পড়ন্ত বিকালের রোদে ময়দানের পাশে
ফুটপাথ ধরে একদিন হেঁটে ফিরছি , হঠাৎ দেখা হয়ে যায় ক্লাস এইটের স্কুলছুট এক বান্ধবীর সঙ্গে ।
ব্যাগ থেকে একটা ডাইরি খুলে আমার দিকে এগিয়ে দেয় সে,
লেখা দেখে আমি চমকে উঠি –
যেদিন দূর থেকে দূরবর্তী হয়ে গেছে
সম্পর্ক এর জেটিঘাট ,
সেদিনই আমি বরফ প্রতিমা হয়ে গেছি ।
এ যেনো অনন্তের অভিমান , পুড়ে মরে
আমার স্বত্ত্বা ।
প্রশ্ন করেছিলাম কোন পত্রিকায় লেখা দিস’ না কেন ?
উত্তরে বলে গেল
আঁধার আমার ভালো লাগে ।
সেদিন ভাঁটিখানায় গিয়েছিলাম সন্ধ্যা বেলায়
এক ছিপছিপে তরুণ বাংলা খেয়ে
বলে চলেছে-
বুকে মৃত নদী রাখি ,
পুড়ে যায় ইহকাল
ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরি তাকে , বলি আকাশে তাকিয়ে দেখো পূর্ণিমা মেলেছে ডানা ,
আর এক পেগ চুমুক দিয়ে সে বলে ওঠে –
আমি দেখি ছায়াপথ
মিশে যাই মৃত নক্ষত্র’র দেশে
শুনে আমি বাকরুদ্ধ হয়ে যাই ।
তার কবি জন্মের কাছে মাথানত
করে ফিরে আসি ।
দিনের কোলাহল ফুরিয়ে আসে রাত গভীর হলে, মুঠোফোনে আমি ফেসবুকে প্রিয় কবিদের টাইমলাইনে ঢুকে পড়ি কবিতা
ঈশ্বরকে খুঁজবো বলে ,
হটাৎ কোন তরুণ অনামি কবির পেজে চোখ আটকে যায়,
কি অনায়াসে সে লিখে রেখেছে –
বুনো আঁধারে ঢেকে গেছে আমার পুংজন্ম
তাই আজ আর রোদ্দুর খুঁজি না ।
তিন চার বার অনায়াসে পড়ে ফেলি
মুগ্ধতা গ্রাস করে আমায় ।
জীবন পিতার মতো জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছা করে তাকে ।
সুন্দরবনে পিকনিক করতে গেছি বন্ধুদের সাথে জানুয়ারির শেষে ,
স্টিমার থেকে জঙ্গলে নেমে এসে দেখি
হোগলা পাতার উপড় পড়ে আছে অসমাপ্ত একটি কবিতার কএকটি লাইন,
প্রেমিকার মতো আঁকড়ে ধরি ।
দেখি কবি লিখে গেছে –
এসো প্রিয় স্বদেশ
সবুজে বোনা সোয়েটার হয়ে,
শিকারীর গল্পে হিম ঢেকে রাখি ..
আমি অরণ্যে পাগলের মতো খুঁজতে থাকি কবিকে , মৃত্যু ভয় উড়ে গেছে তখন
একটি বার তার চরণ ছোঁব বলে ।
কলমে : অতনু নন্দী , পাঁচড়া ,জামালপুর ,পূর্ব বর্ধমান