বেশি কিছু তো চাইনি আমরা কোনোদিন;
ছোট্ট ছোট্ট কিছু প্রত্যাশা, ঘরোয়া চাওয়া-পাওয়া –
আজও এগুলোই তো আমাদের মনের হাসি,
আমাদের তৃপ্তির শ্বাস।
কিন্তু সেটুকুও কি পেয়েছি আমরা?
যদিও,ক’জনই বা আমরা নিজেদের চিনতে পেরেছি!
নিজেরা পুড়তে-পুড়তে –
উপশমের ভাপ দিয়ে দিন-রাত আমরা সেবা করে এসেছি;
নিজেরা অল্প খেয়ে –
পাত সাজিয়ে আমরা বেশিটা খাইয়েছি;
আড়ালে চোখের জল মুছে –
সুখ-সম্ভোগের খোরাক আমরাই জীবনভর জুগিয়ে গেছি;
জগৎজোড়া হাজারো কৃতিত্বের নেপথ্যে আমরাই থেকেছি;
অকাতরে সর্বস্ব নিংড়ে দিয়ে –
তিলে-তিলে আমরা নিজেদের নিঃশেষ করেছি;
নিজেদের ঘর ছেড়ে অন্যের চালে খড় দিয়েছি;
অন্যের তুলসীতলায় সন্ধ্যাদীপ জ্বালিয়েছি;
নিজেদের শিকড় উপড়ে –
অন্যের চারাগাছে আমরাই সার-জল দিয়েছি,
তাকে বড়ো করে তুলেছি, ফলবতী করে তুলেছি;
দিনের শেষে আবার আমরাই –
অবহেলিতও হয়েছি, অপমানিতও হয়েছি,
শোষিতও হয়েছি, অত্যাচারিতও হয়েছি;
আর আজও হয়ে চলেছি….
তোমরা ক’জন খোঁজ রাখো আমাদের?
আমাদের প্রাণান্তকর পরিশ্রমের, আত্মত্যাগের,
অবিশ্রান্তভাবে ঝরে যাওয়া রক্ত, ঘামের –
মূল্য তোমরা ক’জন দিতে পেরেছ?
দিলেও, সে মূল্য আদৌ কি যথার্থ?
তোমরা ক’জন দেখো –
আমাদের ক্লিষ্ট, দগ্ধ মনের দগদগে ক্ষত?
ঝরা পাতার মতো খসে যাই আমরা,
সময় মাড়িয়ে যায় আমাদের;
তোমরা, আবার তোমাদের অহং-এর তর্জনী ওঠাও।
ইতিহাস কি নথি রাখে আমাদের এই আত্মাহুতির?
** এই লেখা আমি তাঁদেরকে উৎসর্গ করলাম, নিজের মতো করে তাঁদেরকে শ্রদ্ধার্ঘ্য দেওয়ার চেষ্টা করলাম, সমাজের বিভিন্ন স্তরে আজও যাঁরা চার দেওয়ালের সং-সারে প্রতিদিন নিজেদের জীবন বলি দিয়ে চলেছেন….
কলমে প্রসেনজিৎ মন্ডল
Write and Win: Participate in Creative writing Contest & International Essay Contest and win fabulous prizes.