আরো হোক কাজ,হোক রেললাইনের তদারকি,তবেই না ট্রেন ছুটবে ঠিকঠাক ,ভালো ভাবে! কিন্তু তা বলে এত গেরো ! আজ্ঞে,আমি বলছি বর্ধমান রামপুরহাট লুপ লাইনে যাত্রীদের ভোগান্তির কথা।
বর্ধমান থেকে খানা জংশন পার করে একটা লাইন চলে গেছে দুর্গাপুর, আসানসোল হয়ে ,মোগলসরাই ,দিল্লি। আরেকটি লাইন অপরূপ প্রকৃতির শোভা সাক্ষী রেখে রাঙা মাটির রূপ রস গন্ধ মেখে লুপ লাইন নামে।কিন্তু কেমন জানি একটা বঞ্চনার গন্ধ এই লাইনে,রেলের না জানি সৎ ছেলের মতো অবস্থান। এই লুপ লাইনের রেল পথ আপনাকে পৌঁছে দেবে উত্তরবঙ্গ সহ উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোর দোরগোড়ায় । সুতরাং বুঝতেই পারছেন এই রেল পথের গুরুত্ব,কিন্তু কি দেখছি আমরা ? বাস্তব কি বলছে!পরিষেবা তথৈবচ বছরের পর বছর,মাসের পর মাস,কিন্তু ওই হচ্ছে হবে ভাব।
এত বছর ধরে এই লাইনের স্টেশন গুলি ছিল বঞ্চনার সাক্ষী গায়ে মেখে,না ছিল কোনো সিঁড়ি,না ওভার ব্রিজ,না পানীয় জল,যাত্রী শেড।বছর খানেক হলো আধুনিকতার ছোঁয়ায় অল্প হলেও সেজে উঠেছে এই ঝাপটের ঢাল,পিচকুড়ি,নোয়াদার ঢাল,ভেদিয়া,কোপাই প্রভৃতি স্টেশণ সমূহ।কিন্তু রেল পরিষেবার হাল অত্যন্ত খারাপ।
দু পাশে বিস্তৃর্ণ ধূ ধু মাঠ পেরিয়ে গাছ গাছালির লাল মাটির মেঠো পথ ধরে অতি সাধারণ অধিবাসী সম্প্রদায়,খেটে খাওয়া শ্রেণীর প্যাসেঞ্জার,সাঁওতাল রমণীর মাথায় বোঝা ও বাচ্ছা কাঁখের দৃশ্য আজও বড় চেনা দৃশ্য।না আছে স্টেশনে বাথরুম ঠিক ঠাক,লাল নোংরা পানীয় জল খেলে আর ঘুরে দাঁড়াতে হবে না।
সারা বছর ধরে কাজ লেগেই আছে শান্তিনিকেতন স্টেশন জুড়ে,টেন্ডার সহ ভাঙাগড়ার খেলা কিন্তু যোগাযোগের অন্যতম ভরসার ট্রেনযাত্রা আছে সেই তিমিরেই ।ডিজেল ইঞ্জিন পাল্টে ইলেকট্রিক লাইন এলো নিত্যযাত্রী সহ এই তামাম অঞ্চলের সকল শ্রেণীর মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে।
ছয় মাস অতিক্রান্ত হলো,ইলেকট্রিক লাইনের সুফল বাড়লো না, শুধু শুনে গেলাম হবে,আসবে নতুন নতুন লোকাল ট্রেন। কানাকানি খবরে শুনলাম ট্রেনিং নিতে গেছে স্টাফেরা। নতুন ইন্জিন আসছে একঝাঁক পরিষেবা নিয়ে। কিন্তু বছর ঘুরে গেল একটা দিনও নিশ্চিন্তে যাত্রা হলো না। এত মানুষের লাইফ লাইন ,বীরভূম থেকে কলকাতা,উত্তর বঙ্গ, এতো গুলো রাজ্যের মানুষ গুলোর সঙ্গে সংযোগ সুষ্ঠ পরিকল্পনার এভাবে আজও মুখ থুবড়ে। না পেয়ে পেয়ে বঞ্চিত মানুষ গুলোর প্রতিবাদের ভাষা হারিয়ে গেছে আদতে।আবার এখন অক্টোবরের শুরুর দিন থেকে একসাথে এতগুলো ট্রেন বাতিল জানিনা এই উৎসবের মরসুমে যে পরিমান কষ্ট যাত্রীদের দিচ্ছে এই ভরসার লুপ লাইন তার পাঁচ শতাংশ উর্ধতন কর্তৃপক্ষ ভেবেছেন কিনা। পরিকল্পকদের অপেক্ষায় দিন যাপন করছি এই নিয়ে এক দুবার নয়,বহু বার।এই বুঝি সাধের দুরন্ত গতি নিয়ে লুপ লাইন ফিরবে সুখবর নিয়ে, হাসি ফোটাবে আমাদের।
পরিচিতি: ছোটবেলা থেকেই কবিতা,ছড়া, সৃজনশীলতার ওপর আত্মিক টান বর্ধমান শহর নিবাসী রাণা চ্যাটার্জীর।প্রতিভা,সারল্যের মেলবন্ধন ও অনুভূতিপ্রবণতায় অবিরাম সৃষ্টি করে চলেছেন কবিতা,ছোটগল্প,বাচ্ছাদের জন্য ছড়া, নিবন্ধ,কার্টুন। নক্ষত্রানি সম্মান,কবির “মেঘ বালিকা তোমায়”,”ছন্দ ছড়ায় জীবন” কাব্যগ্রন্থ ও নিয়মিত পত্র পত্রিকায় লেখা প্রকাশ রাণা চ্যাটার্জী’র আগামী উজ্জ্বল করুক।
লেখকের আরো লেখা পড়তে ক্লিক করুন "বনধ-অবরোধ" "পরকীয়া" "শ্রীমতির গল্প" "অথঃ-যাত্রী-কথা"
[…] আরো লেখা পড়তে ক্লিক করুন "দুর্ভোগের-লুপ-লাইন" "বনধ-অবরোধ" "পরকীয়া" "শ্রীমতির গল্প" […]
[…] আরো লেখা পড়তে ক্লিক করুন "পুজোর-গন্ধ" "দুর্ভোগের-লুপ-লাইন" "বনধ-অবরোধ" "পরকীয়া" "শ্রীমতির গল্প" […]