কাঁচা হলুদ আর নিম পাতা বাটা হত সকাল সকাল।
ভাদ্র মাসে তালের বড়া খেয়ে
যে আঁটিগুলোকে ঘরের পিছনে মাটি চাপা দিয়ে রাখা হত
আগের দিন বিকেলেই তাঁদের তুলে আনা হত;
অঞ্জলীর পর প্রসাদের সাথে হত
তালের ফোপরা বিতরন।
সারা রাত জেগে দেওয়া আলপনা বাতাসে শুকিয়ে
সকালে হয়ে উঠত আতস উজ্জ্বল।
এখন আর বাগদী বুড়ির মাঠে পলাশ গাছটা নেই।
যবের চাষও খুব একটা করে না কেউ।
চৌধুরীদের বিলের ধারে বর্ষা এলেই
যে খাগেরা মাথা তুলে দাঁড়াতো বসন্ত পঞ্চমীর অপেক্ষায়
সেই বিলটাই আজ নেই।
তবুও পূজার উপকরণ জোগাড় হয়ে যায়।
এমন কি আমের মুকুল কিংবা পল্লব পাড়ার জন্যও
আম গাছে ওঠে না শিশুরা।
হাতেখড়ির আগেই হাতে ওঠে কড়ি।
বই,কলম,দোয়াত,স্লেট,পেন্সিল এখনও
জমা হয় থাক থাক।
হাত জোড় করে দাঁড়ানো দুমুঠোয় অঞ্জলী ভরে।
এখনো শাড়ি আর পাঞ্জাবীর ভাঁজে
আদরে আহ্লাদে আড়াল খোঁজে প্রেম।
কাঁচা হলুদ আর নিম পাতায়
গাঢ় হয় অনুরাগের রঙ।
ফিকে হতে হতে কিছু রঙ
আজো বাকি থেকে যায়।
সব কিছু হারিয়ে যায় না।
হারিয়ে যেতে যেতে কিছু স্মৃতি
প্রস্তুত হয় পুনরুজ্জীবনের
আর নতুনের মাঝে পুরাতনের খোঁজে
যেখানে আজো কাঁচা হলুদ আর নিম পাতা
কৈশরের কিশলয় প্রেমে মজে।
©কৃষ্ণ বর্মন (পলতা,ওয়েস্ট বেঙ্গল )