রতী পিসি নাকি খুব সাজবে, যাবে বিয়ে বাড়ি!
বললে হবে, পাঁচ গায়ে তার নাম আছে ভারী !
নিজের থেকে লোককে নিয়ে চিন্তা বেশি থাকে,
তাইতো সবার খোঁজ নেয় সে শত কাজের ফাঁকে।
এইতো সেদিন চ্যাটার্জীদের মেয়েটা রাতে ফিরছিলো,
রতী পিসির সেই বিষয়েও দারুণ চিন্তা হচ্ছিল।
চ্যাটার্জীবাবুকে গিয়ে বললেন তার চিন্তার কথা,
‘বিয়ের বয়স হয়ে গেছে, দেরি কেনো অযথা’?
গীন্নি’মা ও রাজি হলেন পিসির কথা শুনে,
মেয়ের স্বপ্ন- মেয়ের আশা, সে যাক জাহান্নামে।
পাখীর অজান্তে শুরু হলো পাত্রের সন্ধান,
ওদিকে পাখী স্বপ্ন দেখছে জমিন – আসমান ।
স্বপ্ন তার বড়ো হাওয়ার , প্রতিষ্ঠা আর সম্মানের,
সকলের পাশে দাঁড়ানোর আর সমাজ কল্যাণের।
স্বপ্ন, সকল জটিলতাকে কাটিয়ে ওঠার আশায়,
স্বপ্ন, যা তাকে প্রতি মুহূর্তে আবার বাঁচতে শেখায়।
রতী পিসিও এসব জানে, বাবা – মাও জানেন ,
তবে তাদের চিন্তা নাকি মেয়ের সম্মানের !
অবশেষে মেয়ের কাছে বলল সে সব কথা,
মেয়ে মুখ খুললেও ,তার শব্দ গেল বৃথা।
ঠিক হলো দিন আশীর্বাদের ,বিয়ের দিনও এসে গেলো,
পাখীর দেখা স্বপ্ন গুলো চোখের জলে ভেসে গেলো।
রতী পিসির ভালোই খাতির ঘটক বলে কথা!
পাখিও এবার চোখ মুছলো, ভাঙলো নীরবতা।
ধরলো কলম লিখলো চিঠি প্রেমিকের নাম করে,
অতি যত্নে তা পাঠিয়ে দিল পাত্রপক্ষের ঘরে।
পাত্রের বাবা অগ্নিশর্মা রুদ্ধশ্বাসে এলো,
রতী পিসিও বাকি থাকে কেন, সেও সঙ্গ দিল,
চ্যাটার্জী বাবুও রেগে গিয়ে শোনালো কুকথা,
মেয়ের প্রতি রাগে মায়ের ভরে উঠলো ব্যথা।
স্বপ্নের জন্য আসল লড়াই শুরু হলো এবার,
শান্তভাবে নিজের কথা রাখলো মাঝে সবার।
জানালো সে তার ইচ্ছা আর প্রতিষ্ঠার কথা,
মেয়ে হয়ে জন্মালে কি স্বপ্ন দেখা বৃথা ?
অধীনতার গন্ডিতে কেন মেয়েদের বাধা হয়?
দেশ যদি স্বাধীন তবে মেয়েদের স্বপ্ন কেন নয়?
রতী পিসিরা কেন সমাজকে এভাবে চালিত করে?
বাড়ির লোকও সব ভুলে গিয়ে ভিড়ে যায় তার দলে!
মেয়ের স্বপ্ন বাবার কাছে সবকিছু যদি হয়,
তবে কেন তারা সময়ের সাথে এভাবে বদলে যায়?
বাবা মাও চোখ মুছলো, বুঝলো মেয়ের কথা,
রতী পিসিরও ব্যর্থ হলো সাজগোজের আশা!
পাখির চোখ আজ ঝাপসা হলেও স্বপ্নগুলো স্পষ্ট,
বুঝলো পাখি ,চেষ্টা করলে বদলায় অদৃষ্ট।।
_____
কলমে বর্ণালী দাস, বৈদ্যপাড়া বৈদ্যবাটি, হুগলী
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক। ইতিহাস পড়াকালীনই নিজের চিন্তাধারা প্রকাশের মাধ্যম হিসাবে কবিতা লেখাকে নিজের সঙ্গী করে নিই ।
Warning: Attempt to read property "roles" on bool in /home3/weavesdi/public_html/www.monomousumi.com/bengali/wp-content/themes/morenews/inc/template-functions.php on line 941
