অবিশ্বাসী আমি সেই সকল কাল্পনিক চরিত্রের প্রতি,
করে নত মাথা যাদের পদতলে মানুষ ব্যস্ত জীবনের প্রতিটি নিশ্বাসে।
মিথ্যা বিশ্বাসের বিভেদে, মানুষের বানানো ধর্মের ভীড়ে,
মিথ্যা নিয়মের নীচে পড়ে চাপা যুক্তিতর্কের অস্তিত্ব, অদূরেই।
সংস্কারের আদর্শ যেখানে হয় বিক্রিত ধর্মের বাজারে,
সেখানেও পায়নি খুঁজে ঈশ্বরকে কোনোদিন, তার পথ চেয়ে থাকা আর্তের হাহাকারে।
অনেকে রাখে তুষ্ট ঈশ্বরকে মেটাতে বৃহত্তর স্বার্থের স্বাদ,
তো কেও চায় ঈশ্বরকে পাশে কাটাতে সংসারের সামান্য অভাব।
তবুও পাইনি খুঁজে তাকে,
পাইনি খুঁজে আত্মহত্যা করা চাষির পরিবারে,
পাইনি খুঁজে দিনমজুরি করা শ্রমিকের অভাবের সংসারে,
পাইনি তাকে কাতর স্বরে চাওয়া ধর্ষিতা মেয়ের শেষ বিচারে।
যুগ যুগ ধরে চলা রাষ্ট্রের হাতে প্রতারিতদের ভাগ্য লেখেনি সে,
পাইনি খুঁজে তাকে যখন একলা শিশু যখন করে ব্যয় শ্রম গোটা পরিবারের মুখ চেয়ে,
খুঁজে পাইনি তাকে বুড়ো ভিখারির ক্ষুধার জ্বালায় অনিশ্চিত জীবন সংশয়ে।
ঈশ্বর যদি সকল মানুষকে সন্তানসম সমান ভালোবাসে,
তাহলে কীভাবে হয় একশ্রেনী শোষক , আরেকশ্রেনী শোষিত ভাগ্যের পরিহাসে।
সবাই বলে চেঁচিয়ে নাকি তাদের ধর্মের শেখানো ভালোবাসা প্রধান,
তর্কে জড়ালে ধর্মের আড়ালে ,তারায় আবার বোঝায় মানুষের চেয়ে ধর্ম মহান।
করলে অপমান কোনো ধর্মবিশ্বাস, আসে তেড়ে সকলে নাকি ধর্মরক্ষায়,
এতই দুর্বল নাকি তাদের আস্থা, এই সহজেই কি ভাঙার ভয়?
তাহলে কোনো মানুষ কীভাবে নেয় বেছে সেই বিশ্বাসে নিজের জীবনের আশ্রয়।
মন্দির মসজিদ গির্জা, ভাঙো কিমবা গড়ো, নেই তাতে আমার আগ্রহ,
কিন্তু যেদিন ধর্মের নামে করলে ধ্বংস নালন্দার মত হাজার শিক্ষাগৃহ,
সত্যই সেদিনে হয়েছিলো ঠুনকো তোমাদের আস্থার বিগ্রহ।
সকল ধর্মস্থান, ধর্মপ্রাণ আদর্শ হয়ে ওঠে অচেনা অপ্রয়োজনীয়,
যখন দেখি মানুষ মরে মানুষের হাতে,
সেখানে ঈশ্বরের নামের অস্তিত্ব হয়ে ওঠে সত্যই অসহনীয়।
কোনো ধর্মই শ্রেষ্ঠত্ব খুজিনা আমি, সবাই নিজের স্বার্থে বাঁচে,
যতই বলুক মহান নিজেদের, অপর ধর্মে ঠিক গাফিলতি খোঁজে।
কবি যখন লিখেছিলেন, ধর্মকারার প্রাচীরে হেনে আঘাত এই অভাগা দেশে জ্ঞ্যানের আলোক আনো,
ভাবেননি তিনি এই সত্য রয়ে যাবে কেবল কবিতায় গাঁথা, আসল আদর্শ অন্ধবিশ্বাসে চাপানো।
এ হৃদয়ে নেই ধর্মের ভয়, নেই জাতপাতের কোনো সংশয়,
বুঝি কেবল মানুষের ভালো অথবা খারাপ,
তাই বিশ্বাসের প্রতি প্রশ্ন হোক সকলের
গরিবের জীবনভর দুর্দশা ঠিক তার কত জনমের পাপ।
সে যদি নাই জানে তার পূর্বজন্মের স্মৃতি, কি করেছিলো সে ঠিক না ভুল,
তাহলে পাপপূণ্যের নামে কেন ঠকানো হয় তাদের,
কেন সারাজীবন ধরে গুনবে তারা বঞ্চিত অধিকারের মাশুল।
পৃথিবীতে হাজার ধর্মের নামে হাজার রকম প্রথা,
হাজার বিশ্বাসের ভীড়ে কেবল নিজেকেই তুষ্ট রাখার চেষ্টা।
যেখানে ধর্মের বেড়াজাল গড়েছে বারবার মানুষের সম্পর্কে বাধা,
সেখানে তবুও আমি দেখেছি , দেখতে চাই বারবার ,
মানুষ থাকুক মানুষের পাশে পেড়িয়ে হাজার ধর্মের মাথাব্যাথা।
ধর্ম খেয়ে ভরেনা পেট, জাত কি দেখা যায় চোখে,
ধর্মীয় রোষ গড়েছে প্রতিরোধ এক সুস্থ সমাজের সম্মুখে,
সঠিক শিক্ষা, সাথে যুক্তি ব্যয়
আনে জগত চেনার নতুন উপায়,
আঁধার হতে দেখো চেয়ে, বিভিন্নতার সৌন্দর্য্য কত এই ভেদাভেদ পেরিয়ে
হবে তৈরি এক নতুন সমাজ, চেতনায় গড়বো প্রতিরোধ সকল গোঁড়ামির বিরুদ্ধে,
বিশ্বাস থাকুক নাহয় তোমার অন্তরে, স্থান দিওনা তাকে উগ্রতারে আড়ালে,
দেখো ফুটবে কত নতুন কুড়ি সকল বাধা পেরিয়ে, এই সুস্থ সমাজের অন্তরালেই।
কলমে ঋতম সাহা
বিএসসি তৃতীয় বর্ষের ছাত্র, কল্যানী ইউনিভার্সিটি। পড়াশোনার সাথে সাথে পার্টটাইম কাজে কর্মরত। এছাড়া সক্রিয় বামরাজনীতির সাথে যুক্ত। এবং নিজেদের একটা সংস্থা আছে, যারা আর্থিক দিক দিয়ে পিছিয়ে পড়া ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়ায়, তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়। ভবিষ্যতে এইজাতীয় বিভিন্ন প্রকল্পটাকেই আরো দৃঢ় করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি । সাথে সিনেমা, ঘুরতে যাওয়া জীবনের অন্যতম নেশা।