একমাত্র বিবাহযোগ্যা নাতনীর কুষ্ঠি-টা হাতে পাওয়ার পর, চালসে পড়া চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা এঁটে, সেটা খুলে দেখতে লাগলেন বৃদ্ধ গোবিন্দলাল চ্যাটার্জি। প্রায় আটাত্তর ছুঁইছুঁই বয়সে এসে আজ একটা জিনিস ভালোই উপলব্ধি করতে পারেন, একটা গোটা জীবন কাটানো মোটেই খুব সহজ ব্যাপার নয়। তোমাকে যেমন লোহার মত কঠিন হতে হবে, ঠিক সেরকমই সদ্য রসের কড়াই থেকে তোলা রসগোল্লার মত নরম হতে হবে, সঙ্গে রস-বোধ তো আছেই। আবার একই সাথে জলের মত স্বচ্ছ আর আকার বিহীন-ও হতে হবে। যাইহোক, চশমা-টা চোখে লাগিয়ে কুষ্ঠি-টা ভালো করে দেখতে গিয়ে চোখে পড়ল একটা ছোট্ট শব্দ, ‘মাঙ্গলিক’। অর্থাৎ ওনার নাতনির বিবাহের স্বল্প দিনের মধ্যেই বৈধব্য যোগ আছে। আর ‘মাঙ্গলিক’ কন্যার এই বৈধব্য যোগ কাটানোর একমাত্র উপায় হল বিবাহের সকল রীতি মেনে কোনো গাছ বা এইরূপ কিছুর সাথে প্রথমবার বিবাহ দেওয়া। কুষ্ঠি-টা টেবিলের উপর নামিয়ে রেখে কাঁপাকাঁপা হাতে চশমাটা খুলে চেয়ারে হেলান দিলেন বৃদ্ধ গোবিন্দলাল। জীবনের অদ্ভুত একটা সত্যি হল, তুমি যে জিনিস বা ঘটনা থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে, সেটা কোনো একটা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ঠিক সামনে এসে তোমার সমস্ত চিন্তাভাবনা-কে পাকদন্ডী-র মত পেঁচিয়ে ধরবে। চোখ বুজলেন গোবিন্দলাল, দু-ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ল তার চোখ থেকে আর তার সাথেই তিনি ফিরে গেলেন প্রায় পঞ্চাশ বছর আগের একটা অভিশপ্ত রাতে, যে রাতের কথা তিনি ভুলতে চেয়েছেন সারাজীবন ধরে, সেই অভিশপ্ত রাতের স্মৃতি আরো একবার করাঘাত করল তার পাঁচটি ইন্দ্রিয়ে।
(২)
সময়টা সত্তরের দশক, অর্থাৎ বর্তমান সময়ের সাথে একটা তুলনা টানলে খুব সহজেই অনুমান করা যায় তখনকার শহর বা গ্রামের অবস্থা ঠিক কিরকম ছিল। বছর সাতাশের ভীতু, লাজুক স্বভাবের গোবিন্দলালের সাথে কর্মসূত্রে আলাপ হয় প্রায় সমবয়সী বিশ্বনাথ ঘোষের। এই বিশ্বনাথ নামের ছোকরা আবার প্রচন্ড ডানপিটে আর ডাকাবুকো স্বভাবের। সেই যুগেও এদিক সেদিক গ্রামে -গঞ্জে , পাহাড়-জঙ্গল-সমুদ্রে ঘুরতে চলে যেত প্রায়শই । তো সেবার সটান গোবিন্দলালের বাড়িতে সে হাজির হয়ে বলল, “পুরুলিয়া যাবো ভাই। কোটশিলা বলে একটা গ্রাম আছে ওখানে, গ্রাম-সংলগ্ন একটা জঙ্গলও আছে। গ্রাম্য পরিবেশে দু-তিনটে দিন বেশ ভালোভাবেই কাটিয়ে আসা যাবে আর তার সাথে জঙ্গল বিনামূল্যে। এই শহুরে পরিবেশে দমবন্ধ হয়ে এসেছে। তা ভায়া তুমি যাবে না কি?”
গোবিন্দলাল আমতা আমতা করে বললেন, ‘আমি তো ভাই কোনো দিন এরকম ভাবে ঘুরতে বেরোইনি। তার উপর তুমি বলছ গ্রাম, জঙ্গলও আছে…তা বাঘ সিংহ ….নিদেন পক্ষে বুনো হাতির ভয় টয় নেই তো?”
পান চিবোতে চিবোতে বিশ্বনাথ বলল, “না না ওসব নিয়ে চিন্তা নেই, সব আমি সামলে নেবো। তুমি শুধু ধুতি টুতি ছেড়ে আমার মত প্যান্ট- শার্ট পড়ার একটু চেষ্টা করো, বলা যায়না, বাঘ সিংহের তাড়া খেয়ে যদি পালাতে হয়! আর তখন যদি তোমার ধুতি..হে হে হে …সে যাইহোক! আজ উঠি। “
(৩)
কোটশিলা, জঙ্গল আর টিলা দিয়ে ঘেরা একদম ছোট্ট একটি গ্রাম। লোকসংখ্যাও হাতে গোনা। চাষবাস আর গো-পালন- ই এখানকার প্রধান জীবিকা। গোবিন্দলাল আর বিশ্বনাথ, সেখানকার একজন গ্রামবাসী, হারুনের বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করে নিল। থাকা এবং খাওয়া দৈনিক মাত্র পাঁচ টাকা। জ্যৈষ্ঠের সন্ধ্যাও গায়ে একটা হালকা শাল চাপাতে বাধ্য করেছে গোবিন্দলাল-কে। হারুন পেশায় একজন গোয়ালা। তার কাছে আশেপাশের ঘোরার মত কিছু জায়গার কথা জানা গেলেও একটা ব্যাপারে খটকা লাগল দু’জনেরই। গ্রামের পশ্চিম দিকের প্রায় শেষপ্রান্তে অবস্থান করা একটি বট গাছ সম্পর্কে হারুন সতর্ক করল বারবার।
‘ওদিকটা তাহলে না যাওয়াই ভালো , কি বলো ভায়া?’ – বলল গোবিন্দলাল।
‘আরে ধুর, তুমিও শহরের লোক হয়ে গ্রামের লোকের এইসব বারণ বাধা-নিষেধে ভয় পেয়ে গেলে হে? নাহ্ এটা তোমার কাছে আশা করিনি! ‘
গোবিন্দলাল আর কথা বাড়াল না। এই ছেলের সাহস যে অপরিসীম, সেটা তার অজানা নয়, তাই কোনো বারণের তোয়াক্কা করবে বলে মনে হয়না।
দু’টো সাইকেল জোগাড় করে সারাদিন গ্রামের চারদিকটা ঘুরে দেখতে মন্দ লাগল না দু’জনেরই। কিন্তু অদৃষ্ট হয়ত গল্পটা একটু অন্যভাবে সাজিয়ে রেখেছিল। পড়ন্ত বিকেল, গোধূলির আলোয় মোহময় সূর্যাস্ত, পাখিদের কলরব পেরিয়ে অনেকটা দূরে পশ্চিম প্রান্তে মাথা উঁচু করে দেখা দিল একটা প্রাচীন বটগাছ। ‘ঐ দেখো সেই বটগাছটা। এটার কথা-ই কাল বলেছিল মনেহয় হারুন। চলো একটু দেখে আসা যাক !’ – বলল বিশ্বনাথ।
গোবিন্দলাল জানত বাধা দিয়ে সেরকম লাভ হবেনা, তাই সে কথা না বাড়িয়ে বিশ্বনাথকে অনুসরন করল। বটগাছের কিছুটা কাছাকাছি আসতেই চোখে পড়ল বেশ কিছুটা জায়গা জুড়ে একটা বেদী-র মধ্যে আগুন জ্বলছে আর তার ঠিক পাশেই গেরুয়া বস্ত্র পরিহিত একজন সাধু বসে আছেন। সাধুর গলায় এবং হাতে রুদ্রাক্ষের মালা , কপালে একটা মস্ত বড় তিলক আর ঠিক পাশেই একটা বড় রামদা রাখা। সম্ভবতঃ জংলি পশুর আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য। আরো একটা জিনিস যেটা চোখ এড়ালো না ,সেটা হল বটগাছ-টা চারপাশ থেকে লাল কাপড় দিয়ে বাঁধা, আর গাছটাকে প্রদক্ষিণ করে থরে থরে কয়েক হাজার ইট এমনভাবে সাজানো আছে, যাতে বটগাছের কাছে যাওয়া না যায়।
বিশ্বনাথ নিজের মনেই বলে উঠল, ‘নাও, আবার নতুন উৎপাত। চারটে মন্ত্র পড়ে একটা তাবিজ দিয়ে চার-আনা পয়সা চাইবে এক্ষুনি।’
সাধু তাকালেন বিশ্বনাথ আর গোবিন্দলালের দিকে। গোবিন্দলাল হাত জোড় করে বলল, ‘প্রণাম বাবা। আমরা কলকাতা থেকে এসেছি। ঐদিকের গ্রামটায় দু’দিন থাকব। আচ্ছা, এই গাছের কাছে আসতে আমাদের বারবার বারণ করা হয়েছে কেন? এর কারণ কি?’
সেই সাধু একটু হেসে ইশারায় তাদের দুজন-কে বসতে বলল । তারপর ভাঙ্গা বাংলায় বলতে শুরু করলেন, “আজ থেকে প্রায় একশো বছর আগের কথা। তখন এই গ্রামের অবস্থা এখনকার থেকেও অনেক খারাপ ছিল। তবে এখানকার মানুষ খুব সুখে শান্তিতে দিন কাটাতো। রতন গোয়ালার একটা মেয়ে ছিল,নাম কিরণ । তো ওর মাঙ্গলিক যোগ ছিল। দোষ কাটানোর জন্য এই বটগাছের সাথে ওর বিয়ে দেওয়া হয় বিবাহের সব আচার- অনুষ্ঠান মেনে। বটগাছটা তখন অনেক ছোটো ছিল। কিন্তু ঝামেলা বাঁধে এর পরে। মেয়েটি কিছুতেই অন্য কাউকে আর বিয়ে করতে রাজি হয়না। এই বটগাছটাকেই ওর স্বামী মেনে নেয় আর এখানেই, বটগাছের নীচে থাকতে শুরু করে। পরিপাটি করে, যত্ন করে এই গাছে খাবার দিত, জল দিত। আর কখনো গাছটাকে জড়িয়ে ধরে , গাছের গায়ে হেলান দিয়ে ঘুমাতো। ওর বাড়ির লোক দেখলো মেয়ের এই পাগলামি ছাড়ানোর একটাই উপায়, এই গাছটাকে কেটে ফেলা।একদিন দুপুরে কিরণ যখন এখানে ছিল না, ওর বাবা আর কাকা এসে এই গাছটা কাটার চেষ্টা করে। গাছে একটা কুড়ুলের কোপ পড়ার সাথে সাথেই কিরণ কোথা থেকে যেন পাগলের মত ছুটে আসে। গাছের গায়ে কুড়ুলের দাগ দেখে মাথায় রাগ চেপে যায় ওর। রাগের মাথায় ও একটা কুড়ুল তুলে নিয়ে কোপ মেরে দেয় ওর বাপের গলায়। ব্যাস, বাপটা ওখানেই ছটফট করতে করতে মারা যায়।”
একটু থামেন সেই সাধু। গোবিন্দলাল অস্ফুট স্বরে জিজ্ঞেস করে, ‘তারপর?’
সাধু বলে চলেন, ” গ্রামের লোকেরা কিরণ-কে ধরে বটগাছের সাথে বেঁধে রাখে তিনদিন। কোনোরকম জল খাবার সে ছুঁয়েও দেখেনি, শুধু বারবার বলতে থাকে, ওর স্বামী-কে যারা আঘাত করবে , ও তাদের কাউকে ছাড়বে না। গ্রামে সালিশি সভা ডাকা হয়। সেখানে প্রমাণ হয় কিরণকে পিশাচ ধরেছে , আর ও এই গ্রামে থাকলে সবার বিপদ। তাই গ্রাম থেকে ওকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে। এরপর আর কোনোদিন কিরণকে এই গ্রামে দেখা যায়নি। কিন্তু আসলে সেইদিন রাতেই মেয়েটাকে এই বটগাছের পাশেই গায়ে আগুন লাগিয়ে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা হয়, আর ওর দেহের অবশিষ্ঠ অংশ নদীর জলে ভাসিয়ে দেওয়া হয়।”
কিছুক্ষণ থেমে সেই সাধু আবার বলতে শুরু করলেন, “গ্রামের কেউ এই দিকের পথ মাড়াতো না তার পর থেকে। এই বটগাছ-টা একাই অনেকগুলো বছর এইভাবে থেকে গেছে আর ধীরে ধীরে বড় হয়েছে। তিন বছর আগে একজন কাঠ কাটার জন্য ঘুরতে ঘুরতে এখানে আসে , আর এই বটগাছের কাঠ কাটতে থাকে। পরদিন সকালে তাকে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলতে দেখা যায় এখানেই, এই বটগাছে, চোখদুটো কোনো এক অজানা ভয়ে ঠিকরে বেরিয়ে এসেছিল। তারপর গত তিন বছরে আরো চারজন জন মারা যায়, একই ভাবে। আর তাদের প্রত্যেকেই এই বটগাছের কোনো না কোনো ভাবে ক্ষতি করতে গিয়েছিল। কিরণ আবার ফিরে এসেছে। ও এখনও ওর স্বামীকে আগলে আগলে রাখে। যতই হোক, বিয়ে সাত জন্মের বন্ধন কি না!”
বিশ্বনাথ বেশ অবিশ্বাসের সাথে বলে উঠলো, ‘ধুস্!! যত্তসব গাঁজাখুরি গল্প।’ বলে কারোর কিছু বুঝে ওঠার আগেই চকিতে ছুটে গিয়ে সেই সাধুর পাশে রাখা রামদা-টা তুলে নিয়ে একলাফে পৌঁছে গেল সেই বটগাছটার কাছে, আর চকিতে বটগাছের গায়ে কোপ বসিয়ে দিল….একবার …..দু’বার…. তিনবার….. আর প্রচন্ড গর্বের সাথে বলল, ‘কোথায় তোমার কিরণ? আসতে বলো তাকে…কোথায় সে? আমার হাতে রামদা দেখে ভয় পেয়ে গেল নাকি??’ – বিশ্বনাথের যুদ্ধজয়ের পৈশাচিক হাসি চাপা পড়ে গেল সেই সাধুর তীব্র ভর্ৎসনায়, আর সবচেয়ে খারাপ কিছু ঘটতে চলার পূর্বাভাস গোবিন্দলালের মনকে ব্যস্ত করে তুলল। হারুনের বাড়িতে ফিরে এসে, এই ব্যাপারে কিছু না বললেও মন-টা কু ডাকতে থাকলো। যদি ঐ সাধুর কথাগুলো সত্যি হয়? যদি সত্যিই কিরণের পুণর্জন্ম হয়ে বা অন্য কোনোভাবে সে ফিরে এসে থাকে! যদি সত্যিই আগের মৃত্যুগুলোর সাথে কিরণের কোনো যোগ থেকে থাকে, তাহলে কি হতে চলেছে এর পর? এসব ভাবতে ভাবতেই ঘুমিয়ে পড়ল দু’জনই।
(৪)
রাত তখন অনেকটাই গভীর, হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেল গোবিন্দলালের । টর্চের আলোয় দম দেওয়া সুইস হাতঘড়িতে সময় দেখল,রাত ২টো। বাইরে থেকে জোরালো হাওয়া আর বৃষ্টির শব্দ ভেসে আসছে। হাওয়াতে একটা জানলা খুলে গিয়ে সেখান দিয়ে বৃষ্টির ছাট ও ঠান্ডা বাতাস ঘরে ঢুকছে। জানলাটা বন্ধ করার জন্য উঠে এগিয়ে গেল গোবিন্দলাল । জানলার পাল্লাগুলো টানতে যাওয়ার ঠিক আগের মূহূর্তে একটা বিদ্যুত চমকের আলোতে বাইরের উঠোনটা আলোকিত হল……আর সেই কয়েক সেকেন্ডের আলোর ঝলকানিতে চোখে পড়ল উঠোনের ঠিক পাশে দাঁড়ানো একটা নারীমূর্তি। পরপর আরো কয়েকবার বিদ্যুত চমকালো, মেয়েটির পরনে আদিবাসী শাড়ী , বয়স হয়ত খুব বেশী হলেও বছর কুড়ি হবে, স্বল্প আলোতেও তার মুখের ক্রূর হাসি আর চোখের প্রতিশোধস্পৃহা স্পষ্ট। গলা শুকিয়ে আসছিল গোবিন্দলালের । অস্ফুট স্বরে জিজ্ঞেস করল, “কে? কে ওখানে?”
একটা ভয়ানক হাসির শব্দ যেন ছোট্ট বাড়িটার প্রতিটি কোণা ভেঙে খানখান করে দিতে চাইল। গোবিন্দলালের এর পরের কথা আর কিছু মনে নেই।
যখন জ্ঞান ফিরল তখন ভোরের আলো ফুটে গেছে। রাত্রের দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া কেটে দেখা দিয়েছে সূর্যের মিঠে রোদ। বিছানার দিকে তাকিয়ে হৃৎস্পন্দন দ্বিগুণ হয়ে গেল গোবিন্দলালের। বিছানা ফাঁকা , সেখানে বিশ্বনাথ নেই, ঘরের দরজার দিকে চোখ পড়তে দেখল সেটা খোলা। এক অজানা আশঙ্কার কালো মেঘ ঘনিয়ে এল, ষষ্ঠেন্দ্রীয় বারবার চরম কিছুর পূর্বাভাস দিয়ে চলেছে। বাইরে রাখা সাইকেলটা নিয়ে খুব জোরে চালিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সে এগোতে লাগল গ্রামের পশ্চিমে , সেই বটগাছটার দিকে। বেশ কিছুটা দূর থেকেই গোবিন্দলাল দেখতে পেল বটগাছের কাছে বেশ কিছু গ্রামবাসীর জটলা।
নাহ্ , আর কাছে যাওয়ার ইচ্ছা বা প্রয়োজন কোনোটাই হয়নি গোবিন্দলালের, কারণ ঐ ভীড়ের কারণটা তার জানা।
চোখ খুললেন বৃদ্ধ গোবিন্দলাল। মনটা অনেকটা ভারী হয়ে এল তার। গলার কাছে একটা কান্না দলা পাকিয়ে আটকে উঠলো। হঠাৎই কিছু একটা মনে হতেই তার মুখ উজ্বল হল, তার নাতনীর কুষ্ঠিটা তিনি হাতে তুলে নিলেন, তারপর ছিঁড়ে ফেলে দিতে দিতে মনে মনে ভাবলেন, “মাঙ্গলিকের অর্থ যদি প্রথম স্বামীর মৃত্যুই হয়, তাহলে সেই বটগাছটা একশো বছরেরও বেশী সময় ধরে সগর্বে মাথা তুলে কিভাবে দাঁড়িয়ে আছে ?”
কলমে হিমবন্ত দত্ত, বারুইপুর