অফিস থেকে ফিরে নিজের ঘরে আলো নিভিয়ে শুয়ে ছিল লোপা। বেশ কিছুদিন ধরেই খুব কাজের চাপ যাচ্ছে।
-“খেতে চল,” নিঃশব্দে মা কখন ঘরে এসেছে বুঝতেই পারেনি। মাথায় মায়ের হাতের ছোঁয়াটা খুব ভালো লাগলো লোপার।
-“ইচ্ছে করছে না মা। এইভাবেই শুয়ে থাকি না! তুমি মাথায় হাত বুলিয়ে দাও,”
-“আমার পাগল মেয়ে! ওঠ, ডাইনিং টেবিলে বাবা ওয়েট করছে তোর জন্য।”
ডাইনিংয়ে এসে লোপা দেখল, বাবার চোখ টিভির পর্দায়। জনপ্রিয় টিভি চ্যানেলে পরবর্তী কোনো এক অনুষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দেখাচ্ছে। এইসব চ্যানেলের অনুষ্ঠানের ব্যাপারে লোপার কোনো আগ্রহই নেই। পারতপক্ষে ও টিভি দ্যাখে না।
-“ডিসগাস্টিং! কি এসব প্যানপ্যানানি প্রোগ্রাম দেখছ বাবা।” রিমোট হাতে নিয়ে চ্যানেলটা ঘোরাতে যাচ্ছিল লোপা। পারলো না। কানে একটা নাম এসে ধাক্কা দিল যেন। স্নিগ্ধা ব্যানার্জি, বাংলা টিভি-সিরিয়াল তথা সিনেমা জগতের বেশ প্রসিদ্ধ নাম।
মোবাইলের রিংটোন শুনে লোপা দেখল সুদেষ্ণা ফোন করেছে। লোপা কিছুক্ষণ বাজতে দিল ফোন। সুদেষ্ণা কেন ফোন করেছে আন্দাজ করতে পারছে ও।
-“দেখলি?” সুদেষ্ণার গলায় রীতিমত উত্তেজনা।
-“কি দেখব?” নিজেকে যথাসম্ভব নির্লিপ্ত রেখে উত্তর দিল লোপা।
-“ও, তুই তো আবার বাংলা চ্যানেলের প্রোগ্রাম দেখিস না। ‘আমার বাংলা’ চ্যানেলে সামনের রবিবারে ‘কফি হাতে আড্ডা’য় আসছে স্নিগ্ধা ব্যানার্জি।”
-“কিরে!” লোপাকে চুপ দেখে সুদেষ্ণা সরব হল আবার। “কিছু বল!”
-“কিছু বলার নেই রে,” গলায় কিছু একটা দলা পাকাচ্ছে, কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে লোপার।
-“এতটা নির্লিপ্ত হচ্ছিস কি করে! জানিস, স্নিগ্ধা ব্যানার্জি একা যায়না কোথাও! সর্বত্র লেজুর হিসেবে সাথে থাকে ওঁর লেটেস্ট বয়ফ্রেন্ড…এই সাক্ষাৎকারেও নিশ্চই আসবে! তুই দেখবি প্রোগ্রামটা?” না, দেখবে না লোপা। যা দেখার একবছর আগেই দেখে নিয়েছে!
-“খেতে বসছি রে, পরে কথা হবে।” সুদেষ্ণাকে নিরাশ করে ফোনটা কেটে দিল লোপা। হয়ত ওর থেকে কিছু রিয়্যাকশন আশা করেছিল সুদেষ্ণা। কিন্তু লোপার আজ আর কোনো ইমোশনই বেঁচে নেই হিমেলকে ঘিরে। সবকিছু শেষ হয়ে গেছে বছরখানেক আগের সেই রাতে।
(২)
স্নিগ্ধা ব্যানার্জির প্রোগ্রাম নিয়ে অফিসেও আলোচনা চলছে। জনপ্রিয় অভিনেত্রী, যদিও চল্লিশের কোঠায় পৌঁছে এখন কমবয়সী নায়িকাদের তুলনায় সিনেমাতে কমই দেখা যাচ্ছে। তবুও অভিনয় দক্ষতার জোরে এখনো স্বতন্ত্র। সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত একটা সিনেমায় মাতিয়ে দিয়েছেন দর্শকদের। সেরা অভিনেত্রীর জাতীয় পুরস্কারটা হয়ত স্নিগ্ধাই পাচ্ছেন এবারে।
-“কি যে তোদের ভালো লাগে বুঝিনা! অদ্ভুত ন্যাকা ন্যাকা অভিনয়,” হিমেল একদম পছন্দ করত না। যদিও লোপা স্নিগ্ধার বরাবরই গুণমুগ্ধ। প্রায় তিন বছর আগের কথা। ওদের কোম্পানির বানানো নতুন মলে এমপ্লয়ীদের জন্য স্নিগ্ধার সদ্যমুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমার স্পেশাল স্ক্রিনিংযের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। খুব কাছে থেকে সেদিন স্নিগ্ধাকে দেখেছিল লোপা।
-“দেখলি তো, যত গ্ল্যামার সব সিনেমার পর্দাতে!” হিমেলের কথাটায় লোপা পাত্তা দেয়নি। স্নিগ্ধাকে সেদিন অতটা গ্ল্যামারাস না লাগলেও সিনেমাতে ওর অভিনয়ে বিভোর হয়েছিল লোপা। ওদের কোম্পানির আণ্ডার কন্সট্রাকশন বহুতল বিল্ডিং কমপ্লেক্সে একটা ডুপ্লেক্স কিনেছেন স্নিগ্ধা। প্রোজেক্টটা দেখত হিমেল।
-“ভালোই তো সময় কাটছে, আর ন্যাকা ন্যাকা লাগছে না!” অফিসের পরে একটা রেস্তোরাতে মুখোমুখি দুজনে। হিমেল জানালো স্নিগ্ধা প্রোজেক্ট সাইটে এসেছিলেন। হিমেল দায়িত্ব নিয়ে ওঁকে দেখিয়ে দিয়েছে ওঁর ফ্ল্যাটের কাজকর্ম।
-“নারে, মহিলা বেশ ইন্টেলিজেন্ট! কাজের ব্যাপারে বেশী বোঝাতে হল না,” হিমেলের কথায় মনে মনে হাল্কা চাপ অনুভব করেছিল লোপা। কোথাও ভাঙনের পূর্বাভাস ছিল কি হিমেলের কথাতে!
-“আরিব্বাস! একদিনেই ইম্প্রেসড! এরপরে দেখা-সাক্ষাৎ বাড়লে আমাকে ভুলেই যাবি হয়ত,” ছদ্ম অভিমানী মুখ লোপার, কিন্তু ভেতরটা পুড়ছিল ওর।
-“ধুর পাগলি!” আদর করে কাছে টেনে লোপার গালে চুমু খেয়েছিল হিমেল। “আমার নোঙরটা বাঁধা আছে তোর কাছে, বুঝলি।” হিমেলের গভীর চোখদুটো লোপার প্রতি ভালোবাসায় যেন টইটম্বুর। এই ভালোবাসায় কোনোদিন ঘাটতি হবে লোপা ভাবতেই পারেনি। নিজেকে খুব বোকা মনে হয় এখন!
(৩)
অফিস থেকে বেরিয়ে তাড়াতাড়ি পা চালিয়ে এগোচ্ছিল লোপা। আকাশ কালো করে বৃষ্টি আসছে। তার আগেই বাড়ী পৌছতে পারলে শান্তি! এরকম মেঘলা দিনে হিমেল বেশ রোম্যান্টিক হয়ে যেত। একটা ছাতার তলায় আধা ভিজে আধা শুকনো অবস্থায় দুজনে জড়াজড়ি করে এগোতে এগোতে একসময় হিমেল ছাতা বন্ধই করে দিত। বৃষ্টি ভালো লাগতো তখন লোপার। ওদের কোম্পানিতে হিমেল যতদিন ছিল, দিনগুলো সুখস্বপ্নের মত কেটেছিল ওর।
-“এত কোয়ালিটি কম্প্রোমাইজ করে আমি কাজ করতে পারছি না,” কোম্পানিতে বসের সাথে পেশাদারী এথিক্স নিয়ে হিমেলের বনিবনা হচ্ছিল না। “ছেড়ে দেব ভাবছি।” কাস্টমারকে কোয়ালিটির নিশ্চয়তা দেওয়া সত্ত্বেও খরচ কমানোর জন্য কম্প্রোমাইজ করা হচ্ছে কিছু কিছু ক্ষেত্রে। মানতে পারছে না হিমেল।
-“অন্য কোথাও দেখছিস?” হিমেলের এই অফিস ছেড়ে চলে যাওয়ার সম্ভাবনায় অস্থির হলেও নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করছিল লোপা।
-“চাকরিই করবো না আর। সব জায়গাতেই এক অবস্থা।”
-“কি বলছিস! এত প্রমিসিং কেরিয়ার তোর!”
-“এবারে নিজেই কিছু করব ভাবছি। অনেস্টির সাথে কাজ করব, কারো কাছে মাথা নোয়াবো না।” হিমেলের দৃঢ়তা ভালো লেগেছিল লোপার। কন্সট্রাকশন লাইনে সততার সাথে কাজ করা যায়না এই মিথ ভাঙতে বদ্ধপরিকর ওরই প্রিয়তম মানুষটা! হিমেলের জন্য গর্ব হচ্ছিল লোপার।
তবে সহজ হয়নি হিমেলের রাস্তা। প্রথমদিকে হিমেল কোথাও কাজই পাচ্ছিল না। হতাশা ঘিরে ধরছিল হিমেলকে। এদিকে মা লোপার বিয়ের জন্য খোঁজখবর শুরু করেছে।
-“গঙ্গার ধারে যে বড় টাউনশিপ প্রোজেক্ট হচ্ছে সেখানে কাজ পাওয়ার আশা আছে। কথাবার্তা এগিয়েছে অনেকটাই। প্রথমে একটা ছোট বিল্ডিংয়ে আমার কাজ দেখবে ক্লায়েন্ট! কাজটা ভালোভাবে আর সময়মত শেষ করতে পারলে বড় কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।” এরকমই এক বর্ষনমুখর সন্ধ্যেয় দেখা করে সুখবরটা দিয়েছিল হিমেল। লোপা তখনো জানতো না, কাজটা হিমেল স্নিগ্ধা ব্যানার্জির সুপারিশেই পেয়েছে।
(৪)
অবশেষে এসেই গেল সেই রবিবার। আজই টিভিতে কফি হাতে আড্ডাতে পাওয়া যাবে স্নিগ্ধাকে। সাথে থাকবে হিমেল। প্রোগ্রামের ক্লিপিংসয়ে হিমেলকেও দেখাচ্ছে। সেইসাথে প্রোগ্রামের ক্যাচলাইন! ‘কফিতে চুমুক দিতে দিতে খোলামেলা স্নিগ্ধা, জানাবেন অনেক অজানা কথা’। গত কয়েকদিন ধরে লোপা চাইছিল সময়টাকে আটকাতে! পারলো না, সময়কে কেউ আটাকাতে পারে না। হিমেল আর ওর একসাথে কাটানো ভালো সময়টাও তো ধরে রাখতে পারলো না লোপা।
কাজ শুরু হতেই খুব ব্যস্ত হয়ে পড়ল হিমেল। লোপার জন্য সময়ই নেই। একই শহরে থেকেও মাসের পর মাস দেখাসাক্ষাৎ হয় না। কমন ফ্রেন্ডদের কাছ থেকে স্নিগ্ধা আর হিমেলের মেলামেশার খবর কানে আসতো। হিমেলের সাথে লোপার ফোনে যতটুকু কথা হত, নিজের কাজের কথাই বলে যেত হিমেল। ঘুরেফিরে সেখানেও স্নিগ্ধার নাম উঠত। লোপা বোঝাতে পারেনি, ওদের মাঝে স্নিগ্ধার উপস্থিতি পছন্দ হচ্ছে না লোপার। একজন সাধারণ ইঞ্জিনিয়ার হয়ে কি করে যে স্নিগ্ধার মত সেলিব্রিটির এত ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠল হিমেল, ভাবলে আজো অবাক হয়ে যায় লোপা! ফ্ল্যাটের কাজকর্ম দেখার ফাঁকে কয়েকবার দেখাসাক্ষাৎই তো হয়েছিল মাত্র। হয়ত কোয়ালিটির সাথে আপোষ না করে হিমেল চাকরি ছেড়ে দেওয়ায় স্নিগ্ধা ইম্প্রেসড্ হয়েছিলেন!
‘কফি হাতে আড্ডা’ শুরু হয়েছে। বাবা-মা দেখছে যদিও ওরা জানে হিমেলের প্রতি লোপার ফিলিংস। প্রথম প্রোজেক্ট সময়ের অনেক আগে ক্লায়েন্টকে হ্যাণ্ডওভার করে দেওয়াতে কয়েকটা বড় কাজের বরাত পায় হিমেল। সেই উপলক্ষ্যে পার্টি দিয়েছিল সে। এক বছর আগে সেই পার্টির রাতে বাড়ী ফিরে মাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছিল যখন লোপা, বাবাও পাশে দাঁড়িয়েছিল।
পার্টি শেষে বেহেড স্নিগ্ধাকে গাড়ী অব্ধি এগিয়ে দিতে গিয়েছিল হিমেল। ফিরতে দেরী হচ্ছিল। ঝোঁকের মাথায় পার্কিংয়ে গিয়ে লোপা দ্যাখে গাড়ীর পেছনের সীটে হিমেল আর স্নিগ্ধা পরষ্পরকে জড়িয়ে বসে! হিমেলের ঠোঁটে, বুকে, সর্বত্র পাগলের মত চুমু খেয়ে চলেছেন টলিউডের নায়িকা।
-“দরজা বন্ধ করে কী করছিস লোপা?” মায়ের গলাটা যেন অনেক দূর থেকে ভেসে এল। নাকি লোপাই দূরে চলে যাচ্ছে। ওর চোখের সামনে একটা কালো পর্দা নেমে আসছে যেন। দুচোখের পাতা বন্ধ হয়ে আসতে আসতে লোপার কানে এল মায়ের আকূতি “দরজাটা খোল, কী এমন হয়েছে যে তুই… কিরে, কি হল! অ্যাই শুনছো, লোপা দরজা বন্ধ করে আছে, সাড়াও দিচ্ছে না। আমার ভয় করছে কিন্তু… কিছু করো তুমি,”
(৫)
পরেরদিন বিকেল। নার্সিংহোমের ডাক্তারদের নিরলস প্রচেষ্টায় আপাতত বিপদমুক্ত লোপা। আইসিইউ থেকে লোপাকে জেনারেল বেডে শিফট করা হয়েছে। জ্ঞান ফিরতে লোপা তাকিয়ে দেখল ওর দিকে তাকিয়ে রয়েছে বাবা, মা, বন্ধুরা। ক্লান্তিতে লোপার আবার চোখটা বুজে আসছিল, কিন্তু কেবিনের দরজা দিয়ে একজনকে ঢুকতে দেখে তার ওপরেই ওর নজরটা স্থির হয়ে গেল।
-“এটা কি করতে যাচ্ছিলি পাগলী!” হিমেলের গলায় আত্মীয়তার সেই পরিচিত সুর। অনেকদিন বাদে হিমেলকে খুব কাছের মনে হচ্ছে, কেন জানে না লোপা।
-“তাতে তোর কী,” আজ হিমেলের ওপরে অভিমানও করতে ইচ্ছে হচ্ছে লোপার।
-“তুই না থাকলে যে আমি হারিয়েই যাবো। কোথায় ভেসে চলে যাবো তার ঠিক আছে! তোর কাছে আমার নোঙর বাঁধা আছে, জানিস না?” এরমধ্যে বন্ধুবান্ধব আর বাবা-মা বেরিয়ে গেছে ঘর থেকে। একান্তে হিমেলকে এভাবে পেয়ে ওর বুকের মধ্যে মিশে যেতে ইচ্ছে করছে লোপার। কিন্তু মন থেকে স্নিগ্ধা ব্যানার্জির কাঁটাটা দূর হচ্ছে না কিছুতেই।
-“আমাদের মধ্যে থেকে এসব কথা হারিয়েই গেছে বলে জানতাম,”
-“ভুল জানতিস লোপা। আমিও আছি, আর গভীর বিশ্বাস থেকে বলা আমার কথাগুলোও আছে।”
-“প্লিজ হিমু, সুইসাইড অ্যাটেম্পট করেছি বলে সহানুভূতি দেখাতে আসিস না আমায়!”
-“কী যা-তা বলছিস! কোনোরকম কনফিউশন রাখিস না মনে। কালকের ইন্টার্ভিউটা দ্যাখ এখানে।” কথাটা বলে হিমেল ওর মোবাইল ঘেঁটে কালকের ‘কফি হাতে আড্ডা’র রেকর্ডিং চালিয়ে দিল লোপার চোখের সামনে।
-“আজকের খোলামেলা স্নিগ্ধাকে আমি একটা ব্যক্তিগত প্রশ্ন করতে চাই। তোমরা তো একসাথেই থাকো। তোমাদের সম্পর্কের আইনি স্বীকৃতির কথা ভাবছো না?” ‘কফি হাতে আড্ডা’র জনপ্রিয় সঞ্চালক শুভব্রত স্যান্যাল স্নিগ্ধাকে সোজাসুজি প্রশ্নটা করলেন।
-“বিয়ের কথা বলছো? হিমেলকে? হোয়াট আ জোক!” খুব হাসছেন স্নিগ্ধা। পাশে বসা হিমেল যদিও বেশ আড়ষ্ঠ।
-“আমি মজা করিনি স্নিগ্ধা। ইন্ডাস্ট্রির সবাই জানে যে তোমরা কাপ্ল, লিভ টুগেদার করছো,”
-“লেট্ মি কারেক্ট ইউ শুভ! হিমেল আমার ফ্ল্যাটে থাকে ঠিকই, বাট সেটা সবদিক ভেবে নেওয়া একটা ডিসিশন! জাস্ট একটা মিউচুয়াল সমঝোতা বলতে পারো! হিমেলের কাজে যাতায়াতের ক্ষেত্রে সুবিধা হয়, আর আমিও একটু সিকিয়োর্ড ফীল করি। আমাদের ইণ্ডাস্ট্রিতে কত রকমের লোক থাকে! একা থাকা, ইউ নো…তাছাড়া হিমেলের তো গার্লফ্রেণ্ড আছে। হিমেল ওর প্রাইভেট লাইফ নিয়ে ওপেনলি কিছু বলবে না কখনো, আমিই বলছি, অ্যাজ হি হ্যাজ এস্টাব্লিশড হিমসেলফ নাউ, হিমেল ওর গার্লফ্রেণ্ডকে খুব শিগগিরি বিয়ের প্রস্তাব দিতে চলেছে।”
মোবাইলটা সরিয়ে দিয়ে হিমেলের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ল লোপা। সেইসময় নার্সিংহোমের সামনে দাঁড়ানো কালো কাঁচ তোলা গাড়ীতে বসে প্রোগ্রামের ভিডিওটা দেখছিলেন স্নিগ্ধা ব্যানার্জিও। প্রশ্নটা শুভব্রত যেমন মজা করে করেননি, স্নিগ্ধাও কোনো মজা করেননি উত্তর দেওয়ার সময়। মজাটা আদপে করেছে পরিস্থিতি। বছর খানেক আগের সেই পার্টির রাতে তুমুল শরীরী ঘনিষ্ঠতার সময় হিমেলের মুখ থেকে বারবার শুনছিলেন লোপার নামই। হিমেলকে পাগলের মত ভালোবাসলেও লোপার জায়গাটা যে কোনোদিনই তিনি নিতে পারবেন না, স্নিগ্ধা বুঝে গিয়েছিলেন সেইদিনই।
কলমে অংশু প্রতিম দে, ব্যারাকপুর, কলকাতা
পেশায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার, নেশায় কলম- কাগজ।