আমি বহুক্ষণ আমার সাথে একলা থাকি। নিজস্ব আবেগ অনুভূতি নিয়ে কাটাছেঁড়া করার সুযোগ পাই। আমি আমার একলা ঘর দুজনের মধ্যে এক সুনিবিড় প্রেম রয়েছে। আমিনির্জন পথের পথিক। নির্জনতা আমার আত্মার আত্মীয়, প্রাণের বান্ধব। নির্জনতা ওএকাকীত্বের অন্ত:স্থল থেকে যে হৃদয় বিদারিত প্রেমের বহিঃপ্রকাশ হয়,তা সবার জন্যনয়। নতুন প্রভাতে দুয়ারে সজোরে আঘাত করে আমার প্রেমিক এসে উপস্থিত হবে ও আরেকবার প্রেমের প্রস্তাব দেবে,এই আশায় থাকি,সে আসে না। তাই প্রেমও মহোল্লাসে মুক্তকণ্ঠে নিজের জয়গান গেয়ে ওঠে না। তাই চারপাশে নির্জনতা বিরাজমান,এই নির্জনতা ভেদ করে যার হাহাকার কর্ণগোচর হয় তা হল বিরহ। আমি বিরহকে ভালোবাসার স্বার্থে আমার প্রেমিকের স্বার্থে অতি যত্নে লালন করি।আমার নির্জন দুপুর, জানালার বাইরে ক্লান্ত পাখির ডাক,নিশ্চল গাছগুলো সবাই আমাকে আমন্ত্রণ জানায়,তাদের সাথে একলা হবার আনন্দে প্রেমিকের অবহেলা ভুলে যাই। ভীড়ের মাঝে প্রেমাতুর দৃষ্টিনিক্ষেপের সময় ওর চোখেও প্রেমের উপস্থিতি অনুভূত হয়েছিল। কিন্তু একলা হতেই সে আমার নির্জনতাকে ফেলে রেখে চলে গেছে। উগ্রপন্থীর আক্রমণে রক্তাক্ত শিশুকে দেখে যেদিন আমি মর্মাহত, বাকরূদ্ধ, তুমি আমার দুঃখে দুঃখী হয়ে সজল নয়নে আমার হাত স্পর্শ করে ভরসা রাখতে বলেছিলে। যেদিন পোশাকহীন পথশিশুটির কান্না আমায় স্তব্ধ করে দিয়েছিল, তোমার আলিঙ্গন আমায় চলতে সাহায্য
করেছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ে তরুণ ছাত্রটি যখন গুলিবিদ্ধ হল বা যখন কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ভাগ হয়ে গেল আকাশটা,তখনও তোমার প্রেমপূর্ণ চুম্বন আমাকে আশ্বাস দিয়েছিল, শুভদিন আসবেই। সেদিন বুঝতে পারিনি কাঁটাতারের বেড়া শুধু আকাশটাকে ভাগ করেনি,তার পরিকল্পনা মাফিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ গুলোও ভাগ হয়ে গেছে,আর হৃদয়টা পড়ে গেছে সেই অনধিকৃত সীমান্ত রেখায়। তাই তোমার ভরসা আশ্বাস সব বিফলে গেছে। অভিমানী হৃদয় কোলাহল থেকে পালিয়ে নির্জনতাকে বেছে নিল। নির্জনতায় মিথ্যা আশ্বাস নেই, তাই দুঃখ পাওয়াও নেই। আমার পথ পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গেই প্রেমিক তুমিও আমায় একলা করলে। একলা আমি এখনো অপেক্ষায় থাকি, প্রেমিক তুমি আসবে, আমার এলোমেলো অগোছালো আমি টাকে গুছিয়ে নিতে চাইবে,আর পুনরায় সেই “নো ম্যানস্ ল্যান্ড” থেকে মানবতাকে তুলে এনে রোপণ করবে। নির্জনতা আমায় স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছে,এক আকাশ স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে রয়েছি। আমি ইছামতীও নই, মেঘবালিকা নই তাই নিজের ইচ্ছে ডানায় ভর করে কাঁটাতার অতিক্রম করে অবাধে বিচরণ করছি এবং প্রেমের আকুলতা নিয়ে নির্জনতাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে অপেক্ষমান।
লেখক পরিচিতি : অর্পিতা নস্কর,একজন সরকারি স্কুলের শিক্ষিকা , যিনি নিজের কাজ কে সব থেকে বেশি প্রাধান্য দেন।
বিঃ দ্রঃ লেখাটি মন_ও_মৌসুমী র #ত্রিমাসিক_লেখা_প্রতিযোগিতার (জানুয়ারি ,২০১৯) এর একটি Entry .
ফলপ্রকাশ জানুয়ারি ,২০১৯ এর দ্বিতীয় সপ্তাহ , পড়তে থাকুন -যোগাযোগ বজায় রাখুন #মন_ও_মৌসুমী র ওয়েবসাইট এর সাথে।
Mon chuye jaowa lekha. premik nischoi ekdin asbe …….
[…] আমার আলোকবর্ষ ছোট্ট হাসি কে প্রতিবন্ধী!! চোখ-গেলো বেলা শেষে প্রতীকের দুঃখ| অনুগল্প জীবনের গল্প নির্জনে একলা আমি […]