মানিক নদীর ধারে বসে ছিলো অনেকক্ষণ ধরে। ধুরন্দরের আসার কথা ছিলো। গতোকাল মাঝিরচর বাজারে দুইজনের দেখা হয়েছিলো। ধুরন্দর আজকে এই নদীর ধারে আসতে বলেছিলো তাকে। খুব গুপনীয় নাকি কথা আছে তার। তাই এই কড়া রদ্রের মাঝেও ধুরন্দরের জন্য মানিকের এই অপেক্ষা।
বেশ কিছুক্ষণ কাটার পর…
ধুরন্দর খুব দ্রুত হেটে মানিকের কাছে এসে বললো,
মেলা দেরী কইরা ফালাইলাম রে দোস্ত।
মানিক: (বেশ রাগান্বিত হয়ে) এতো দেরী করলি কেন রে হারামজাদা?
আমি তো মেলাক্ষণ থাইকা এই কড়া রইদের মধ্যি বইসা আছি। তৃষ্ণায় প্রাণডা না এইবার বাইর হইয়া যায়গা।
ধুরন্দর: রাগ করিস না দোস্ত আমার। তুই তো জানস খাটাস মামা–মামী‘র বাড়ির মধ্যি থাকি। একটা কাজ শেষ হইতে না হইতেই আরেকটা দিয়া বইয়া থাকে। আর ভালালাগে না।
মানিক: হইছে হইছে তোর দুঃখ জনম ভর থাকলো আর কইমলো না। অহন কাজের কথায় আয় দেহি। (কন্ঠে রাগের কমলতা) আমারে ডাকছোস কিরলায়?
ধুরন্দর: দোস্ত তুই তো জানস তুই ছারা আমার সুখ–দুঃখের কথা কওনের মতো আর কেউ নাই।
ধুরন্দরের কথা শেষ হতে না হতেই মানিক এবার চেতে গিয়ে বললো,
আসল কথাখানা ক তো দেহি। এই রইদের মধ্যি আর ভালা লাগাতাছেনা।
ধুরন্দর এইবার একখানা বিড়ি ধরিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছেরে বললো,
দোস্ত আমি মনে কয় লাকীবতি‘রে খুব ভালাবাইসা ফালাইছি রে।
মানিক: হাছা কথা‘নি?
ধুরন্দর: হ দোস্ত আমি লাকীবতি‘রে ভালাবাইসা ফালাইছি। তুই একটা কিছু কর দোস্ত।
মানিক: (মাথা নাড়ায়া) আমি তোর লগে কাইলকা বিস্তারিত কথা কমু নে। অহন তুই যা। তুই কাইলকা মন্ডলে‘র ঘাটে আম গাছ তলায় বৈকালে দেহা করিস। আর অহন আমারে একটা বিড়ি দিয়া যাতো দেহি, কি করণ যায় কাইল দেখমু নে।
ধুরন্দর: (মানিককে বিড়ি ধরিয়ে দিয়ে) দোস্ত কিছু একটা কিন্তু তোর করোনি লাগবো।
মানিক: হ হ অহন যা। মেলাক্ষণ কাম কাইজ বাদ দিয়া তোর কথা হুনবার লাই বইয়া আছিলাম। অহন যা কাম কাইজ সারন লাগবো।
ধুরন্দর এই বার বিদায় নিয়ে চলে গেলো।
ধুরন্দর চলে যাওয়ার পর মানিক বাড়িতে এসে মাটির কলস থেকে ঢক ঢক করে পানি পান করে বিছনায় শুয়ে পরলো।
ভাবতে লাগলো,
আহারে লাকীবতি!
তোর‘লাই কতো মাইনসে যে খাওন–দাওন ছাইড়া দিছে তা জানে কিডায়? চোখ দুই খান যেনো পিরিতের সমুদ্র, মনে কয় যহন দেহি তহনি ডুইবা মরি। আর হারামজাদায় কইলোডা কি?
ওর লাইগা লাকীবতি‘র লগে কথা কওন লাগবো।
আহারে! মনে মনে কতো স্বপন যে দেহি লাকীবতি‘রে লইয়া।
ওরে কতো ভালোবাসি তা কেবল আমি‘ই জানি।
এই তো সেই দিন গন্ঞ্জে গিয়া লাকীবতি‘র লাই আয়না – চিরনী কিনছিলাম। আওনের পথে দেহি লাকীবতি জন্ঞ্জালী বুড়ির বাগানে একলা খাড়ায়া আছে। বুগলে যাওনের সাথে সাথে কইলো
ও‘মা মানিক দা দেহি!
তা কই গেছিলা?
আমি কইলাম,
গন্ঞ্জে গেছিলাম লাকীবতি।
এই দেহ তোমার‘লাই কি কিইনা আনছি।
কথা কোনরহম শেষ হওয়ার আগেই লাকীবতি আমার হাত থাইকা আইনা–চিরনী খপ কইরা নিয়া কইলো,
হয়ছে হয়ছে আমার লাই তোমগরে হগ্গলে‘র দরদ দেহি উছলায়া পরে। অহন দুই খান পিয়ারা পাইরা দিয়া যাও দেহি।
লাকীবতি‘র আদেশ হুনার পর কি মনে আর দেরি সয়? মনের মানুষ বইলা কথা!
তারাতারি মাথা থাইকা গামছা খানা খুইলা কোমরে বাইন্দা গাছে উইডা দুই–তিনখান কাচাপাকা পিয়ারা নিচে ফালাইলাম। পিয়ারা গুলানে হাতে তুইলাই লাকীবতি কইলো,
অহন নামো বুড়ি দেখলে তোমার হাড্ডি–গুড্ডি ভাইঙ্গা ফালাইবো‘নে।
এই বইলাই দৌড় দিয়া চইলা গেলো। মনে মনে ভাবতাছিলাম,
মাইডার মনে বুজিল কারো‘লায় কোন দরদ নাই। ভাবছিলাম নিচে নাইমা মন ভইরা দুইখান কথা কমু। তা আর হইলো না।
আর আইজকা ধুরন্দর হারামজাদায় আমারে কড়া রইদের মধ্যি খারা কইরা রাইখা আমার পরাণডারে লইয়া টান দিলো।
মনডায় যে কি কয়,
কি যে করি হারামজাদারে?
ভালোবাসার বুজিল আর মানুষ পাইলো না হারামজাদায়!
পরদিন…
মানিক বিকেলে মন্ডলে‘র ঘাটে যেয়ে দেখে ধুরন্দর আগে থেকেই এসে গাছের নিচে বসে বিড়ি টানছে।
কাছে গিয়ে ধুরন্দরের মুখ থেকে বিড়ি নিয়ে মনের সুখে দুইটা টান দিলো মানিক।
ধুরন্দর: আইলি দোস্ত।
মানিক: হ হ আইলাম। তা তুই আইজকা আমরা আগেই আইয়া পরছোস দেহি?
ধুরন্দর:হ দোস্ত। কোন ভাবেই নিজের মনডারে আটকায়া রাখবার পারতাছিলাম না। কাম কাইজ ফালায়া পলায়ে আইয়া পরলাম। খাটাশ মামা–মামী‘রে দিয়া তো আর আমার কাম হইবো না। তাই তোর কথা হুনবার‘লাই ছুইডা আইলাম।
আইচ্ছা দোস্ত কি ভাবলি আমারে নিয়া? একটু ক দেহি। আমার আর দেরি সইতাছেনা।
মানিক: (কন্ঠে রুক্ষতা) আ‘মর জ্বালা! আমি কি কাম কাইজ বাদ দিয়া তোমার ভালাবাসা নিয়া বইসা আছিলাম‘নি?
আইচ্ছা হোন, আমি তোরে আইজকা একটা পরিষ্কার কথা কইবার চাই।
(তারাতারি) আমিও লাকীবতি‘রে মেলাদিন ধইরা ভালাবাসি।
ধুরন্দর: কস কি দোস্ত?
আমারে তুই মাইরা ফালায়লি। আমি ওরে ছারা বাচুম নারে দোস্ত।
মানিক: হোন তোর যে অবস্থা আমারো একি অবস্থা। তার চায়া বরং চল এক কাম করি।
ধুরন্দর: (বেশ কষ্ট নিয়ে এবং মাথা নিচু করে) কি কাম?
মানিক: চল গিয়া মদনের লগে দেহা করি। হুনলাম মদন নাকি গতকাইল শহর থাইকা বাড়ি আইছে। আমরা তো মূর্খ। মদন একজন শিক্ষিত মানুষ আর হেতি আমগরে ছুডো বেলার খেলার সাথি। মনডা কয় মদন আমগরে কোন পরামর্শ দিবার পারবো যা আমগরে দুইজনারি কামে লাগবো ।
ধুরন্দর: (বেশ উৎফুল্ল হয়ে)আইচ্ছা দোস্ত চল তাইলে মদনের সাথে দেখা কইরা আসি।
মানিক:তাইলে চল।
পথেই মদনের সাথে দেখা হয়ে গেলো দুজনার।
মদন: কি মিয়ারা কৈ যাও অমন হন্তদন্ত কইরা?
মানিক: মদন তোমার সাথে দেখা করণের লাই তোমার কাছেই যায়তাছিলাম।
মদন: তা কেমন আছো তোমরা হগ্গলে?
মানিক: (একটু তারাতারি করে) হ ভালা আছি।
আসলে আমরা দুইজন একটু বিপদে পরছি। গতোকাইল হুনলাম তুমি শহর থাইকা বাড়িত আইছো। তুমি শিক্ষিত মানুষ আর আমরা হইলাম গিয়া গন্ড মূর্খ মানুষ। তাছারা তুমি আমগরে ছোড বেলার খেলার সাথি। তাই ভাবলাম তোমার ধারে আইলে হয়তো কোন সুরাহা তুমি দিবার পারবা।
মদন: আইচ্ছা! কি কথা কও দেহি একবার হুইনা লই। দেহি কোন সুরাহা দিবার পারি কিনা।
এরপর ধুরন্দর মদনকে বিস্তারিত খুলে বললো।
মদন সব কিছু শোনার পর দুইজনকেই বললো,
বিষয়টা বড় ভাববার বিষয়।
আইচ্ছা এক কাম করো,
তোমরা কাইল একবার আমার বাড়ির মধ্যি আহো দেহি। কি করণ যায় দেখমু‘নে।
এইবার মানিক এবং ধুরন্দর বিদায় নিলো।
মানিক আর ধুরন্দর চলে যাবার পর মদন একটা সিগারেট ধরিয়ে মনে মনে বললো,
লাকীবতি‘র সাথে আমার বিয়ার পাকা কথা হইছে। কাইল বাদে পরশু মঙ্গল বারেই বিয়া। বিয়ার দিনই শহরেও লইয়া যামু। আর বলদ দুইডা আইছে লাকীবতি‘রে নিয়া টানাটানি করবার‘লাই। যাউগ্যা, কাইল এই গন্ড মূর্খ দুইডারে একটু বুদ্ধি খাটায়া ধবল ধোলাই করন লাগবো।
পরদিন…
মানিক আর ধুরন্দর এক সাথে মদনের বাড়িত আসলো।
মদন: (বেশ উচ্ছাসিত হয়ে)
আয়ছো মিয়ারা? তোমগরে লাইগায় অপেক্ষা করতাছিলাম। তা আহো দেহি বইসা কথা কই।
হুনো মিয়ারা,
তোমরা তো দুইজনায় লাকীবতি‘রে ভালাবাসো। তাই একজনের হয়া যদি আমি কথা কই তাইলে তো আরেক জন আবার আমার উপরে রাগ করবা। তা আমি একটু অন্য চিন্তা করছি আরকি। তা হইলো,
তোমরা তো গন্ঞ্জের মেলায় গিয়া লটারির ড্র কেমনে হয় তা দেখছো তাই না?
(ধুরন্দর আর মানিক একসঙ্গে)
হ হ দেখছি তো।
মদন: আইচ্ছা তা আমি যেইডা চিন্তা করছি সেইডা হইলো তোমগরে দুইজনের ভিতর ড্র করমু। যেহেতু লাকীবতি‘র লাই তোমগরে দুইজনের এই ড্র তাই আমি ড্র‘র নাম লাকীবতি‘র নামের সাথে মিল রাইখা দিবার চায় লাকী ড্র।
ড্র মানে বুঝো তো মিয়ারা?
ধুরন্দর: হ হ বুঝি ড্র মানে হইলো আমগরে দুইজনার মধ্যি যার নাম উঠবো হেতি লাকীবতি‘রে পাইবো।
(মদন কিন্ঞ্চিত হেসে)
হুমমম, বুঝবার পারছো।
তা তোমগরে এইহানে কোন রকম দিমত আছে‘নি?
মানিক : না নাই।
ধুরন্দর: না না নাই।
মদন: আইচ্ছা তাইলে চলো শুরু করি।
এই বলে মদন পান্ঞ্জাবীর পকেট থেকে দুইটি কাগজের টুকরা বের করে বললো,
তোমগরে দুইজনের নাম এই কাগজ দুইখানে আমি লিইখা রাখছি। টেবিলের উপরে রাখনের পর আমি চোখ বন্ধ কইরা একটা কাগজ উডামু। আর হ্যা কাগজ উডানোর পর তোমগরে দুইজনার সাথে আমি আলাদা ভাবে কথা কমু।
অহন শুরু করি?
মানিক এবং ধুরন্দর ‘আইচ্ছা‘ বলে সম্মতি দিলো।
মদন: এই যে টেবিলের উপরে কাগজ দুইখান রাখলাম। এই যে চোখ বন্ধ করলাম। আর এই যে এক খান কাগজ উডায়লাম।
চোখ খুলে মদন বললো,
অহন তোমরা বাইরে যাও। এক এক কইরা তোমগরে দুইজনরে‘ই আমি ডাকমু।
ধুরন্দর আর মানিক বাইরে যাওয়ার পর মদন হাসি দিয়ে কাগজ খুলে নিজের নামটা পড়লো।
আগের রাতেই মদন কাগজ দুইটার ভিতরে নিজেরই নাম লিখে রেখে ছিলো।
এইবার মদন ডাকলো – ধুরন্দর আহো।
ধুরন্দর: (মদনের কাছে এসে কাপা কাপা গলায়) কার নাম উঠছে মদন?
মদন : আরে মিয়া আহো! আরো বুগলে আহো। বেশী জোরে কথা কওন যাইবো না। নাইলে আবার মানিকে হুইনা ফালাইবো। হুনো তোমার নাম উঠছে। কিন্তু মানিক মিয়ারা এই কথা বুঝবার দেওন যাইবো না। বইঝা ফালায়লে কোন ঝামেলা করবার পারে। হুনো আমি লাকীবতি‘র লগে কথা কমু তোমারে লইয়া। আমি কইলে লাকীবতি রাজি হইবো। তুমি আগামীকাইল গন্ঞ্জে যাওনের রাস্তার পাশে শিমুল গাছের তলায় ঝোপের বাম পাশে বইসা থাকবা। দেইখো কেউ যেনো টের না পাই। আমি এর মধ্যি লাকীবতি‘র সাথে কথা বইলা তোমার কাছে দিয়া আমু’ নে। একটু তারাতারি যাইও মিয়া। অহন যাও তয় মানিক যেনো টের না পাই। মুখ খানা একটু গুমরা কইরা রাইখো মিয়া।
যাও যাও।
ধুরন্দর বাইরে আসার পর মদন ডাকলো,
কৈ গো মানিক মিয়া? এইবার তুমি আহো।
মানিক আসার পরও মদন একি কথা বললো যে কাগজে মানিকের নাম উঠেছে। তাকে আগামীকাল এখান থেকে মাইল খানেক দূরে পুরান জমিদার বাড়িতে থাকতে বলা হলো। লাকীবতি‘রে সেখানেই নিয়া যাওয়া হবে।
এইবার দুইজনকে একখানে বসিয়ে মদন বললো,
তোমরা কি তোমাগরে দুইজনার লাকী ড্র‘র ফলাফল পাইছো মিয়ারা?
(দুইজনেই মুখ গোমরা করে)
হ হ পাইছি।
অহন যাও তাইলে। আমার মেলা কাম কাইজ পইরা আছে।
মানিক আর ধুরন্দর দুইজনে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলো। যাওয়ার পথে দুজনেই মনে মনে মনের সুখে হেসে দুইজনাই দুইজনরে গাল মন্দ করতে করতে বাড়িতে গেলো।
পরদিন ধুরন্দর আর মানিক দুইজনেই সকাল সকাল দুইজনার নির্দিষ্ট যায়গায় চলে আসলো। আর অন্য দিকে মদনের সহিত লাকীবতি‘র বিবাহ সম্পূর্ণ হলো।
সন্ধা হওয়ার পর ধুরন্দর আর মানিক দুইজনেই বাড়ি ফিরতে লাগলো।
দুইজানরি মনে ভাবনা হয়তো মদন মিয়া লাকীবতি‘রে রাজি করাইতে পারে নাই। নয়তো অন্য কোন সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। তিন রাস্তার মোরে বাশ বাগানের নিচে মানিক আর ধুরন্দরের দুইজনের সাথে দুইজনার দেখা হলো ।
ধুরন্দর: তা মানিক যে! কই থাইকা আইলা?
মানিক : আর কইস না গরু দুইডারে সকাল থাইকা খুজতে খুজতে জানডা এক্কেরে নাই হয়া গেলো।
তা তুই কই থন আইলি দোস্ত?
ধুরন্দর : গেছিলাম একটু গন্ঞ্জে। মামী পাডায়ছিলো।
এরই মধ্যে জন্ঞ্জালী বুড়ির গলার আওয়াজ শুনতে পেলো দুজনেই।
গীতের আওয়াজ। এইদিকেই আসছিলো ।
মানিক: বিষয়ডা কি?
বুড়ির আইজকা মনডা এতো সরল কিরলায়? বুড়ির মনে আইজকা এতো ফুর্তি আইলো কই থাইকা?
ধুরন্দর: আমিও তো সেইডায় ভাবতাছি।
বুড়ি মানিক আর ধুরন্দরের কাছে আসতেই মানিক বললো,
কি গো জন্ঞ্জালি বুড়ি! তা তোমার মন আইজকা এতো ভালা?
বুড়ি : (একটু রেগে) মনডা কি তগর দেইখা আন্দার কইরা থাকন লাগবো‘নি?
(কিন্ঞ্চিত হেসে) আমগরে লাকীবতি‘র লগে মদনা‘র বিবাহ হইলো যে! তাগরে মন্ডলের ঘাটে বিদায় দিয়া আইলাম।
আহ্ – দুইডারে বেশ মানায়ছে।
এ কথা বলে বুড়ি আবার গীত ধরে বাড়ির পানে হাটা দিলো।
বুড়ির কথা শুনে মানিক আর ধুরন্দর দুইজনেই ‘থ‘ খেয়ে গেলো।
মানিক: বুড়ি কইলো কি?
তাইলে কি মদন আমগরে দুইজনরেই ঠক দিলো।
দুইজনেই মন্ডলের ঘাটের দিকে দৌড় দিলো। গিয়ে দেখলে বর কনে সমেত যাত্রী বোঝায় নৌকা নদীর মাঝ বরাবর দিয়া এগিয়ে যাচ্ছে। দূর থেকে টিম টিম করে জলা হেরিকেনের আলো দেখা যাচ্ছে।
এইবার ধুরন্দর আর মানিক দুজনে মদনের চালাকি বুঝতে পারলো। কিন্তু এখন আর কিছুই করার নেই।
ধুরন্দর: (নদীর দিকে চেয়ে) মদন বড্ড চালাকি করলো আমগরে দুইজনার লগে।
এবার দুইজন মনের দুঃখে দুইজনের গলা ধরে নদীর ধারে কাদঁতে লাগলো। সে ক্রন্দন মাঝ নদীতে বর কনে সমেত নৌকা বোঝায় যাত্রীরা কেউ না শুনলেও আকাশ–বাতাস স্বাক্ষী থাকলো।
লেখক পরিচিতি : মিসবা তুহিন, জেলা-জামালপুর, থানা- দেওয়ানগঞ্জ,বাংলাদেশ। গল্প লিখি। অব্যক্ত যন্ত্রনা, মৌন অভিমান, হাসি-কান্না, প্রেম – ভালোবাসা ও বাস্তবতার আলোকে কথা মালা গাঁথি।ভালো লিখি কিনা জানি না। লেখক হবো কিনা ভাবিনা।তবে লিখে যাবো আমৃত্যু।