বাপজান

1
981

রাত নিশ্চুপ, স্তব্ধ নিঝুম
ঊর্ধ্ব গগনে বাজিছে কিসের হাক?
তিমির রাতে, তীব্র হয়েছে
হুতুম পেচার ডাক।

মাটির বিছানায়, পরম মমতায়
শয়ন গিয়াছে যে বীনা।
মায়ের পানে অবাক চেয়ে
প্রশ্ন ছুড়েছে,
বাপজান ঔষধ আনিবে কিনা।

কমলী লতার মত বীনা,
অনেক কিছু মনে নাই।
বাপজানের কাধে, গ্রামীন মেলায়
কিনেছে কত বেলুন, মিঠাই।

বীনা বাপের রাজকন্যে
হাতে রেশমী চুরি।
বাপজানের সাথে, নাটাই হাতে
কত উড়িয়াছে ঘুড়ি।

কালা জরে ক্লান্ত বীনা
কাপে নিরেট দেহ।
বাপজানের পরী বীনা
জানেনা তাহা কেহ।

ঔষধের খোজে, বাপজান ছুটে
কাটিবে অন্ধকার।
সামনে এক বিশাল নদী
কি হবে এবার।

বাপজান আকাশ ফাটিয়ে ডাক হাকে
ওরে মাঝি ভাই,
ওই পারেতে লয়ে যাও মোরে,
মোর কাছে পয়সা নাই।

বেটি আমার মরে মরে,
আমার বিষণ ভয় করে
ঔষধ আনিতে যাবো আমি
তোমার ভাংগা নৌকা চরে।

প্রতিউত্তরে কর্কশ সুর,
আমি নৌকার মাঝি নই।
হে স্রস্টা ঘুমাও তুমি?
এখন তোমার উছিলা কই?

দুনিয়ায় এখন সে ভীষণ একা
চোখ গড়িয়ে জল আসে।
তখন ছিল সবাই সখা
এখন কেহ নাই পাশে।

বীনারে আমার ভালো করি দাও
প্রার্থনাতে কাদে পিতা।
লইবো কাধে কেমন করি,
কেমন করি জ্বেলবো চিতা।

রাত পোহায়, হায় হায়
ভেসে আসে সুর।
ঘুড়ির মতই উড়ে গেছে
বীনা বহু দূর।

কলমে মির্জা নয়ন

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here