গুড মর্নিং কলকাতা আমি আর.জে শ্রেয়া চলে এসেছি আবার আপনাদের সাথে আড্ডায় । সকাল থেকেই হালকা বৃষ্টি হচ্ছে আজ আর ওয়েদার টা একদমই রোমান্টিক তাই আজ গান গুলো বাজবে আপনাদের পছন্দের , চলুন দেখেনি প্রথম গানের অনুরোধ কে করেছেন । কলকাতা থেকে অয়ন রায় , অয়ন বাবু অনুরোধ করেছেন ‘ ভালোবাসার গান ‘ তো আয়নবাবু এই রইলো আপনার ভালোবাসার গান।
একা অয়ন –
রেডিওর ভলিউম টা কমিয়ে দিল অয়ন , না গানটা তার সবথেকে প্রিয় গান ঠিক ই কিন্তু আজ প্রথমবার শ্রেয়া তার নাম বলেছে । মনটা খুব খুশি হয়ে উঠলো অয়ন এর । গলার স্বর শুনেও যে কেউ কারোর প্রেমে পরতে পারে তা বোধহয় অয়ন এর গল্প না পরলে জানা যায় না । সেই উচ্চ মাধ্যমিক এর সময় থেকেই অয়ন এর রেডিও শোনার নেশা তবে শ্রেয়ার সেই মন ভুলানো স্বর প্রথম শুনেছিল ইঞ্জিনিয়ারিং যখন পাস করছে তখন । অয়ন এর সমবয়সি অনেকেই তখন ফেসবুক এর প্রথম প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে , তবে অয়ন এর ওই মোবাইল জিনিস টা একদম পছন্দের না । ওই মোবাইল টাই তো যত নষ্টের মূল। সেদিন যদি মোবাইলে কথা বলতে বলতে ওর বাবা গাড়ি না চালাতেন তবে আজ হয়ত ওর বাবা বেঁচে থাকতেন। যাক সেসব তেতো স্মৃতি কে মোটেই ফিরিয়ে আনতে চায়না অয়ন এখন। অয়ন এখন আই.বি. এম. এর সফওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার , মা আর ছোটভাইকে নিয়ে বেশ ভালই আছে সে। তবে কষ্ট একটাই অমন মন ভুলানো যার স্বর তারসাথে একবার দেখা করতে চায় অয়ন । তার চোখ এ চোখ ফেলতে চায় এমন মধুর যার স্বর , তার চোখ গুলো কতই না মিষ্টি হবে কেমন দেখতে হবে তাকে? এই প্রশ্ন গুলোই সর্বদা অয়নকে তাড়া করে বেড়ায়। দেখা একদিন করবেই সে ,নিশ্চই করবে। ও যখন কথা বলে ঠিক যেনো বৃষ্টি পরে, ও যখন হাসে অয়ন এর চোখের সামনে ভেসে ওঠে মুক্তোর মত ঝলমলে এক সারি দাঁত। রোজ সকালে সাতটার সময় রেডিওতে শ্রেয়া আসে , না ঠিক রেডিওতে না তখন অয়ন এর মনেও শ্রেয়া আসে। ওই সময়টাতে শ্রেয়া ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারেনা অয়ন। রোজ এই সময়টুকুর জন্য ও নিজেকে হারিয়ে ফেলে। শ্রেয়া স্বর, হাসি সব যেনো আস্তে আস্তে পাগল করে দেয় অয়ন কে। সকালের এই শো তে শ্রেয়া মাঝে মাঝেই সকলের অনুরোধ করা গান শোনায় । রোজ ই অয়ন একটা করে চিঠি লিখে তার পছন্দের গানের অনুরোধ করে ,এই আশায় যে কোনো একদিন তো শ্রেয়া তার পছন্দের গান শোনাবে, কোনো একদিন তো শ্রেয়ার গলায় সে নিজের নাম শুনবে । আর আজ সেই দিন ছিল ।
রাধারাণীর কথা-
সল্টলেকের অফিস থেকে বেরিয়েই কাল গগলস টা পড়ে নিল রাধারাণী। মুখের মাস্কটাও সামান্য তুলে নিল। ক্যাব বুক করাই ছিল,অফিসার মেইন গেটের বাইরে অপেক্ষা করছিল ক্যাব। গটগট করেহেতে গিয়ে ক্যাব ওয়ালা কে একঝলক দেখেই উঠে পরলো রাধারাণী। ক্যাব ওয়ালা ছেলেটির বয়স কম কথাও কম বলে রাধারাণী বসার পরেই এ.সি টা চালু করে ক্যাব ছুটিয়ে দিল। গগলস আর মাস্কটা এবার খুলে ফেললো রাধারাণী। একটু আরাম করে হেলান দিয়ে বসে চোখ বুজলো ও। ১৫ মিনিট মতন হয়েছে সবে , হালকা তন্দ্রা মতন এসেছে সবে ক্যাব ড্রাইভার এর ডাকে ঘুম ভেঙে গেলো হটাৎ। ‘ দিদি চলে এসেছে ‘ এটুকু বলেই সে আবার সামনে ঘুরে বসে রাধারাণীর নামবার অপেক্ষা করতে লাগলো। জানলা দিয়ে বাইরে বাড়ির মেইন গেট টা উকি মারছে দেখে ,গগলস আর মাস্কটা আবার পরে বেরিয়ে এলো রাধারাণী। বাইরে ক্যাব ওয়ালার হাতে ৫০০ টাকার একটা নোট দিয়ে ‘ কিপ দা চেঞ্জ ‘ বলে মেইন গেট দিয়ে ঢুকে গেলো সে। বাড়িতে ঢুকেই বুঝলো আজ আবারো সেই নাটক হবে, রাধুদা নতুন পর্দা আর সোফা কভার লাগাচ্ছে দেখেই বুঝতে পেরেছে সে। আবারো আজ তাকে দেখতে ছেলে আসবে। এই জিনিসটা একদম অসহ্য লাগে রাধারাণীর। এইসব কথা ভাবছে ঠিক তখনই একটা গম্ভীর গলার ডাকে তার আবার খেয়াল ফিরলো ‘ তোমার ঘরে একটা দামী ফেসপ্যাক রাখা আছে , স্পেশাল অর্ডার দিয়ে আনানো যাও রেডি হও ভালো করে ‘ এটুকু বলেই চুপ থাকলে হতো, কিন্তু মা আরো বলে উঠলো ‘ যা কাকের মতন গায়ের রং পেয়েছ , কে জানে কে পছন্দ করবে তোমায় ‘। রাধারাণীর রাগটা হটাৎ ই চোখের জলে পরিণত হলো। ছুটে গিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে দিল সে। এই কথাগুলো সেই ছোটবেলা থেকে শুনছে ও গায়ের রং কালো বলেই ওর মায়ের এত চিন্তা। আজ পর্যন্ত যতজন ওকে দেখতে এসেছে প্রত্যেকেই টাকার জন্য এসেছে। রাধারাণীর মা বড়ো ব্যবসায়ী কোম্পানির মালকিন। সেই বাড়ির মেয়েকে বিয়ে করলে লাভবান হবে জেনেই প্রত্যেকে এসেছে। রাধারাণী অবাক হয়ে দেখেছে প্রত্যেকেই যেনো বিয়ে না ব্যবসা করতে এসেছে । কেউ ঘুরিয়ে কেউ বা মুখের উপরেই বলেছে – মে যেহেতু কাল তাই যৌতুক চাই প্রচুর, খানিকটা গা সওয়া হয়ে গিয়েছে ব্যাপারটা তাই তার কাছে। অথচ এই রাধারাণীর গলার স্বরের ভক্ত সংখ্যা নাইনাই করে পুরো কলকাতায় ছড়িয়ে আছে ।
প্রায় তিন বছর আগে যখন রেডিও চ্যানেল ওয়ান এ গিয়েছিল ও তখনই প্রথম দেখায় ওর গলার স্বর শুনে ও সিলেক্ট হয়ে যায় , তখনই ওদের চ্যানেল হেড দীপ্ত দা বলেছিল ‘ দেখ ওসব রাধারাণী মার্কা অ্যান্টিক নাম চলবে না ‘ ঠিক সেদিন থেকেই রাধারাণী ওর নাম পাল্টে শ্রেয়া নামে আর.জে হিসাবে জয়েন করে । ওর সব সহকর্মী আর.জে দের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ আছে সেখানে তারা প্রায় রোজ ই ছবি আপলোড করে এমনকি মাঝে মাঝে ফ্যানদের সাথে মিট আপ ও করে । রাধারাণী এসব করে না,কথাও যেন ও নিজের মনেই জানে যারা আর.জে শ্রেয়াকে ভালোবাসে তারা কখনোই রধারানিকে ভালোবাসবে না । তাই ও এই দুটো জীবনকে আলাদা ভাবে বাঁচতে চায় । এমনকী ওকে যারা দেখতে আসে তাদেরকেও কখনো বলে না । ওর অনুরোধে ওর মাও এই কথা কাউকে বলেনা। দুটো জীবনকে আলাদা করে বাঁচার মধ্যেই কোথায় যেনো একটা ভালোলাগা খুঁজে পায় ও।
মায়ের কথা –
‘ দেখ বাবা বয়স্ ত ভালই হলো , ভালো একটা চাকরিও করিস তুই তাহলে বিয়ে করতে অসুবিধাটা কোথায় তোর। আঠাশ বছর বয়স কিন্তু ছেলেদের জন্য যথেষ্ট । আমার বয়স হচ্ছে তোর আর তোর ভাই এর একটা গতি না দেখলে আমি মরতেও পারছি না, সব সময় অত জেদ ভালো না ‘ কথা গুলো একটানা বলে মা পাশে ঘুরে বসল। অয়ন বেশ বুঝতে পারছে আজকে তাকে মায়ের কথা রাখতেই হবে, এতদিন ধরে এটা ওটা ছুতো দিলেও আজ মায়ের উদ্যম প্রবল, যেনো আজকেই তার বিয়ে দিয়ে দেবেন। এমনিতে মায়ের উপর কোনো কথা বলে না অয়ন তবুও আজ যেনো একটু রাগ হলো, কোথাও যেনো ওর মন বলছে আজ যদি মেয়ে দেখতে যাওয়ার জন্য মা কে হ্যাঁ বলে দেয় সে আর.জে শ্রেয়াকে হারিয়ে দেবে সে। তবুও প্রত্যেকবারই মতন মাকে না সে বলতে পরলো না । ‘ এই তো আমার সোনা ছেলে, যা এবার চটপট রেডি হয়ে নে আজ বিকেল পাঁচটার মধ্যেই পৌঁছতে হবে কিন্তু ‘ বলেই মা হাসি হাসি একটা মুখ নিয়ে বেরিয়ে গেলো । হাতঘড়িতে চট করে চোখ বুলিয়ে অয়ন দেখলো তিনটে বাজে , সোফা ছেড়ে উঠে দাড়ালো সে । মাকে হ্যাঁ বলে দিলেও কোথাও যেনো একটা খারাপলাগা ঢুকে পড়েছে ওর মনে। সকালেই রাধারাণী ওর নাম নিল , হতেই পারে এটাই ওদের কাছে আসার শুরু। কিন্তু মাকে ও কোনোভাবেই না করতে পারেনা কাজেই একটা দোনামনা ভাব আর বুকে একটা খারাপ লাগা নিয়ে একটা কুইক শাওয়ার নিতে চলে গেলো সে ।
ছোট্ট একটা পাখি –
খারাপ লাগলেও মায়ের কোনো কথা ফেলতে পারেনা রাধারাণী। সেই ছোটবেলা থেকে মা – ই তো ওকে মানুষ করেছে, ও যখন ক্লাস টেন এ পরে তখন ওর বাবা ওদের ছেড়ে চলে যায়, কি কারণে আজও জানেনা ও, ওর মাও এই ব্যাপারে কখনো কিছু বলেনি ওকে। রাধারাণীর বাবাও ওর মতন চাপা বর্ণের ছিল তাই হয়তো ওর অজান্তেই কখনো ও ওর মা- কে বাবার কথা মনে করিয়ে দেয়, সেই জন্যই ওর মা হয়তো কখনো একটু বেশিই রেগে যায় ওর উপরে। কিন্তু মা ওকে ভালোবাসে খুব এটুকু বোঝে ও ।
রাধারাণীর নাক,চোখ,মুখ ভালই তার দোষের মধ্যে ওই একটাই তার গায়ের রং কালো। বর্তমানে সমাজ নাকি বেকার ছেলে আর কালো মেয়েদের কোনো মতেই মানতে পারে না। মায়ের দেওয়া ফেসপ্যাক টা সম্ভবত কোনো বিদেশী কোম্পানির, বেশ ভালো ওটা তবে তাতে রাধারাণীর যে রূপের রূপের কোনো তারতম্য ঘটলো সেটা না। ফেসপ্যাক টা লাগিয়ে ঘরের মাঝে রাখা বিন বাগটায় হেলান দিয়ে বসতেই সামনের জানলায় নাম না জানা একটা কালো পাখিকে উরে বসতে দেখলো ও। ক্ষনিকের জন্য রাধারাণী ভাবলো ওই পাখিটাও তো কালো,কই তার জন্য তো ওকে কখনও কথা শুনতে হয়না, ইশ! আমিও যদি একটা পাখি হতাম।
বিকেল চারটে তিরিশ –
ফ্রেশ হয়ে ঘরে ঢুকে অয়ন দেখলো চারটে তিরিশ বাজে। দিনের এই সময়টা অয়ন এর খুব ভালো লাগে। ঠিক এই সময়টাতেই যেনো রোদ আকাশ থেকে ছুটি নেয়, আর কলকাতার আকাশটা যেনো একটা পাতলা সেলোফেনে ঢেকে যায়। যেই গাছগুলো সারাদিন রাস্তার লোকেদের ছায়া দিয়েছে তারাও যেনো একটু ক্লান্ত হয়ে পরে। অয়ন ওর রুমের দক্ষিণ দিকের জানলা দিয়ে একবার ব্যস্ত কলকাতাকে দেখে নিয়েই রেডি হতে লাগলো। ওর সবথেকে প্রিয় গোলাপী রঙের জামাটা পরে নিয়ে আয়নার সামনে দাড়িয়ে একবার দেখে নিল নিজেকে, আজ প্রথমবার মেয়ে দেখতে যাচ্ছে সে, যদিও ও জানে দেখে এসে মাকে ও না – ই বলবে তবুও মেয়ের বাড়ি থেকে ওকে রিজেক্ট করুক সেটা মোটেও চায়না অয়ন। রেডি হয়ে বাইরে আসতেই দেখলো ওর মা এদিকেই আসছে, একটা খুব সুন্দর দেখতে শাড়ি পড়েছে ওর মা, খুব ভালো দেখাচ্ছে। ছোটবেলা থেকেই মা সাজলে ওর খুব ভালো লাগে, আজও লাগলো। ‘ চল চল, দাড়িয়ে পড়লি কেনো ‘। ‘ হ্যা চল ‘ বলে নিচে নেমে এলো ওরা। অন্যান্য সময় ও নিজে ড্রাইভ করলেও আজ ওর মা ড্রাইভারকে সাথে নিল। প্রায় কুড়ি মিনিট পর যেই বাড়িটার সামনে গাড়ি এসে থামলো সেই বাড়িটা বেশ বড়ো। বাইরে সুন্দর দেখতে একটা বাগানও দেখলো অয়ন। অয়ন এর মনের খারাপ লাগাটা হটাৎ যেনো আরো বেড়ে গেলো। কোনো কিছুই তার ভালই লাগছে না। বাড়ির ভিতরটা বেশ গোছানো, খানিকক্ষণ এটা সেটা কথা বলার পর মা বলে উঠলো ‘ আপনার মেকে আনুন এবার ‘। একটু বাদেই একটা মেয়ে কে সাথে নিয়ে একজন ঘরে ঢুকে এলেন। অনিচ্ছা সত্বেও মেয়েটির চোখে চোখ পরে গেল অয়ন এর। মেয়েটির গায়ের রং বেশ কালো, তবে মুখ চোখ বেশ সুন্দর। তবে ওই একবারই , অয়ন এর তখনও সকালের সেই কথাগুলোই মনে পরছিল। যাকে কোনোদিন দেখেইনি তার প্রতি এই প্রেম আর তাকে দেখার এই অমোঘ টান কোনো ভাবেই কাটিয়ে উঠতে পারছিলো না অয়ন। ওদিকে যে কি কথা চলছে,ওর মা ওর প্রশংসা কতটা বারিয়ে করছে তাতে মন নেই ওর। আরো কিছুক্ষন নানা কথা বলার পর মেয়েটির মা বলে উঠলেন ‘ যাওনা তোমরা নাহয় একটু আলাদা কথা বলো ‘ হটাৎ করেই মনের বিরক্তিটা আরো এক ধাপ বেরে গেল অয়ন এর। কিন্তু ওর মায়ের চোখের ইশারা দেখে অয়ন বুঝলো একা কথা বলতে তাকে যেতেই হবে। পরিচারিকা গোছের একজন মহিলা এতক্ষন একটু দূরেই দাড়িয়ে ছিলেন ,এবার এগিয়ে এসে আমাকে ও ওই মেয়েটিকে নিয়ে পাশের ঘরে বসালেন ও নিজে চলে গেলেন।
প্রথম দেখা –
যেই ঘরটায় ওদের বসতে দিয়েছে সেই ঘরটি বেশ সুন্দর, সব কিছুতেই একটা পরিপাটি ভাব বেশ সুস্পষ্ট। অয়নই প্রথম কথা বললো ‘ হ্যালো, আই অ্যাম অয়ন ‘
‘ হু নাম শুনেছি ‘
বেশ একটা মিষ্টি গলায় উত্তর এলো। এই প্রথম অয়ন ওই মেয়েরির গলা ভালো করে শুনলো। খুব চেনা, কিন্তু না ‘এ কি করে হয়’
অয়নকে চুপ করে থাকতে দেখে রাধারানী বলে উঠলো ‘ আমি রাধা, রাধারানী দত্ত ‘
‘ না আর.জে শ্রেয়া ‘ হটাৎ বলে উঠলো অয়ন। আর সাথে সাথেই মেয়েটির মুখে একটা চমক স্পষ্ট দেখলো অয়ন। ঠিক ধরেছে ও, তবে ওই আর.জে শ্রেয়া!! যার আওয়াজে অয়ন এর বুকে ঝড় উঠতো সে আজ তার সামনে বসে আছে।
একটু আমতা আমতা করে মেয়েটি এবার বলল ‘ হ্যা, আমিই আর.জে শ্রেয়া। তবে আজ প্রথমবার কেউ স্টুডিওর বাইরে আমার গলা শুনে চিনতে পরলো। এত মন দিয়েও আমার গলা শোনে তাহলে কেউ ‘
অয়ন এর হটাৎ মনে হলো ওদের বসার ঘরটায় যেনো খুব করে বিকেলের নরম আলো ঢুকে পড়েছে।
বিকেল পাঁচটা তিরিশ –
ছেলেটা যেনো একেবারে চমকে গেছে , এক দৃষ্টে তাকিয়ে আছে ওর দিকে, তবে ওর দৃষ্টিটা আলাদা। চোখ সরিয়ে নিতে ইচ্ছা হয়না। এই প্রথম রাধারাণীর মনে হলো ওর গুরুত্ব আছে। ওর দিকে তাকিয়ে কেউ সকাল থেকে রাত কাটাতে পারে। রোগা পাতলা,ফর্সা চেহারার সৌম্য দর্শন ছেলেটিকে আর ওর হতভম্ব চোখ দুটো দেখে রাধারাণীর মনে হলো আজ থেকে ,ঠিক এই সময় থেকে হয়তো ওর বিকেলগুলো পাল্টে যাবে। ঠিক তখনই রাধারানী দেখলো জানলার বাইরে দিয়ে একঝাঁক কালো কালো নাম না জানা পাখি ঘরে ফিরছে।
সকাল সাতটার শো –
গুড মর্নিং কলকাতা, আমি আর.জে শ্রেয়া আবারো চলে এসেছি আপনাদের সাথে আড্ডায়। কথা হবে গান হবে তবে তার আগে বলে রাখি একটা কথা , আজকের দিনটা একটু আলাদা। আজ আমার শেষদিন এই শো তে। আপনাদের সকলকে খুব মিস করবো। এই তিন বছর যা ভালোবাসা পেয়েছি আপনাদের থেকে তা আমি কোনদিনই ভুলবো না। জানি আপনারা কষ্ট পাবেন , রাগ করবেন এমনকি কাদতেও পারেন বৈকি , তবে আপনাদের ভালোবাসা ছাড়া আমরা আর কিছু না তাই এই তিন বছর আমার উপর বিশ্বাস রাখার জন্য সকলকে খুব খুব ভালোবাসা। আজ আর.জে শ্রেয়া রেডিও জীবন শেষ ,তবে এই নামের পিছনে যে আছে তার এক নতুন জীবন শুরু।সকলে ভালো থাকবেন আর এই রইলো আপনাদের জন্য আপনাদেরই প্রিয় একটি গান –
আমারও পরানো যাহা চায়
তুমি তাই ,তুমি তাই, তুমি তাই গো
আমারও পরানো যাহা চায়।
লেখক পরিচিতি : রোহিত দত্ত, অন্যান্য আর পাঁচটা বাঙালির মত আমিও ওই টুকটাক লিখতে ভালোবাসি । পড়াশোনা করছি বয়শ আঠারো , বাস ওয়েস্ট বেঙ্গল এর চন্দননগরে ।।
Vai daru Vai
Tui emni likhey ja amra sobay Tor pasey achi
Khub sundor …
Erokm aro golpo hole valo hoy..
Ekdm notun concept..