কবিতারা এখানে ঝাঁক বেঁধে আসে।
আমার উঠোনে শিউলি ফুলের মতো বিছিয়ে ,
সুগন্ধি ছড়ালে , তুলে ফেলি একে একে
আলতো ভাবে, অপটু হাতে।
সন্ধ্যে নামার আগে,
ডুবন্ত আলোর ইশারায় ,ঘুম জড়ানো চোখে,
প্রথম আড়মোড়া ভেঙে কবিতারা জেগে ওঠে।
কবিদের সমস্ত জীবন ধরেই বুঝি বসন্ত কাল।
কলমের শাঁখে শাঁখে মুকলিত হয়ে ওঠে
শব্দের বুদ বুদ।
তারপর বিনিদ্র রাতে, ছাইদানী নিংড়ে ,
ভ্রূণ থেকে হামাগুড়ি দিয়ে –
এগোই পূর্ণাঙ্গ কবিতার প্রজন্ম।
কবিদের চোখের তলায় কালি,
ছেঁড়া পকেটের কোনায় চকচকে আধুলির চমক,
চিন্তারা মাথা কুটে মরে।
হাতের আঙ্গুলে কলমের দেবে আসা ছাপে,
বাজার ঘুরতি সকলেই আড় চোখে দেখে ,
সকলেই প্রহর গুণে।
শকুনের ডানার তলায় বসে ওরা ধুঁকছে কেবল।
চুনো মাছের মতো খাপি খেতে থাকে।
কবিতারা এখানে ঝাঁক বেঁধে আসে,
ফুল আঁকা আঁচলে কি খোপার বাঁধনে,
সে বাঁধন আলগা হলে ঘন মেঘ ডেকে ওঠে।
আঁচলের নীল রঙা সুতোর সেলাই খসে
কবিতার খাতায় জাল বুনে।
রাঙা চরণ ,শুভ্র ,কোমল হাতের ছোঁয়ায়,
জীবন্ত হয়ে ওঠে ক্রমশ
কবিদের নিশ্চল হৃদয়।
পলাশ রাঙা চোখের ইশারায়
ঘূণ ধরা ইচ্ছার গাছ, জল পায়।
কবিতারা এখানে ঝাঁক বেঁধে আসে,
মহামারীর বিষে, ক্ষয় প্রাপ্ত যৌবনের
ব্যকুলতায়, হাতড়ে বাঁচবার কৌশলে।
কবিতারা এখানে ঝাঁক বেঁধে আসে
মুষ্টি বদ্ধ হাতে, প্রতিবাদ প্রতিরোধে।
কলমে আশিস চক্রবর্তী, সুকান্ত পল্লি, মুর্শিদাবাদ
বর্তমানে একটি স্কুলে পার্শ্ব শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। ছেলে বেলা থেকেই লেখালিখি শুরু। দীর্ঘ সাত বছর নিজের একটি প্রিন্টেড পত্রিকার সম্পাদনা করেছি। বর্তমানে গল্প ,কবিতা , উপন্যাস ,নাটক , প্রবন্ধ , অনুগল্প প্রভৃতি কানাডা , অস্ট্রেলিয়া , বাংলাদেশ এবং ভারত থেকে নিয়মিত প্রকাশ হয়ে চলেছে -অনলাইন ও প্রিন্টেড আকারে।