যেদিন সিন্ধু সভ্যতা হারিয়ে গেল
চাপা পড়ে গেল ধ্বংস স্তুপে,
যেদিন মিশরীয় সভ্যতাও ভেসে গেল
এক দুঃসময়ের নীল স্রোতে,
বুকের ভিতর কী অসহায়তা মৃত্যুভয়!
তুমি সাহস জুগিয়েছিলে,
ধ্বংসস্তুপের ভিতর থেকে উদ্ধৃত হাতছানি
লক্ষ লক্ষ পিরামিডের ভিতর থেকে শুনেছিলাম
তোমার আর্তনাদ;
–আমি বেঁচে আছি
–আবার গড়ব এক নব সভ্যতা
প্রতিটি ইট কাঠে তোমার তেজদীপ্ত আশা,
কী অসীম সাহস ক্ষমতা তোমার !
ধ্বংসস্তূপ ঝেড়ে গড়েছো কত কত জনপদ।
আমি দেখেছি একের পর এক বিশ্বযুদ্ধ,
রাষ্ট্রনেতাদের রণ হুংকার,
যেদিন হিরোশিমার বাতাসে মেশানো হলো বিষাক্ত বিষ,
ঘুম ভাঙ্গার আগেই ঘুমিয়ে গেল আরো এক জীবন্ত সভ্যতা
যেন প্রাণহীন মৃত্যুপুরী,
মৃত্যুর স্তূপ থেকে সেদিনও তুমি জেগে উঠেছিল
শুনেছিলাম তোমার অভয় অমৃতবাণী;
–আমি বেঁচে আছি
–আবার ফিরিয়ে দেব প্রাণের স্পন্দন
শায়িত কবরে তখনও তোমার স্নেহের ক্ষত,
কী অবিচল তোমার মায়া মমতা!
বিনিদ্র রাত্রি জেগে ফিরিয়ে দিয়েছো অস্তিত্ব।
আজ আরো এক সম্মুখ মৃত্যুর দ্বারে
সভ্যতার শৌর্য অবলুন্ঠিত মহামারীর কারাবারে,
মৃত্যুর বিভীষিকায় নিথর পৃথিবী হারিয়েছে উচ্ছ্বাস,
আকাশে বাতাসে শুধুই বেদনার ক্রন্দন,
দু চোখ জুড়ে ভয়ের পর্দায় আচ্ছাদিত,
তিলে তিলে গড়া তোমার সভ্যতা আজ অবক্ষয়ে
মৃত্যুর দাবানলে ভস্মিভূত দেশ থেকে মহাদেশ
কোথায় তুমি?
শোনাও মৃত্যুঞ্জয়ী বাণী
মৃত্যুর পাহাড়েও মাথা উঁচিয়ে বলো,
–আমি বেঁচে আছি
–আমি দৃঢ়, শেষ হবে সংকটময় ক্ষণ,
–ফিরিয়ে দেবো মহামিলনের সঞ্জীবন;
ধ্বংসের স্তুপে তাই কান পাতি
খুঁজে চলি তোমার শেষ বিশ্বাস টুকু,
কী অদ্যম চির শাশ্বত তোমার ইচ্ছা, চেতনা!
জেগে ওঠো, জাগরিত করো সৃষ্টির অঙ্কুর।
কলমে সুকান্ত দাস, যাদবগঞ্জ, পূর্ব বর্ধমান
জন্ম পূর্ব বর্ধমান জেলার যাদবগঞ্জ গ্রামে। বাংলা সাহিত্যের প্রতি ভালোবাসা শৈশব থেকেই। স্কুল জীবন থেকেই কবিতা গল্প লেখার শুরু। বর্তমান সামাজিক প্রেক্ষাপট কে নিয়ে লিখতে ভালোবাসি।