“কয়েদী ১০৩ নয়,ওর নাম নীপমঞ্জরী”..জেল থেকে বেরনোর সময় এটেন্ডেস খাতায় সই করতে করতে তীব্র প্রতিবাদী কন্ঠে বলে ওঠে মৃত্তিকা।
মনে মনে ভাবে,”সংশোধানাগার নামটা প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য করা উচিত”।গাড়ীতে স্টার্ট দেয় চল্লিশ ছুঁইছুঁই মৃত্তিকা সেন,পেশা এবং নেশা যার ওকালতি।
বাড়ি পৌঁছে কেসটা আবার ঝালিয়ে নিতেই কুন্দনিকা ব্যানার্জিকে ডেকে পাঠিয়েছে আজ মৃত্তিকা।সে পৌঁছতেই মৃত্তিকা বলে,”তুমি শুরু থেকে আর একবার পুরোটা বলোতো আমায়”।
নীপমঞ্জরী এবং কুন্দনিকা দুজনেই সেই ছোটবেলার স্কুল ফ্রেন্ড।তাদের দেখা হওয়ার কারণটা,নীপমঞ্জরীর একবছর পাশ না করতে পারা।তখন ক্লাস নাইন।কুন্দনিকার বন্ধু শায়ন এবং সবাই মিলে প্ল্যান করে ছাপোষা নীপমঞ্জরীকে নিয়ে একটু মজা করবে।সুন্দর ফার্স্টবয় শায়ন তাই ভালোবাসায় বাঁধে নীপমঞ্জরীকে।কিন্তু চার মাস যেতেই শায়ন রটিয়ে দেয় নীপমঞ্জরী কতোটা সহজলভ্য।শিক্ষিকাদের কাছে গিয়ে সে নালিশ করলে তাকে শুনতে হয়,”ইউ আর স্পয়লিং দি রেপুটেসন ওফ স্টুডেন্টস”।বাড়তে থাকে নির্যাতন,যখন বুলিং শব্দটাও ওরা শেখেনি।
কিন্তু সেই প্রথমবার কুন্দনিকা ঢাল হয়ে দাড়ায় তার।ভালো রেজাল্ট করা কুন্দনিকার ওপর কথা বলবে এমন ছাত্রছাত্রী তখন নেই।কিন্তু নিজের সেকেলে গোড়া মধ্যবিত্ত পরিবারে,কুন্দর পরামর্শে,সব কথা খুলে বলে খুব মার খায় নীপো।”পড়াশুনা করতে যাও না নোংরামো”,এই উত্তর দিয়েছিলো নীপোর বাবা।কিন্তু কুন্দনিকার সাহায্যে নীপমঞ্জরী ক্রমশ ফিরে পায় তার অভিন্নতা।
মৃত্তিকা বলে,”ও মলেস্ট প্রথম কবে হয়”?
উত্তর আসে,”ছোট থেকেই”।
একই কলেজে কমার্স নিয়ে ভর্তি হয় দুজনে।
কিন্তু বেশীদিন টিকলো না সেই সুখ।এই কদিনে একটা অদ্ভুত অনুভূতি হয়েছে কুন্দনিকার।বন্ধুত্ব না তার থেকে বেশী কিছু বুঝতে পারছে না সে।শুধু মনে হতো এখুনি চাই নীপোর হাতদুটো।মনে হতো একবার কাছে গিয়ে জড়িয়ে ধরলেই ভালো হয়ে যাবে নীপো।কুন্দর মা সিঙ্গল মাদার।শত কাজের ব্যস্ততায়েও তিনি লক্ষ্য করেছিলেন মেয়ের এই চঞ্চলতা।
দুদিন পর দেখা হয় দুজনের।নীপো বলে,”আমায় কোথাও নিয়ে চল।”
নিজের বাড়িতে নিয়ে এসছিলো কুন্দ তাকে।বুকে মাথা রেখে চুলে বিলি কাটতে কাটতে যেনো নিজেও শান্তি পাচ্ছিল্লো সে।
নীপো হঠাৎ বলে,”কাকামণি আমার শরীরটাকে শেষ করে দিচ্ছে রে”।কুন্দর থেকে লজ্জায় লুকিয়েছিলো এই কথা এতোদিন।ক্লাস সেভেনে প্রথম নিজের কোলে বসিয়ে অদ্ভুত ভাবে আদর করেছিলো কাকামণি।ছোট সে,ভয় পেয়ে বাবা-মাকে বলায় বাবা বলেছিলো কাউকে না বলতে কারণ দোষটা নাকি তার মেয়ে হয়ে জন্মানোর।কাকামণির ওপর তার বাবা চিৎকার করলেও কাকামণি ছিলো নির্বিকার।কিন্তু তিনদিন আগে শুধু স্পর্শে থেমে থাকেনি ব্যাপারটা।তাকে জোর করে শারীরিক সম্বন্ধে লিপ্ত করায় কাকামণি।বাবাকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে গেছিলো মা,সেই সুযোগে এইসব।
সেই দুপুরবেলা কুন্দনিকা প্রথম বোঝে সে “অন্যরকম ভালোবাসে” নীপমঞ্জরীকে।
নীপমঞ্জরীর নিঃশব্দ সম্মতিতে একটাই ভয়,”আমি তাহলে শায়ন বা অনিন্দ্যর কথাও ভাবি কি করে বলতো,আমি কি তাহলে উভয়কামী?”
অনেক অজানা প্রশ্ন এমন থাকে কিন্তু সহজ উত্তর চাওয়া বারণ।
কিন্তু হঠাৎই ধরা পড়ে যায় ওদের “অশালীন বিকৃত ভালোবাসা”।
বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয় নীপমঞ্জরীর তার খানিক পরেই।কুন্দকে করা শেষ মেসেজ ছিলো,”আমি পারলাম না,বাবা আমাকে মেরে ফেলছে।
ঘড়িতে রাত ন’টা।
মল্লিকা এবার থামায় তাকে।”বাড়ি যাও,কোনও আবেগে নিজের নাম জড়াবে না কাল।কেস তাহলে বাঁচাতে পারবো না আমি।বাকিটা তুমি জানো”।
আজ সকালটা একটু যেনো অন্যরকম।কাল মহালয়া কিন্তু আজ কেমন গুমোট বেঁধে আছে চারিদিক।মায়ের এবার ঘোটকে আগমন।এসব ভাবতে ভাবতেই মৃত্তিকা সেন হাতে উঠিয়ে নেয় তার কালো কোট।সবাই উপস্থিত আজ ন্যায়ের মন্দিরে।এসেছেন কুন্দনিকার মা।শুধু নীপমঞ্জরীর মা আজও আসেননি।কিছু মায়েরা বোঝেনা মাতৃত্ব শুধু নয়মাসের কষ্ট সহ্য করা অধিকারবোধ নয়,বরং নিজের ভেতর বাড়তে দেওয়া এক মান-হুষের সৃষ্টি,আরেকবার ঋতুমতি হয়ে ওঠার গর্ব,নিজেকে প্রস্ফুটিত করার এক দ্বায়িত্ববোধ আর স্বয়ংসিদ্ধা হয়ে ওঠার এক অদম্য প্রচেষ্টা।
কাঠগড়ায় খুনের আসামী নীপমঞ্জরী।
প্রশ্ন পাল্টা প্রশ্নে স্বাক্ষী হয় সততা।শায়ন বসুর জবানবন্দীতেও উঠে আসে স্কুলের বুলিং।আজ সে কাপুরুষ নয়,এক মেয়ের বাবা সে।সবার শেষে কাঠগড়ায় আসে কুন্দনিকা।
মল্লিকা জিজ্ঞেস করে,”আপনাকে কেনো যোগাযোগ করেন নীপমঞ্জরী?”
কুন্দনিকা উত্তর দেয় সবটা আরেকবার মনে করে।নীপমঞ্জরী তাকে ফোন করে বিয়ের চারমাস পর।চরিত্রহীন ব্যভিচারী স্বামীর আসল রুপটা প্রকাশ পাচ্ছে তখন রোজ।শুধু নারীসঙ্গ নয়,বিভিন্ন ওফিসের পার্টিতে নীপমঞ্জরীকে সে জোর করে অন্যের সাথে শারীরিক ভাবে লিপ্ত হতে।না মানলেই চলতো মারধর।নীপমঞ্জরীর বাবার কাছে অভিযোগ জানানো হয়,এমন বউ “ইউসলেস”।আবার শুরু হয় মানসিক অত্যাচার।বাবা ক্রমাগত বলতে থাকে “এবার শ্বশুরবাড়িতেও মানাতে পারছিস না তাহলে আত্মহত্যা কর”।এমন এক সময়ে কুন্দনিকাকে যোগাযোগ করে সে।দুজনের দেখা হলে,নীপোর গায়ের কালো দাগে সে জানতে পারে প্রত্যেক রাতের অসহনীয় রাতকাহিনী।এর মধ্যে নীপোকে বাধ্য করা হয়েছিলো দুজনের সাথে শুতে।একজন অভ্রর মানে নীপমঞ্জরীর স্বামীর ম্যানেজার আরেকজন শুধুই বন্ধু।তৈরি করা হতো ভিডিও যাতে ভয় দেখানো যায় এই বলে যে কারোর কাছে অভিযোগ করলেই বাজারে আসবে সেইসব।
এতোটা বলে কুন্দনিকাকে থামতে হয় মৃত্তিকার আদেশে।
মৃত্তিকা আদালতে পেশ করে নীপমঞ্জরীর সেইসব ভিডিও যেখানে খুব স্পষ্ট যে,কোনো এক তৃতীয় ব্যক্তি এই ভিডিওটি করেছেন।
মৃত্তিক সেন বলেন,”ইয়োর অনার,অভ্র ও তার মায়ের মত অনুযায়ী যদি এই ভিডিও স্বেচ্ছায় বানানো হয় তাহলে সেখানে নীপমঞ্জরী এমন লাশের মতন পড়ে আছে কেনো?সাধারণত যারা এমন ভিডিও বানায় তারা মুখ দেখায় না যাতে এম.এম.এস করলে কোনো অসুবিধা না হয়,কিন্তু এখানে পুরুষটির মুখ দেখা না গেলেও নীপমঞ্জরীর মুখ স্পষ্ট।সেই ছোটবেলা থেকে পুলিশ এবং শোষণের শিকার এই মেয়েটিকে বারবার মানসিক ও শারিরীক অত্যাচার করে তার নিজের বাবা।ঘরবন্দী করে সবার সাথে মেশা বন্ধ করে দেওয়া হয় তার।এবং বিয়ের পরেও এমন চরিত্রহীন পুরুষের সাথে বসবাস না করলে মৃত্যুর প্ররোচনা দিতে থাকেন তার নিজের বাবা।”
বিপক্ষ উকিল বলে ওঠেন,”এর সাথে খুনের কোনও লিংক নেই”।
“আছে ইয়োর অনার” বলে ওঠেন মৃত্তিকা সেন।
“ওবজেক্সন ওভাররুল্ড”,আদেশ দেন মহামান্য জজ্।
নীপমঞ্জরীর দিকে এগিয়ে যায় মৃত্তিকা।
“ঠিক কি কারণে ঘটেছিলো ঘটনাটা,কেনো আপনি খুন করলেন নিজের বাবাকে?”
ছাপোসা ভীতু মেয়েটা আজ সোচ্চার।নীপমঞ্জরী একটু দম নিয়ে শুরু করে সবটা।
“আচমকা আবার ফিরে আসে কাকামণি।শুরু হয় আমার ওপর আরও নোংরামি।কাকামণি বাড়িতে ফিরে আসে বাবাকে এই বলে যে তাকে থাকতে না দিলে অভ্রকে জানিয়ে দেবে সে সবকিছু।ওদিকে তখন বেড়েই চলেছে অভ্রর উন্মত্ত ভ্রষ্টামো।কুন্দনিকার পাশে থাকার আশ্বাসে আমি তখন ডিভোর্সের কথা জানাই অভ্রকে।অতএব চ্যাটার্জি পরিবার থেকে নিস্কৃত হই আমি।তখন কুন্দনিকার নিশ্ছিদ্র আশ্রয় আমার অধিকার।কিন্তু বাবা ঠিক বুঝতে পারে কোথায় যেতে পারে মেয়ে!অতএব কুন্দনিকার মায়ের থেকে জোর করে জেনে নেয় আমাদের নতুন ঠিকানা।অভ্রকেও সবটা জানায় বাবা।এবং অভ্র আমায় ঘেন্নায় কটুক্তি করে বলে বাপেরবাড়ি না ফিরলে সবাইকে দেখিয়ে দেবে ভিডিও কিন্তু বাড়ি ফিরলে ডিভোর্স দেবে সেই কথাও দেয়।”
“আর কটা দিন,তারপর মুক্তি”,কুন্দনিকাকে এই বলে সে বাড়ি ফেরে।কিন্তু কুন্দনিকা জানতো কোথাও ভুল হয়ে যাচ্ছে খুব বড়ো একটা!
বাড়িতে ফিরতেই কাকামণির থাবার কবলে পড়ে সে।কিন্তু কেউ কোনো প্রতিবাদ করেনা উপরন্তু বাবা বলে কাকামণি যা বলছে করতে।না করলে পাড়ায় সব বলে দেবে কাকামণি।মাথা হেঁট হয়ে যাবে পুরো পরিবারের।দাপিয়ে বেড়ায় পাশবিক পুরুষত্ব।খুলে দিচ্ছে একটানে গায়ের কাপড়।
বাঁধা দেওয়ার আপ্রান চেষ্টায় তখন তারস্বরে চিৎকার করছে নীপমঞ্জরী।
ঋতুস্রাবের রক্তে ভেসে যাচ্ছে তখন জনি।
নিষ্ঠুর ভাবে মুখ চেপে ধরে বাবা।চিৎকারে লোক জানাজানি হলে সমাজ জেনে যাবে মেয়ে উভয়কামী,সমাজ জেনে যাবে মেয়েকে রাখেনি স্বামী।মুখ চেপে ধরে বাবা হাতদুটো বাঁধতে বলে কাকামণিকে।আর সামলাতে পারেনা নিজেকে নীপমঞ্জরী।হাতের সামনে পেয়ে যায় কাকামণির পিস্তলটা।আত্মরক্ষার কারণে লাইসেন্স পিস্তল থাকতো তাঁর কাছে।গুলি চালায় নীপমঞ্জরী নিজেকে বাঁচাতে।পালিয়ে যায় কাকামণি।গুলি করার পরেও পেপারওয়েট দিয়ে দুবার বাবার মুখের ওপর আঘাত করে সে।নিজেকে বাঁচাতেই এই পদক্ষেপ।অনুশোচনা না,আশ্চর্য এক কঠিন নির্লিপ্ততা তার সারা মুখে।
বিপক্ষ উকিল জজের দিকে তাকিয়ে বলে, “দেখুন কতোটা সাবলীল ভাবে খুন করা হয়েছে নিজের বাবাকে যে বাবা আর্থিক ভাবে এবং পড়াশোনা করিয়ে বড়ো করেছে নিজের একমাত্র মেয়েকে।তাছাড়া এই খুন পূর্বপরিকল্পিত।নীপমঞ্জরী এবং কুন্দনিকা দেবীর মধ্যে সমকামিতাই এই খুনের কারণ।অহেতুক ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে অভ্র চ্যাটার্জিকে যিনি সন্তান নিতেও রাজী ছিলেন।ইয়োর অনার,নীপমঞ্জরী দেবী সমাজের জন্য আতঙ্ক।তাছাড়া খুন যে সেল্ফডিফেন্সে করা হয়েছে তার প্রমাণ কি?ওনাকে অবিলম্বে খুনের শাস্তি দেওয়া হোক”।
মৃত্তিকা সেন হেসে প্রত্যত্তুর করেন,”আমার উকিল বন্ধু ঠিক বলেছেন যে নীপমঞ্জরী দেবীর বাবা ওনাকে বড়ো করেছিলেন।কিন্তু স্বাবলম্বী করেছিলেন কি?পাশে ছিলেন কি মেয়ের অসহায়তায়?নীপমঞ্জরী দেবীর মতন অনেক শৈশব নষ্ট হয় এই বুলিং এর কারণে কিন্তু ছোটদের কথা শোনার কোনো বন্ধু নেই।বাবা-মা অধিকাংশেই রেজাল্ট নিয়ে চিন্তিত।কিন্তু ভিত তৈরির সময়েই আত্মগ্লানিতে ভূগতে শুরু করে বড়ো হয়ে ওঠা।আর সমকামিতা বা উভয়কামিতা নয়,দোষী সে যে মিথ্যাবাদী,যে প্রবঞ্চক,যে ব্যভিচারী।একটি মেয়ে সমকামি হলে সে অসুস্থ নয় বরং অসুস্থ সেই ব্যক্তি যে অন্যের দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাকে শারিরীক বা মানসিক ভাবে ভোগ করেন।ইয়োর ওনার একবার ভাবুন নীপমঞ্জরী কতোবার শোষিত হয়েছেন?রক্ষক বাবা তার সবথেকে বড়ো ভক্ষক।ধিক্কার এই পিতৃত্ব।যেখানে একটি পিতা একা মাতৃত্বের সংজ্ঞা আনছে আজকাল,সেই উত্তরণে এরকম পিতৃত্ব তো সমাজের অবক্ষয়।খুনটা না করলে আর কি ভাবে বাঁচতেন উনি সেদিন?আর প্রমাণ?কাকাকে খুঁজে পেলেই পাওয়া যাবে প্রমাণ।”
এই বলে শেষ করে মৃত্তিকা।
খানিক নিস্তব্ধতার পর জজ্ বলেন,”সত্য সামনে এলেও প্রমাণ চাই এবং এখানে প্রত্যক্ষদর্শী কেউ…..”
শেষ হয়না সবটা।দরজার দিক থেকে কেউ এগিয়ে এসে বলে,”প্রমাণ আমি,আমার মেয়ে নির্দোষ,আমি দোষী।মা হয়েও কোনওদিন বুকে জড়িয়ে ধরে সাহস জোগাইনি।সেদিন ওরা আবার মেরে ফেলছিলো আমার মেয়েকে।ও খুন না করলে বাঁচতে পারতোনা”।কান্নায়-সাহসে এগিয়ে এলেন নীপমঞ্জরীর মা।কাঠগোড়ায় দাড়িয়ে সবটা বলেন তিনি।
বিচার শেষ।নাম পায় নারীত্ব।সমাজে এখনও কানাঘুষো চলবে কিন্তু দেবীপক্ষের শুরুতে আরেকবার শুদ্ধ হবে ধরা।প্রয়োজনে পার্বতী,মাচন্ডী রুপ ধারণ করবে বারবার।
মল্লিকা সেনের চেম্বারে ঢোকে নীপমঞ্জরী আর কুন্দনিকা।
মল্লিকা সেন হেসে বলেন,”আজ তোমাদের জন্য প্রায়শ্চিত্ত করার সুযোগটা পেলাম,অর্থ আর বিবেকের লড়াইয়ে হেরে যাচ্ছিলাম ভীষণ ভাবে।কুন্দনিকা তুমি খুনটা করতে বলে ঠিক করেছিলে নীপমঞ্জরীকে।এমন ব্যক্তির বেঁচে থাকার কোনো অধিকার বা প্রয়োজন নেই।নীপমঞ্জরী আত্মবিশ্বাসটা হারিও না।সেদিন তুমি বাড়ি ফেরার পর যে ওটাই হতো তোমার সাথে সেটা তোমরা জেনেই যে এটা পূর্বপরিকল্পিত করেছিলে,এতে কোনও অন্যায় নেই।বিষবৃক্ষকে শিকড় থেকে উপড়ে ফেলাই ঠিক।ভালো থাকো নিজেকে ভালোবেসে।বাঁচতে শেখাটা খুব সুন্দর।”
ধন্যবাদ বলে এগিয়ে যায় এযুগের ”অর্ধনারীশ্বর”।শরতের মেঘ ভেসে আসে তরল রদ্দুরে।দুরে ধ্বনিত হয়,
“রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি॥”
কলমে সুষ্মিতা রায়চৌধুরী, নিউ জার্সি
নেশা এবং পেশায় ব্লগার এবং লেখিকা।সিনিয়র ডিপ্লোমা ওড়িশি নৃত্যে এবং ভালোলাগা নতুন রন্ধনপ্রক্রিয়া।