আমরা স্বাধীনতা পাইনি,
পেয়েছি বিড়ম্বনা অসহিষ্ণুতা
প্রতিদিন প্রতিক্ষন।
রক্তাক্ত হতে হয়
প্রতিদিনের অবক্ষয়ে,
আজ বড়ো বিবর্ণ
এই তেরঙ্গা-
লাঞ্চিত, ধর্ষিত
অবহেলিত আমাদেরই
কাছে।
যাঁরা হয়েছিলেন রক্তস্নাতা
স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখে
আমরা হয়েছি বিস্মৃত
বহুদিন আগে।
এটাই নাকি স্বাধীনতা?
চলছে যেটা আজকাল,
লিভ টুগেদার ,মল কালচার
জন্মদাত্রী এখন বৃদ্ধাশ্রমে
মানবিকতা গেছে কমে।
সেকূলারিজ্ম ধর্মান্ধতা
নারীপাচার দেহব্যবসা
এটাই নাকি স্বাধীনতা!
কেমন করে ভুলতে পারি?
বাঘাযতীন মাষ্টার দারে?
কেমন করে ভুলবো বলো
বি বা দি ভাগ যাদের নামে?
বছরের এই একটা দিনে
তাঁদের আবার পড়ে মনে!
আমরা নাকি ভারতবাসী!
দেখে শুনে পাচ্ছে হাসি,
প্রতিদিনই মরছে এখন
গরীব কৃষক বেকাররা
সব।
অন্ধকারে চুপিসারে ভীষণ ভাবে
গুমড়ে মরে।
স্মৃতি মন্হন বিষাদ ভারি
একটু পরে উঠবে যখন
মদের খুরি হাতের পরে
কিন্নরী আর অপ্সরা সব
নাচবে দেখো ভূবন জুড়ে।
ওপরে ঐ তেরঙ্গাটা
ওপর থেকে
দেখছে সবই!
একটু পরেই উৎসব
শুরু হবে,
পতাকা ওড়ানোর প্রতিযোগিতা-
কোনওটা ভীষণ দামী,
কোনওটা বা ফ্যকাসে
রক্তশূন্যতায় ভোগা-
আমাদেরই মানসিকতার
মতো।
আজ সন্ধ্যায় এখানে ওখানে
একটা বিতর্ক সভার আয়োজন
করা হয়েছে।
বড়ো সুন্দর নামটা
“স্বাধীনতা তুমি কার”
তুমি কি সেই সাত
বছরের ছেলেটার?
যাকে সকালে যেতে
হয় চোখ মুছতে মুছতে
একহাতে হাফপ্যান্টের
দড়িতে নিজের স্বপ্নকে
বেচে পরিবারের ভরণ
পোষণ করতে?
সৌজন্যে আমাদের স্বাধীনতা!
হয়তো বা আজ রাতে
কোনও এক সপ্তোদশীকে
দেখা যাবে রাতের ঝলমলে
আলোতে নিজেকে যাচাই
করতে!
সৌজন্যে সেই স্বাধীনতা!
শিক্ষা এখানে গান্ধী
নোটের মতই
স্বপ্নের বেচাকেনা
এলিট শ্রেণীর হাতে
রক্ত এখানে ডলারের
মতো,
স্বাধীনতা তুমি রক্তের
চেয়েও দামী?
উৎসব এটা তোমাদের
কাছে আমাদের কি আছে?
তোমরা চিরদিন চেয়েছ
পেয়েছ আমরা আঁস্তাকুড়ে!
আজকের এই ভরা সন্ধ্যায়
গজল -ই মজলিস হবে,
রঙীন জলের ফোয়ারা
ছুটিয়ে স্বাধীনতা নিলাম
হবে।
সেই সন্ধ্যায় কোনোও
একদিকে বারুদের গন্ধে
ঢেকে যাবে বায়ু
আকাশটা যাবে কালো
হয়ে।
কোনও শহীদের রক্তে
ভিজবে আমার দেশের মাটি!
স্বাধীনতা তুমি উৎসব কেন?
প্রশ্ন জাগে মনে,
যেখানে এখনও বিউগল
বাজে পতাকা জড়িয়ে দেহে।
স্বাধীনতা তুমি পণ্য হয়েছ
বিকিয়েছ পথে ঘাটে,
বড়ো অসহায় আমি
শুধু কবিতায় বলি
আর কিছু নাহি পারি।।
—প্রবীর ভদ্র
প্রবীর ভদ্র এর কলম থেকে “লেখা আমার পেশা নয়, আমার নেশা।
আমার আবেগতাড়িত মন ভাসিয়ে নিয়ে যায় আমাকে শব্দ ছন্দের দোলায়।
মানুষের মনের অন্দরমহলে প্রবেশ করার ও তাঁদের অনুভূতি অনুভব করার একটা ক্ষুদ্র প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছি।”
প্রবীর ভদ্র এর আরো লেখা পড়তে ক্লিক করুন ফাউন্টেন-পেন লজ্জা
[…] ভদ্র এর আরো লেখা পড়তে ক্লিক করুন স্বাধীনতা-যখন-পণ্য […]