1960 সালে 30 শে অক্টোবর বুয়েনস আইরেস প্রদেশের লানুস প্রদেশের জন্ম হলো এক বিস্ময়কর প্রতিভার। ফুটবল জগতের সরোবরে নিয়ে এলেন উত্তাল সমুদ্র তরঙ্গ গর্জন। তিনি আর কেউ নন আমাদের সকলের সুপরিচিত মারাদোনা, দিয়েগো আর্মান্দো মারাদোনা। তিন কন্যা সন্তানের পর তিনি ছিলেন চিতরো দিয়েগো মারাদোনা এবং দোনা তোতা দোলমা সালভাদের প্রথম পুত্র সন্তান। মাত্র 12 বছর বয়সে বলবয় হিসেবে প্রথম বিভাগের খেলার প্রথম অর্ধ বিরতির সময় বল দিয়ে জাদুকারী কারুকার্য দেখিয়ে তিনি দর্শকদের সন্তুষ্ট করেছেন। ছোটবেলা থেকেই তার বিষয়ে প্রতিবাদ দেখাতে শুরু করেছিলেন মারাদোনা। শৈশবের দল লস সেবোলিটাস্কে  টানা 138 তিন ম্যাচে অপরাজিত রেখেছিলেন।অবিশ্বাস্য! 1981 সালে তিনি বোকা যুনিয়রস ক্লাবে যোগ দেন এবং 1982 সালে তিনি বোকা যুনিয়রস ছেড়ে স্পেনের বার্সেলোনায় যান। আর দু’বছর পরে ইতালির ক্লাব নাপোলিতে সই করেন। ইতালিতে তিনি ক্লাব জীবনের সেরা ফুটবল খেলেন। ইতালিতে তিনি ক্লাব জীবনের সেরা ফুটবল খেলেন। 1989 এতে যেতেন উয়েফা কাপ।প্রথমবার ইতালির জয়ের উৎসব নাপোলিতে চলছিল পাঁচ দিন ধরে।  বাঁধন হারা ভালোবাসা সব সময় অপেক্ষা করে থেকে চেয়ে ইতালি শহরের তারই জন্য। এইভাবে বহু দেশের হয়ে খেলে বহু কাপ তিনি ছিনিয়ে নিয়েছিলেন। শৈশবে দারিদ্রতার অভিশাপ কাটিয়ে কিংবদন্তি হয়ে উঠেছিলেন দিয়য়গো আর্মন্দো মারাদোনা। 5 ফুট 5 ইঞ্চি উচ্চতার হলেও শক্তিশালী শরীরের অধিকারী ছিলেন তিনি। তার সঙ্গে ঝিলিয়ে ওঠা বাঁ পায়ের অভিজ্ঞান জাদু, শিল্পীদের বিভঙ্গ অলংকৃতি, অপূর্ব দৃষ্টিনন্দন, স্কিলের অনুষ্টটপ নিয়ন্ত্রিত দুরন্ত ফুটবল পায়ের বৈদগ্ধ, সবুজ গালিচার স্টাইলিশ প্যান্থার সঞ্চরণ ও অবর্ণনীয় শিল্প মিশে অপ্রতিরোধ্য করে তুলেছিল বিশ্বেত সমস্ত ডিফেন্ডারদের সামনে। 491 টি ম্যাচ খেলে 259 টি গোল করা আর্জেন্টিনা একবার জনতার ভোটে হারিয়ে দিয়েছিল ব্রাজিলের কিংবদন্তি খেলোয়াড় পেলেকে। তিনি 1979 থেকে 1980 তে দক্ষিণ আমেরিকার বর্ষসেরা ফুটবলার হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। 1989 থেকে 1989 তে ইউরোপিয়ান বর্ষসেরা ফুটবলার হন তিনি।  1990 সালের ফিফা বিশ্বকাপে তিনি ব্রঞ্চ মেডেল জয়লাভ করেন। 2008 সালে তিনি আর্জেন্টিনার লিওনেল মেসির দলের ম্যানেজার হন। তিনি ছিলেন ফিদেল কাস্তর বিশেষ বন্ধু এবং পোপের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছিলেন বহুবার। তার চরিত্রে দুটি গুণ বিরাজমান -একদিকে তিনি ফুটবল মাঠের সেরা বিনোদন উপহারক এবং অন্যদিকে তিনি সদা বিতর্কিত ব্যক্তি। আর্জেন্টিনার ভিলাপ হোলরিতোর বস্তি থেকে উঠে আসা এই কিশোর ফুটবলের জাদুতে সমস্ত বিশ্বকে ঘুরপাক খাইয়ে দিয়েছিলো। তার বাঁ পায়ের জাদুতে ফুটবলের সাফল্যের শিখরে স্পর্শ করেছিল বিদ্যুতের গতিতে। রাতারাতি হয়ে উঠেছিলেন তরুণ প্রজন্মের ফুটবল জগতের ‘আইকন’। তার মনটা ছিল পবিত্র, সদা মুখে ছিল শিশুর মতো সারল্যের হাসি। কলকাতা শহরে বাঙালি তাকে দেখেছে প্রাণোচ্ছ্বল এবং শিশু চঞ্চল রূপে। এই বিশ্বসেরা মহান ফুটবলার  2020 খ্রিস্টাব্দের 25 শে নভেম্বর সমস্ত বিশ্বকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন ফুটবল ঈশ্বরের কাছে। পৃথিবীতে ফুটবল যতদিন থাকবে ততদিন একটি নামের মৃত্যু নাই। সেই নামটি হল স্বর্ণাক্ষরে লেখা দিয়েগো আর্মন্দো মারাদোনা।

কলমে দেবজিৎ দত্ত , অস্টম শ্রেণি , আমিলা, পূর্ব বর্ধমান

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here