<< জাপান পর্ব ৪ ১২য় মার্চ থেকে ১৮ই মার্চ ,২০১৮
একটা অদ্ভুত সুন্দর গন্ধ ।প্রথম প্রথম ভেবেছিলাম হয়তো কোনো নির্দিষ্ট জায়গাতে এই সুগন্ধ ,পরে অনুভব করি, মেয়ের স্কুল ,বাস,ট্রেন,জাপানীস দোকান বা সার্বজনীন স্থান সর্বত্র ছাড়িয়ে ছিটিয়ে এই গন্ধ।জাপানীস গন্ধ।এখন আমি যেখানে যে দেশেই থাকিনা কেন, কোনো জাপানীস পাশে দাঁড়ালে , না দেখে ঘ্রানে বলতে পারবো সে জাপানীস। কোনো উগ্রতা নেই , মিষ্টি মিষ্টি গন্ধ। আমার ভালো লাগার গন্ধ।
রোজকার রুটিনে সাইকেল নিয়ে মেয়েকে স্কুল থেকে আনা,বেশ মজা লাগে। মেয়েকে বাইকে বসিয়ে অনেক ঘুরেছি কিন্তু সাইকেল এ এতো সুন্দর রাস্তা দিয়ে গল্প করতে করতে,কন্যার সারাদিনের স্কুলের রুটিন শুনতে বেশ ভালো লাগে। কোনো দিন বাবির ভালো লাগে স্কুল, কোনোদিন মন্দ(যেদিন সে কারোর সাথে ভাব প্রকাশ করে উঠতে পারেনা).রাস্তা দিয়ে আসতে যেতে প্রায় দেখা হয়, স্কুলের কিছু চেনা মুখের সাথে। ছোট বাচ্চা গুলো কি মিষ্টি!! বাবিকে আধ্যা চা বলে ডাকে। একদিন এরকমই রাস্তায় হেঁটে আসার পথে কেউ একজন আধ্যা আধ্যা চা বলে ডেকেছিল অনেকক্ষন।কান কে বিশ্বাস করিনি,তাই পেছন ফিরি নি। অনেক পরে যখন বুঝতে পারি,তখন সে অনেক দূরে।
মেয়ে কে বেবিসিট্ এ বসিয়ে ঘুরে বেড়ানো |
মজা লাগে এখানে দোকানে গিয়ে নিত্য নতুন জাপানীস জিনিস ব্যবহার করে দেখতে। সব থেকে মজা হলো,খুব পরিচিত জিনিস জাপানীস মোড়কে, হে হে ,সামনে প্রয়োজনের জিনিস থাকা সত্বেও খুঁজে বেড়ায়।এরকম এ শাক কেনার প্রচেষ্টায়,দুবার,পালংশাক ভেবে দুটো অন্য ধরণের শাক কিনে এছেছিলাম দু দিন। একটা বড্ডো মিষ্টি,একটা ঠিক ঠাক।এখন সেই ঠিক ঠাক শাকটা আমাদের জাপানীস পালং শাক। সেটাকে মায়ের মতো করে বেশ কুমড়ো,মুলো ,বেগুন,বড়ি দিয়ে লাবড়া বানাই। সপ্তাহের একদিনের খাদ্যতালিকায় তাকে নথিভুক্ত করেছি।
এখন অনেক দোকান পরিচিত ,রাস্তাও কিছুটা বোধগম্য। আগেও বলেছি, জাপান বড্ডো ব্যয়বহুল দেশ. শুনেছিলাম এই দেশে,টোকিও সব থেকে ব্যয়বহুল শহর ,কিন্তু এক পরিচিত বাংলাদেশির কাছে জানলাম, কিয়োটো নাকি টোকিও র থেকেও ব্যয়বহুল, কারণ, টোকিও তে কেউ চাইলে সস্তাতে বাঁচতে পারে, এখানে তার উপায় নেই। এখনো পর্যন্ত আমার বিশ্লেষণ বলে,যদিও জাপানীস ১০০ ইয়েন ভারতীয় টাকার ৬০ এর সমান, কিন্তু, আমাদের দেশে ৫-১০ টাকাতে যে জিনিসগুলো খুব সহজলভ্য,তা এখানে ১০৮ থেকে ১১৫ এর মধ্যে vary করে।সে একটা বাচ্চার ললিপপ,চিপস বা চিকলেট(যা ছাড়া আমার দিন কাটে না)হোক না কেন তার নূন্যতম মূল্য ১১০।মানে এদের অর্থনীতির নূন্যতম মূল্য মনে হয় ১১০। হাহা। তাহলে বুঝতেই পারা যায় ,বাঙালির সচ্ছল সংসার চালাতে কি না নাজেহাল অবস্থা আমাদের।প্রথম প্রথম একটু আশ্চর্য যে হয়নি তা নয়,তবে এখন সয়ে গেছে।বেশ ভালো ভাবেই সয়ে গেছে।
আগে বলেছি এই শহরের ট্রাফিক আইন এর কথা ,আর তা মেনে চলার মানসিকতা পূর্ণ মানুষগুলোর কথা।আরো ও একটা জিনিস খেয়াল করার মতো,আধুনিকতা,যেমন ধরুন ,রাস্তায় ট্রাফিক নেই(গাড়ি),আর সিগন্যাল লাল হয়ে বসে আছে ,সেই সময় অনেককে দেখেছি সিগন্যাল লাগোয়া ল্যাম্পপোস্টে একটা বোতাম টিপে দিতে। আর মুহূর্তে লাল সিগন্যাল সবুজ।আধুনিকতা শুধু প্রযুক্তিতে নয়,মন-মানসিকতা-ব্যবহারেও। আমার আসেপাশে না হলেও ছোট মোটো ৫-৬ টা ফুড মল। আপনি যেখানে যান আর যাই কিনুন বা না কিনুন, কর্মচারীদের ব্যবহার সত্যি মন ছুঁয়ে যাই। সর্বদা ধন্যবাদে আর হাসি মুখে মাথা নত তে কথা শুরু আর কথা শেষ। Gozaimasu ございます কথাটি এদের আনুষ্ঠানিকতা বোঝাতে ,ধন্যবাদান্তে,সবসময় হাসিতে সবার মুখে।
এই সেই সিগন্যাল এর পশে থাকা বোতাম , যার ট্রান্সলেশন এখনো আমি করে উঠতে সময় পাইনি ,তবে এটি শীগ্র করবো |
এই সপ্তাহে আমরা ভেবেছিলাম কাছে পিঠে কোথাও যাবো। ভেবে তো ছিলাম, কিন্তু কোথায় যাবো সে নিয়ে ভাবার অবকাশ আমরা যাওয়ার কিছু সময় আগেই পায় , (এটা কোনো নতুন ব্যাপার নয় ,আমাদের এরকম এ হয় )।গতসপ্তাহে আসিফ ছিল তাই যাতায়াত নিয়ে এত ভাবিনি। এবার ভাবার পালা। যথারীতি দুপুর ১২:৩০ এ সব ব্যাগপ্যাক করে বেরিয়ে পড়লাম।গন্তব্য ,যেটা পথে আগে আসে ,বিশেষতঃ ওয়ার্ল্ড হেরিটেজই লক্ষ্য। আগের দিন যে বাসস্ট্যান্ড এ গেছিলাম সেখানেই পৌছালাম। অনেক ভাবনার পর ৫ নম্বর চড়ে বসলাম।
GPS on Busstand |
৫ নম্বর বাসস্ট্যান্ড |
সেদিন চোখ পড়লো ,ভাড়া বিশেষ লেখাটির ওপর , যা আগেও পড়েছিল , কিন্তু পুরো পড়িনি। হ্যাঁ , ৬ বছরের ঊর্ধে টিকিট লাগবে।আমরা শুনেছিলাম একদিনে পাস বলে কিছু একটা আছে , কিন্তু কি সেটা আর কোথায় পাবো সে নিয়ে দ্বন্ধ ছিল। আগের দিন যেটুকু নজর এড়িয়ে গেছিলো , সেগুলো সব দেখতে থাকলাম। দেখলাম, বাস ড্রাইভার এর পাশে যে অটোমেটেড বাক্স আছে যাতে টাকা বা coin যেমন ফেলা যায় , তেমন বিশেষ কিছু কার্ড কেও সে সনাক্ত করতে পারে। অনেকেই দেখছিলাম পাস (Pass /Card ) ওই বক্সের সামনে দেখিয়ে নেমে যেতে ,সম্ভবতঃ মাইক্রো চিপ লাগানো। আরো দেখলাম , টাকা ফেললে ,ড্রাইভার দেখতে পাচ্ছে ,যে কে কত টাকা ফেললো , একটা display ছিল বক্সের ওপরে। দেশটা যেন কেমন মেশিন পরিচালনা করা। মানুষ এর থেকে এরা মেশিন আর techonology তে বেশি বিশ্বাস করে।
একদিনের বাস পাস্ |
৫ নম্বর বাস আর তার ঘোষণা , যেই না গিনকাকুজি বলেছে , আমরা একে ওপরের মুখ চাওচাইয়ি করে এগিয়ে গেলাম সামনের গেটের দিকে। ভাস্কর ড্রাইভার কে বোঝাতে সক্ষম হলো যে আমরা সারাদিনে বাস পাস চাই। পেলাম দুজনে বাসপাস সারাদিনের (সিটি বাস – টুরিস্ট বাস এ যত ইচ্ছে আসা যাওয়া করতে পারো সেই দিনের জন্য ), দাম ১২০০ ইয়েন। যাক , একটা কাজ তো হলো। এবার নেমে ,পাশের গালি ধরে চড়াই ,৫ মিনিট হেঁটে। রাস্তায় চোখে পড়লো , কিছু জাপানীস রেস্টুরেন্ট এর খাবার তালিকা আর diplay , ঝা চকচকে দুটো তিনটে লাল রঙের রিক্সা। হ্যাঁ রিকশাও চড়তে পারেন, কতক্ষন? খেয়াল করিনি, দাম টা !!!বাপরে !! ৪০০০ ইয়েন। আমার কলকাতায় ভালো।
জাপানীস খাবারের display |
রিক্সা ভাড়া |
দুপাশ দিয়ে অনেক দোকান , খাবারের আর জাপানীস জিনিসপত্রের (টুরিস্ট specific)।
গিনকাকুজি মানে রুপোলি পটমণ্ডপ বা Silver Pavlion 銀閣寺 .ভেতরে ঢোকার রাস্তাটাই মনকাড়া। এখানে মাটির দেখা নেই। যেখানেই যাচ্ছি ,হয় সাদা বালি বা পাথরের রাস্তা। প্রবেশ মূল্য ৫০০ ইয়েন মাথা পিছু। ভেতরের বর্ণনা ঠিক ভাষায় বলার অতীত। ওই যে বললাম মাটি নেই,কিন্তু তাতে কি,মাটি ছাড়াই, মানে সাদা বালি বা পাথর দিয়ে কত কারুকার্য।এই গ্রাউন্ডকে বলে কাননন্দেন Kannonden (Kannon Hall)। একজন ব্যক্তিকে দেখলাম ও নকশাগুলো হাত দিয়ে করতে।জাপানে এসে Ginkakuji দেখবেন না ,তা হয়না , এটা এমনি বিখ্যাত টুরিস্ট স্পট কিয়োটো ,জাপানের।
ঢোকার রাস্তা |
প্রবেশ টিকিট: ৫০০ ইয়েন মাথা পিছু |
এবার একটু ছোট্ট করে বলে ফেলি Ginkakuji র ইতিহাস আর ভূগোল।
Ginkakuji Temple (Silver Pavilion)
—————————————————————————————————–
গিনকাকুজি (銀 閣 寺, সিলভার প্যাভিলিয়ন) কিয়োটো প্রাচ্যের পাহাড়ের (হুশিশিমা) একটি জেন মন্দির। 148২ সালে, শোগুন অশিকগা ইওসিমাস আজকের মন্দিরের ভিত্তিতে তার অবসর ভিলাটি নির্মাণ করেন .আজ, গিনকাকুজি সিলভার প্যাভিলিয়ন, অর্ধ ডজন বর্গা মন্দিরে বিল্ডিং, একটি সুন্দর শসা বাগান এবং একটি অনন্য শুষ্ক বালি বাগান। এটা তার স্থল কাছাকাছি একটি বৃত্তাকার রুট বরাবর হাঁটা দ্বারা উপভোগ করা হয়, যা থেকে বাগান এবং বাড়ী দেখা যায়।সিলভার প্যাভিলিয়নের প্রথম দৃষ্টিতে মাটিতে প্রবেশ করার পরে শর্ট পরিদর্শন করা যেতে পারে। আনুষ্ঠানিকভাবে কাননডেন (কানন হল) নামক দুটি স্তরের দুটি পৃথক স্থাপত্য শৈলীর মধ্যে নির্মিত এবং কানন মূর্তি রয়েছে, রহমত বৌদ্ধ দেবী। তবে, ভবনটির অভ্যন্তরভাগটি জনসাধারণের কাছে উন্মুক্ত নয়।
কেন এই নাম ? এর এই নাম সত্ত্বেও, সিলভার ভিলিয়ন কখনো রূপালী রূপে আচ্ছাদিত হয়নি। এর পরিবর্তে, এটি বিশ্বাস করা হয় যে গোল্ডেন প্যাভিলিয়নের সাথে এর বিপরীতে ভবনটি নির্মাণের পর নামটি একটি শতাব্দীরও বেশি সময় আগে একটি ডাকনাম হিসাবে উঠেছিল। বিকল্পভাবে, এটি ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে চাঁদের আলো বিল্ডিংয়ের গাঢ় রং কে (যা অতীতে কালো বার্ণিশে আবৃত করা হতো) প্রতিফলিত করেছিল, যা একটি রূপালি চেহারার রূপ নেয় ।
রাস্তা বরাবর পরবর্তী একটি প্রশস্ত, নিখুঁত বায়ু শুকনো বালি বাগান, “সান্ডার স্যান্ড স্যান্ডের” নামে পরিচিত, যার নাম “চাঁদ দেখার প্ল্যাটফর্ম” . এটি একটি বৃহদায়তন বালি শঙ্কু। বাগানটি ছাড়াও হন্ডো (প্রধান হল), যা তার স্লাইডিং দরজা (ফুসুমা) উপর পেইন্টিং প্রদর্শন করে, কিন্তু প্রবেশ করা যাবে না।
হন্ডোর পাশে ডানদিকে টোগুদো, টোগুদোটি একটি স্টাডি রুম ,যেটি সাধারণত জনসাধারণের জন্য খোলা হয় না।টুগডোর পাশ দিয়ে যাওয়ার পর, হাঁটা পথটি দর্শকদের গিনকাকুজি এর ঢালাই বাগানের কাছে নিয়ে যায়, যা দ্বীপ ও সেতু, সামান্য প্রবাহ ও বিভিন্ন গাছপালা দিয়ে পুকুর দেখায়। পথগুলি ঐতিহাসিক ভবনগুলির পিছনে একটি পাহাড়ে উঠেছে, যেখানে পুরো মন্দিরের স্থানের সুন্দর দৃশ্য এবং শহর অতিক্রম করে।
দর্শকদের প্রয়োজনীয় তথ্য :
দর্শকদের জন্য সময়: 8:30AM–5PM
প্রবেশ মূল্য :500 Yen
কি করে পৌঁছবেন গিনকাকুজি সরাসরি বাসের নম্বর 5, 17 বা 100 কিয়োটো স্টেশন থেকে প্রায় 35-40 মিনিটের মধ্যে অথবা ৫ নম্বর বাস ধরে ৫ মিনিট সুগাকুইন বাস স্টপ থেকে । বিকল্পভাবে, আপনি প্রায় 30-45 মিনিটের মধ্যে নেনজেনজি (এটিকে একটি অসাধারণ মন্দির ,যার কথায় পরে আসবো ) থেকে ফিলোসফার্স পা দিয়ে পা দিয়ে গিনকাকুজি পৌঁছতে পারেন।
গাড়ী পার্কিং: পাওয়া যায় না। দেখার জন্য পাবলিক পরিবহন ব্যবহার করুন
যোগাযোগ :2 Ginkakujicho, Sakyo Ward, Kyoto, Kyoto Prefecture 606-8402, ফোন :075-771-5725
***___***___***
আমরা যখন চড়াই বেয়ে ওপরে উঠি , ওপর থেকে দারুন লাগছিলো শহর টি কে। একজন জাপানীস আমাদের ফটো তুলতে দেখে নিজে এসে আলাপ করেন আর স্ব-আগ্রহে আমাদের দু দুবার দুটো সুন্দর জায়গা দেখে ছবিও তুলে দেন। ওপর থেকে শহর আরও গিনকাকুজি মেশানো অপরূপ দৃশ্য।
ওপর থেকে শহর |
ওপর থেকে গিনকাকুজি |
নিচে নামতে চোখে পড়লো বাঁশ দিয়ে সুন্দর করে অনেক কারুকার্য। সে জলনিকাশি ব্যবস্থা হোক বা অন্য কিছু। নিচে ছিল wish pond , যেটি আমার মেয়ের ভারী পছন্দের। কত বার যে সে আমাদের coin ছুড়ে মেরেছে wish করতে তা আর নাই বা জানালাম 🙂 .
বাঁশের কারুকার্য |
Wish Pond |
ফেরার পথে এদের সাথে দেখা |
ওখান থেকে বেরিয়ে আবার বাসস্ট্যান্ডে আর আবার রিসার্চ ,এবার কোথায় যায় আর কি করে। সময় তখন ৪টের কাছাকাছি। দুবার দুটো ভুল বাসে উঠে আবার নেমে পড়লাম। শেষ মেশ উঠলাম , বাস নম্বর ২০৪, গন্তব্য কিনকাকুজি (Kinkauji Temple ), The Golden Pavilion .
জাপানে যখন আসবো প্ল্যান হাসিল বা যখন ভিসা অফিস যায় , তখন জাপানের বিখ্যাত জায়গা গুলোর মধ্যে সব জায়গায় কিনকাকুজির ছবি চোখে পড়েছিল। কিয়োটো শহরে এটি অন্যতম বিখ্যাত টুরিস্ট প্লেস। এটিও একটি ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ। বাসস্টপ কিনকাকুজিতে এসে নামলাম।বাঁদিকে রাস্তা দিয়ে ২ মিনিট র হাত রাস্তা। শনিবার তা ও আবার বসন্ত , বিদেশিদের খুব ভিড়। প্রবেশ মূল্য ৪০০ যেন মাথা পিছু।
প্রবেশ দ্বার :টিকিট মূল্য ৪০০ ইয়েন মাথাপিছু |
কিংকাকুজি (金 閣 寺, গোল্ডেন প্যাভিলিয়ন) উত্তরে কিয়োটোতে অবস্থিত একটি জেন মন্দির অবস্থিত, যার উপরে দুটি মেঝে সম্পূর্ণরূপে সোনার পাতে আচ্ছাদিত,বিশেষত বড় পুকুরের সামনে নির্মিত একটি চিত্তাকর্ষক কাঠামো । আনুষ্ঠানিকভাবে রোকোঞ্জী নামেও পরিচিত। কিংকাকুজি ,ওহ , কি দৃশ্য। দেখার মতো। সোনালী মন্দির , সামনে পুকুরের জলে তার আলোকিত প্রতিছব্বি। সামনের ছোট্ট পুকুরটিতে অজস্র মাছ খেলা করে বেড়াচ্ছে। ম্যাজিক এর মতো এক পরিবেশ। মন্দিরের চারপাশ দিয়ে ঘুরে অনেক ভাবে ছবি তুললাম।পুকুরের কাছ থেকে কিংকাকুজি দেখার পর আমরা প্রধান পুরোহিতের প্রাক্তন বাসগৃহ (হজো) দ্বারা পাস করি যা তাদের আঁকা ঢালু দরজা (ফুসুম) নামে পরিচিত, কিন্তু জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত নয়।এখানেও চোখে পড়লো wish বুদ্ধা,যথারীতি মেয়ের বায়নায় আবার কিছু coin বিসর্জন।
Kinkakuji -Golden Pavilion |
যে যে বিষয় গুলো আপনি জেনে কিনকাকুজি দেখতে গেলে আপনার দেখার আছে কয়েক শতাংশ বেড়ে যাবে ,সেগুলি ছোট করে :
Kinkakuji Temple (Golden Pavilion)
——————————————————————————————————
জাপানের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটেও কিনকাকুজি খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে অনেকবার। এটি তার ইতিহাস জুড়ে অসংখ্য বার পুড়ে ছাই হয়েছে, ওনিয়ান যুদ্ধের (একটি গৃহযুদ্ধ যা অনেকটা কিয়োটো ধ্বংস করে) সময় দুবার ; এবং আবার আরো সম্প্রতি 1950 সালে এটি একটি কুমারী সন্ন্যাসী দ্বারা। বর্তমান গঠন 1955 সালে পুনর্নির্মিত করা হয়েছিল এই Golden প্যাভিলিয়ান কে।
মাছ দেখতে ব্যস্ত |
সামনের পুকুরে সোনালী প্রতিছব্বি |
***___***___***
ফেরার পথের রাস্তায় চোখ পড়লো জাপানীস পুতুল ব্যাগ আবার ঘর সাজানোর জিনিসের দোকান। ঘড়িতে তখন ৫ তা বেজে কিছুক্ষন। এবার ১০৩ নম্বর বাস নিয়ে সোজা পৌছালাম হ্যাকুমানবেন (hyakumanben ), ভাস্করের ইউনিভার্সিটি পাড়ায়। সেখানে দোকান ঘুরে ,আগামী সপ্তাহের কিছু প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে ,ঢুকে গেলাম এক ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্টে। বেশ কব্জি ডুবিয়ে খেয়ে বাড়ি ফিরতে ফিরতে (বাস নম্বর ৬৫, একটু বেশি ঘুরিয়ে ) রাত ৯.৩০। রবিবার গুলো সকালে দুপুর খেয়ে দিয়ে একটা ঘুম আর তারপর সাইকেল নিয়ে তিনজনে বেরিয়ে পড়ি। এই রবিবার চলে গেলাম কাছের একটা mall এ। দেখলাম নিচের একতলা জুড়ে ,ক্যাটস এন্ড ডগস র বিশাল দোকান। এখানে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে , মাউস খুব বেশি পোষ্য ভালোবাসে। তাদের আবার সেলুন ও আছে। সাথে ছিল পাশেই পাখিদের দোকান। আমার মেয়ে সবাই কে দেখে কি যে খুশি কি বলি। তারপর আর কি নিজের আর প্রিয়জনদের জন্য কিছু কেনাকাটা।