কত আর বর্নমালার কাহিনী শুনাবো —
পলাশ শিমুলের রক্তমাখা বাংলা ভাষার যন্ত্রনার কথা কে বুঝে!
বাংলা একাডেমির চত্বর ঘেরা ভাষা শহীদের ভাষ্কর্য আজ অট্টহাসি দেয় অবিরাম
আলাদা হয়েছে ফাগুন মুখোস পড়া বইমেলায় পৃষ্ঠা উল্টানো এলোমেলো সংস্কৃতি।
কবি মাহবুবুল আলম কবর থেকে উঠে আসেন লাল পাঞ্জাবি গায়ে —
শান্ত শহরটায় মৃত্যু নীরবতায় মায়ের কোলে শিশু ঘুমায় না অনেকদিন হল।
স্বরবর্ন ব্যাঞ্জনবর্নেরা মাত্রা নিয়ে ছন্দ নিয়ে করছে নির্বিচারে মারামারি,
দিনে দুপুরে অভিজাত রাস্তায় যখন তখন পিষ্ট হয় বাংলা ব্যাকরনের নিয়মকানুন।
যে মেয়েটি প্রেমিকের বুকের আকাশ ছুয়ে লিখতে চেয়েছিল ভালবাসার ইতিহাস—-
সে এখন প্রতিদিন অন্ধকারে গিলে খায় ইংরেজি বাংলার অদ্ভুত পাচমিশালী শরবত।
কবিতা বল গান বল সব আজ বিচ্ছিন্ন মুল শহর থেকে —
সকাল বেলায় ছিনতাই হয়ে যাওয়া ভাষা রাতের অন্ধকারে যুবতীর কোমড় ধরে ডিস্কো ডিজে নাচে মাতাল নৈতিকতা ঘিরে।
বিষাক্ত বাতাসে অ এর অজগর দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে কৃত্রিম ক্যানভাসের ভেতরে,
রফিকের ছিন্ন বিচ্ছিন্ন মস্তিষ্ক এসে কাদে শহীদ মিনারে।
প্রভাত ফেরির নগ্ন পায়ের মিছিল বটতলার পিচ ঢালা রাস্তায় —
দ্রুতগামি কিছু অদ্ভুত উচ্চারনে বলাতকার হয় প্রকাশ্য দিবালোকে…।
দেখার কেউ নেই প্রতিবাদের কন্ঠ ও গেছে মরে
বাসন্তী অনুরাগ বল চারুকলার গান বল সব এখন
কেবলি জীর্ন বয়সী অস্তিত্বে ছুরিকাহত করে মৃত সব স্মৃতি নিয়ে —
সেই কবে নাকি বাহান্নের ২১ শে ফেব্রুয়ারি নেমেছিল মিছিলে ৮ ই ফাল্গুনে কোকিলের অস্থির কুহুতানে।
বিশ্বাস হয় কি!
পদ্মা মেঘনা যমুনা ফুসে উঠে রক্তের বন্যা বইয়ে দিয়েছিল ঢাকার এইখানে এই কৃষ্ণচুড়ার ছায়ায়,
রক্ত মাংসে একাকার শহীদ বেদী ভাংচুড় হয়ে গুড়িয়ে গেছিল অনিশ্চিত সব কালোরাতে।
সেই কলাভবন মেডিকেল ব্যারাক কিংবা সংলগ্ন স্থানে
তাই আজ এখানে কেউ আর ফাসির দাবি নিয়ে আসে না
কেউ বলে না আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো একুশ্র ফেব্রুয়ারি তুমি আস এখনি
অফিসের চিঠিতে উচ্চশিক্ষার বইয়ের পাতায় কিংবা আদালতের রায়ে।
আমরা আর বর্নমালার কর্কট রোগে অসহায় মায়ের কান্নাভেজা মুখ দেখতে চাই না৷
১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে হলেও ভাষা দিবসে বাংলার জয়গান গাইবই গাইব দেখে নিও।
[…] ভাষার গান […]