিকে তাকিয়ে দিয়ে সে ভিড়ের মধ্যে মিলিয়ে গ্যালো।
আমি গিয়ে ঘাটের এক কোণে বসে হাঁটু পর্যন্ত জলে পা টি ডুবিয়ে প্রকৃতির সুন্দরজো দেখতে লাগলাম।  জলের মাঝামাঝি ঘাটের কাছে কিছু ছেলে মেয়ে জলে নেবে খেলছে। তখন নাকে আসলো এক সুন্দর গন্ধ ভেসে— ধূপ ধূনোর পাশের মন্দির থেকে। সাথে আসলো ঘন্টার আওয়াজ। সামনে দৃষ্টি ফেলতে চোখে পড়লো এক অপূর্ব সুন্দর দৃশ্য। সূর্য উঠছে কিন্তু দেখে মনে হচ্ছে যেনো এই জ্বলন্ত সূর্য টি এই ঠান্ডা ঢেউ খেলানো জল থেকেই ভেসে বেরোচ্ছে।
দিয়ে আমিও উঠে বাড়ির পথে রওনা দিলাম।
বাড়ি গিয়ে খেয়ে বেরিয়ে পড়লাম আঁকার ছেলের খোঁজে। রাস্তাই শম্ভুর  চায়ের দোকান পরে সেখানেই আমাদের আড্ডার জন্য দেখা করা হয়। ভাবলাম সেখানেই পেয়ে যাব কোনো এক উপায়। পৌঁছে দেখি কেউ যে নেই।
বললাম আমি “শম্ভু দা চা দাও।” দিয়ে প্রশ্নটি করলাম  ” আচ্ছা সবাই কোথায়।”
উত্তর পেলাম “আয় নিকো আজ ওরা”
আওয়াজটি তার নাকের সুরে চলে।
তাকে ভাবছি প্রশ্ন টি করব নাকি দিয়ে বলে ফেললাম “আচ্ছা তোমার কোনো চেনা আঁকার ছেলে জানা আছে?”
“নাহ কিন্তু……. হাঁ পেয়েছি আরে ওকে চেনো তো? আরে এই সামনে বাড়ি যার ঘাটের দিকে”
“কার কথা বলছো একটু ঠিক করে বলোতো ”
” যার বোন মারা গেলো শেষ বছরে।”
তখন মাথায় এলো তার কথা কিন্তু দুঃখের সাথে। শেষ বছর তার বোন কোনো এক রোগ এ দেহ ত্যাগ করে। এক সময় নাম করা বড়ো লোক ছিল তারা কিন্তু কি ভাগ্য সবই হারালো। এখন গরিব , ৩ বছর আগে তারা সব সম্পত্তি হারায়। তাদের ভাইদের মধ্যে একজন বেআইনি ভাবে জমি ছিনিয়ে নিয়ে নেয়। তার দুই বছর পর তাদের মেয়ে মারা যায় শুধু বেঁচে আছে বাবা, মা ও ছেলে। যা হোক করে জীবন কেটে যাচ্ছে তাদের। এক বেলায় খাবার জোটে তো আর এক বেলায় জোটে না। কি দুর্ভাগ্য। ছেলেটি খুব ভালো আঁকতে পারে তাও আবার আলাদা এক চমৎকার বা জাদু ও বলতে পারেন তার সাথে। এবং সেই জাদু হল ছায়া চিত্র। নামটি শোনেনি আপনারা কিন্তুু এ নামকরণ আমি করেছি কারণ ছেলেটি কোনো এক  অজানা বেক্তির ছায়া দেখে তার ধরণের একটি ছবি সৃষ্টি করে ফেলে সে এঁকে । ঠিক করলাম সেই হল উপযুক্ত ব্যাক্তি। চা পান করা শেষ করে উঠে এবার রওনা দিলাম তার বাড়ির দিকে।
তার বাড়ি পৌঁছে দরজার করা নারী “ঠোক ঠোক ”
দরজা খুলে তার মা জিজ্ঞাসা করলো রাগ ও বিরক্তির সাথে “কি চাই?”
“সুরেশ আছে?”
“তার খবর নাই সকাল থেকে… কোন ঘাটে গিয়ে মরছে কে জানে। কোনো একটা কাজ ও তো করে না।” বলে দরজা আটকে  দিলো। আমিও কিছু বুঝলাম না কি করব। হাটতে লাগলাম ঘাটের দিকে। পৌঁছে তাকে দেখতে পাই ঘাটের ঠিক যেইখানে আমি বসেছিলাম সকালে সেখানে বসে।

“তোর জন্য ভালো খবর আছে “আমি বললাম।
সে পেছনে মুখ ফিরিয়ে দেখে নিয়ে অবাক ভাবে তাকিয়ে বললো ” কি? ”
” তোর আঁকার জন্য একটা কাজের বেবস্থা এসেছে”
“কিছুই বুঝছি না আমি”
“তুই চল আমার সাথে”

হেঁটে চলে গেলাম প্রসাদ দাদার বাড়িতে তাকে সঙ্গে নিয়ে। আমি পৌঁছে আলাপ করিয়ে দেই।  তাকে সব বোঝাতে বসি ক্ষণ  লাগেনি।  এবার সুরেশ এর মুখ হাসির প্রভাব পড়লো।
“আমি চোট করে বাড়ি গিয়ে খবর টি দিয়ে আসি” বললো সুরেশ খুশির সাথে।
ওর বিদায় নেওয়ার পর আমি প্রসাদ দা কে তার জাদুর কথা বললাম। শুনে তার চোখের ভুরু দুটো কুঁচকে গ্যালো অবাক এর সাথে।
সে বললো “তা হলে সেটার একবার পরীক্ষা  করে দেখতে হবে তো। ”
“হাঁ তা করতে আপত্তি কিসের ”
মুচকি হাসলো প্রসাদ দা। আমি বাড়ি গিয়ে দুপুরে খেয়ে ঘুমিয়ে উঠে চলে গেলাম ঘাটে। সেখানে পৌঁছে  সুরেশ এর সাথে দেখা হয় তার কিছু ক্ষণ পর দেখি প্রসাদ দা ও
এসে হাজির।
“কি চলছেন বন্ধু গণ” বললো প্রসাদ দা।
” আলোচনা কাজটা নিয়ে তোমার” বললো সুরেশ।
” আমারও একটা কাজ হলে ভালো হতো।” আমি বললাম।
“আমার সাথে যাবি? চেষ্টা করে দেখতে পারি। ” প্রসাদ দা বললো।
“কবে? কোথায়?” আমি বললাম।
“কাল কলকাতা। তা হলে আমি সুরেশ আর তুই যাব।”
আমি বললাম “তা হলে তো ভালো…. চলো কাল।”

যাওয়ার কথা আলোচনা করে সকালের ৭.৪৬ এর ট্রেনে রওনা দিলাম হাওড়া লোকাল এ । বসার স্থান ও পেয়েছি তিন জনা। কিন্তু আমি বসেছিলাম  জানালার ধারে প্রকৃতির দৃশ্য দেখার জন্য। কত সুন্দর সেই অভিজ্ঞতা তা আমি লেখা দিয়ে বর্ননা করতে পারবো না।
হাওড়া থেকে মোটর এ চেপে পৌঁছলাম তাদের ছাপানোর অফিস এ। বাইরে বড়ো বড়ো অক্ষরে লেখা “দ্যা ক্যালকাটা প্রিন্টিং অফিস”। ইংরেজি পড়তে ভালো পারিনা কিন্তু বাবা কলকাতা  যখন এসেছিল একবার তখন নিয়ে এনে দিয়েছিলো ইংরেজি অক্ষর চেনার ও শব্দ জানার বই। সেই থেকে শিখেছি।
ভেতরে প্রবেশ করলাম দেখলাম একটি লোক বাইরের ঘরে এর মধ্যে একটি টেবিল ও চেয়ার এ বসে কি লিখে যাচ্ছে আর বলছে” ধুর! ধুর! ধুর! যতো সব!! Illogical”
বলা শেষ করে চশমাটি নাক থেকে নিচু করে নামিয়ে তাকিয়ে  বললো “প্রসাদ  যে।”
প্রসাদ দা কিছু বলতে যাচ্ছিলো তাকে না বলতে দিয়ে সে বলে গ্যালো “আঁকার ছেলে পেয়েছিস কিন্তু আমি একটা বলেছিলাম তো।”
এবার পরেশ দা বলার সুযোগ পেলো। বললো “হাঁ এর মধ্যে এটি হল সুরেশ” সুরেশ এর দিকে হাত তুলে  আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো। দিয়ে বললো “এটি পুনিত” আবার সেই ভাবে কিন্তু আমার দিকে ইঙ্গিত করে বললো।
দিয়ে বললো “সুরেশ হচ্ছে আপনার আঁকার কাজের  জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং পুনিত এসেছে যেকোনো কাজ পাওয়ার জন্য ।”
দিয়ে আমাদের কে আলাপ করালো লোকটির সাথে তার নাম ” নিসাকান্ত.”  সেটি জানতে পারলাম।
লোকটি সুরেশ এর দিকে ইঙ্গিত করে বললো “কি কি রং করতে জানো?”
“আমি সব রকমের রং করতে জানি” বললো সুরেশ।
” লাইক? ” সাহেবরা যেই ভাবে ইংরেজি বলে সেই সুরে বললো তিনি।
” ক্ষমা করবেন বুঝতে পারলাম না” বললো সুরেশ লজ্জিত হয়ে।
“ঠিকাছে অসুবিধা নেই তাতে।  আমি বললাম যেমন কি কি জানো?”
“তুলি দিয়ে রং করা জানি, পেন্সিল দিয়ে রং করা জানি। ”
” বাহ তা বেস। দ্যাট’স  এনাফ। ওটাই যথেষ্ট” বলে সে একটি সিগারেট ধরালেন।
“থাকবে কোথায়?” প্রশ্ন টি করলো তিনি প্রসাদ দা কে।
” কেন আমার সাথে মেস এ”
“তা হলে কাল থেকে দুইজনকে নিয়ে চলে আসিস বাকি কথা কাল হবে আজ বিশ্রাম নে।.”
এটা শুনে আমরা বিদায় নিয়ে , গিয়ে উঠলাম একটি মেস এ যেখানে থাকে প্রসাদ দা। পরে জানতে পারি সেই স্থানটির নাম “সল্টলেক”। প্রসাদ দা আমার মা কে টেলিগ্রাম করে দিলো – – –

প্রিয় কাকিমা,
আপনি কথাটি জেনে খুব আনন্দিত হইবেন তাহাতে আমার কোনো সন্দেহ নাই। আপনার খোকার মাসিক 
রোজগারের ব্যবস্থা হইয়াছে। আপনি একটু দয়া করিয়া জানায় দেবেন সুরেশ এর মাতা কে যে তাহার খোকার ও 
চাকরির ব্যবস্থা হইয়াছে।

ইতি প্রসাদ দাস

আমরা খেয়ে ঘুমিয়ে বিকেলে একটু ঘুরতে বেড়ালাম। আমাদের গ্রামের জগৎ-এর থেকে পুরো সম্পূর্ন আলাদা। রাস্তা দিয়ে সবসময়ই ছুটে চলেছে টার্ম, মোটর, ইত্যাদি। সবাই ব্যস্ত এই জগৎ এ।
মেস এ ফিরি যখন ৭.৩০ বাজে ঘড়িতে। আমার আর সুরেশ এর বিছানায় শুয়ে ঘুম আসে না। মেঝেতে শুয়ে অভ্যস্ত।
খেয়ে উঠে নিচে শুয়ে পড়লাম। মাথার ওপর ঘুরে চলেছে বিদ্যুৎ পাখা যাকে ফ্যান বলা হয় ইংরেজিতে।
সকালে চোখে খুলে দেখি সূর্যের আলো জানালা দিয়ে ঘরে এসে পড়েছে। উঠে হায় তুলে বললাম “প্রসাদ দা” দেরি হয়ে গ্যালো তো।
“না রে কোনো অসুবিধা নেই। সবে  ৮টা বাজে। যা চান করে খেয়ে তৈরি হয়ে নে।” বললো প্রসাদ দা।
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি হাঁ ঠিক । বেশি দেরি হয়নি।
পরে জানলাম সুরেশ আগে উঠেছে সকালে চাকরি পাওয়ার খুশি তে।
তৈরি হয়ে গিয়ে পৌঁছলাম ছাপানোর অফিস এ।
“চলে এসেছিস?” বললো নিসাকান্ত বাবু।
সবাই এক সুরে বললাম ” হাঁ “।
আমাদের কে চেয়ার দেখিয়ে বসতে বললো। দিয়ে বললো নিসাকান্ত বাবু হাসি মুখে “শোনো সুরেশ ও পুনিত তোদের মাসিক মেইনে আপাততঃ ২০ টাকা প্রতি মাসে। তোমাদের কাজের ওপর সেটা বাড়বে।”
বলা শেষ করলো যখন নিসাকান্ত বাবু আমরা মাথা নারলাম হাঁ এর ইঙ্গিতে।
প্রসাদ দা বললো” স্যার একটা কথা বলার ছিল”
“কি?” ভুরু কুঁচকে বললো নিসাকান্ত বাবু।
“সুরেশ এর একটি বৈশিষ্ট আছে বা বলতে পারেন ও জাদু জানে কারণ ও কোনও মানুষের ছায়া দেখে ছবি আঁকতে পাড়ে । অনেকটি সেই মানুষের কাছাকাছি”
কথাটি শুনে সে অবাক হয়ে চেয়ে রইলো দিয়ে বললো “সত্যি নাকি? ঠাট্টা হচ্ছে? ”
” সত্যি!  এ নিজে বলেছে আমায়।”
“এটা যদি সত্যি হয় তা হলে খুব ইন্টারেস্টিং ম্যাটার তো! ওয়েট আমি আমার স্ত্রী কে ডেকে পরীক্ষা করে দেখব যদি ও সফল হয় তা হলে তোমার ভবিষ্যৎ আমি তৈরি করব এবং টাকাও দেবো সেই আঁকার পরিশ্রমের। পুরো ১০০ টাকা ”
সুরেশ চুপ করে রইলো বুঝলাম তার এরকম ভাবে ভাগ্য খুলবে কলকাতা এসে সে কল্পনা করতে পারেনি।
তার স্ত্রী কে ডেকে পাঠাতে সে ভেতরে একটি ঘরে রইলো বেরোতে বরণ করলো নিসাকান্ত বাবু।
নিসাকান্ত বাবু বললেন” কমলা ঘরে থেকো বেরিয়ে আসবে না। ঘরের ভেতরের বাতিটি জ্বালিয়ে দাও এবার ছেলেটি যেই ভাবে ঘুরে ঘুরে দাঁড়াতে বলবে দাঁড়িয়ে যেও।
সুরেশ এর কথা শুনে নিসাকান্ত বাবুর স্ত্রী যেই ভাবে ঘুরে ঘুরে দাড়িয়ে ছিল দেখে এক মুহূর্তের জন্য মনে হয়ে ছিল কাঠ পুতুল যেই ভাবে দরি দিয়ে ধরে নাচায় ঠিক তেমন। পুরো ছবি তৈরির করতে সুরেশ এর লাগলো ৪৫ মিনিট কিন্তু যখন তার স্ত্রী কে আমাদের সামনে এনে তুলনা করা হল ছবির সাথে তখন কিন্তু কোনো পার্থক্য বের করা কঠিন হয়ে পড়েছিলো। নিসাকান্ত বাবুর তো ছবিটি দেখে চোখ দুটি গোল কোনো সাদা মার্বেল পাথর জাতীয় পাথরের মত কিছু মুহূর্তে জন্য স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলো। সে এবং আমরাও অবাক সুরেশ বাদে। এ কেমন শক্তি এবং কোথায় পেয়েছে সে?  কি ভাবে? এই পৃথিবীতে কত ধরণের মানুষ বেঁচে আছে কত রকম আসা, ইচ্ছা নিয়ে এবং সবারই নিজস্ব একটি বৈশিষ্ট থাকে যেটা একজন কে অপরের সাথে তুলনা মূলক হয়ে দাঁড় করায় ।

নিসাকান্ত বাবু  বললো “অসাধারন। আমি যেরকম কথা দিয়েছিলাম সেটা করে দেখাব তোমায়। এই নাও তোমার ১০০ টাকা পারিশ্রমিক হিসেবে না এটি তোমার পুরস্কার… প্রাপ্ত পুরস্কার।” বলে পকেট থেকে টাকা বের করে দিলো তার হাতে।
সুরেশ আনন্দিত হয়েছে সেটা তার মুখ থেকে বুঝতে খুব একটা অসম্ভব বলে মনে হয়না আমার।
নিসাকান্ত বাবু ডাকলেন একটি লোককে ভেতর থেকে। বেরিয়ে যখন এলো লোকটি নিসাকান্ত বাবু বললেন” খবরের কাগজের হেড লাইন দিবি একটা বানিয়ে যে  ‘একটি ছেলের টালেন্ট নিয়ে যে মানুষের  ছায়া দেখে মানুষের ছবি আঁকতে পারে’ গুছিয়ে লিখবি”
তার পর নিসাকান্ত বাবু একটি কাগজের টুকরো তে লিখলেন “নাম- সুরেশ সিংহ, বয়স – ১৬, ঠিকানা – ত্রিবেনী ঘাট, হুগলি।” সাথে গুণ গুণ করে বলতে বলতে।
বললো মুচকি হেসে ” তোমার যা টালেন্ট আছে তা তে তোমার  এখানে কাজ করা তোমার জন্য সার্থক নয়। আজকে তোমরা  বাড়ি যাও কাল চমৎকার দেখবে।”
সুরেশ এত ক্ষণ কিছু বলেনি বুঝলাম সে অবাক যে এখানে এসে তার ভাগ্যের তালাটির চাবি খুঁজে পেয়েছে।
সুরেশ বললো “আমায় তুমি বলে লজ্জিত করবেন না বাবু”

 

 

 

কলমে অনিকেত বিশ্বাস

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here